বাণী

শত জনম আঁধারে আলোকে তারকা-গ্রহে লোকে লোকে
প্রিয়তম! খুঁজিয়া ফিরেছি তোমারে।।
	স্বপন হয়ে রয়েছ নয়নে
	তপন হ’য়ে হৃদয়-গগনে,
হেরিয়া তোমারে বিরহ-যমুনা, প্রিয়তম! দুলিয়া উঠে বারে বারে।।
হে লীলা-কিশোর! ডেকেছে আমারে তোমার বাঁশি,
যুগে যুগে তাই তীর্থ-পথিক ফিরি উদাসী।
	দেখা দাও, তবু ধরা নাহি দাও
	ভালোবাস ব’লে তাই কি কাঁদাও,
তোমারি শুভ্র পূজার-পুষ্প প্রিয়তম! ফুটিয়া ওঠে অশ্রুধারে।।

বাণী

এলো শোকের সেই মোহর্‌রম কারবালার স্মৃতি ল’য়ে।
কাঁদিছে বিশ্বের মুসলিম সেই ব্যথায় বেতাব হয়ে।।
মনে পড়ে আসগরে আজি পিয়াসা দুধের বাচ্চায়
পানি চাহিয়া পেল শাহাদৎ হোসেনের বুকে র’য়ে।।
একহাতে বিবাহের কাঙন একহাতে কাশেমের লাশ,
বেহোঁশ্ খিমাতে সকিনা অসহ বেদনা স’য়ে।।
পাশে শহীদ কাঁদে বীর জব্বার পানির মশক মুখে
হল শহীদ কাঁদে জয়নব কুলসুম আকুল হয়ে।।
শূন্য পিঠে কাঁদে দুলদুল্ হজরত হোসেন শহীদ্,
ঝরিতেছে শোকের বারিষ্ আসমান জমিন ছেয়ে।।

বাণী

সখি কই গোপীবল্লভ শ্যামল পল্লব কান্তি
সখি আমার হরি বিনে হরি চন্দনে নাহি শান্তি।
ঐ দেখ্ দেখ্ শ্যাম দাঁড়িয়ে
ও নহে কদম তমাল পিয়াল পিয়া মোর ঐ দাঁড়িয়ে।
ও নহে তরুণ শাখা ও যে মোর বঁধু আসে বাহু বাড়িয়ে।
পুষ্প পাগল তরু কি কখনো দুলে গো অমন করিয়া
(ও যে) বনমালা গলে বনমালী মোর নাচিছে হেলিয়া দুলিয়া।
তোরা দেখে আয় তোরা দেখে আয়
অভিমানে শ্যাম আসিছে না কাছে ডেকে আয় তারে ডেকে আয়
তারি বিগলিত নীল লাবনি কি ঐ যমুনার কালো জলে
বিজলির আঁখি ইঙ্গিতে সে কি ডাকে মোরে মেঘ দলে।
সখি গো! তোরা যেতে দে মোরে যেতে দে আর দিস্‌নে বাধা
(ঐ) গহন কালোতে গাহন করিয়া জুড়াক আলোক রাধা।।

বাণী

হেরা হতে হেলে দুলে নূরানী তনু ও কে আসে হায়,
সারা দুনিয়ার হেরেমের পর্দা খুলে খুলে যায় —
সে যে আমার কমলিওয়ালা — কমলিওয়ালা।।
তার ভাবে বিভোল রাঙা পায়ের তলে
পর্বত জঙ্গম টলমল টলে,
খোরমা খেজুর বাদাম জাফরানি ফুল ঝ’রে ঝ’রে যায় —
সে যে আমার কমলিওয়ালা — কমলিওয়ালা।।
আসমানে মেঘ চলে ছায়া দিতে,
পাহাড়ের আঁসু গলে ঝরনার পানিতে,
বিজলি চায় মালা হতে,
পূর্ণিমার চাঁদ তার মুকুট হতে চায় —
সে যে আমার কমলিওয়ালা — কমলিওয়ালা।।

বাণী

অরুণ-রাঙা গোলাপ-কলি
	কে নিবি সহেলি আয়।
গালে যার গোলাপী আভা
	এ ফুল-কলি তারে চায়।।
ডালির ফুল যে শুকায়ে যায়
কোথায় লায়লী, শিরী কোথায়
কোথায় প্রেমিক বিরহী মজনু
	এ ফুল দেব কাহার পায়।।
পূর্ণ চাঁদের এমন তিথি
ফুল-বিলাসী কই অতিথি
বুলবুলি বিনে এ গুল্‌ যে
	অভিমানে মুরছায়।।

বাণী

দেখা দাও, দাও দেখা, ওগো দেবতা।
মন্দিরে পূজারিণী আশাহতা॥
ধূপ পুড়িয়া গেছে, শুকায়েছে মালা,
বন্ধ হ’ল বা দ্বার, একা কুলবালা।
প্রভাতে জাগিবে সবে, রটিবে বারতা॥
জাগো জাগো দেবতা শূন্য দেউলে,
আরতি উঠিছে মোর বেদনার ফুলে।
বাণীহীন মন্দির, কহ কহ কথা॥