ব্রজের দুলাল ব্রজে আবার
বাণী
ব্রজের দুলাল ব্রজে আবার আসবে ফিরে কবে? জাগবে কি আর ব্রজবাসী ব্যাকুল বেণুর রবে? বাজবে নূপুর তমাল-ছায়ায় বইবে উজান হৃদ্-যমুনায়, অভাগিনী রাধার কি আর তেমন সুদিন হবে? সখী গো! গোঠে নাহি যায় রাখালেরা আর লুটায়ে কাঁদে পথের ধূলায়, ধেনু ছুটে যায় মথুরা পানে না হেরি গোঠে রাখাল-রাজায়। উড়িয়া গিয়াছে শুক-সারি পাখি শুনি না কৃষ্ণ-কথা (আর), শ্যাম-সহকার তরুরে না-হেরি শুকালো মাধবী-লতা। শ্যাম বিনে নাই সে শ্যাম-কান্তি, শুকায়েছে সব। কদম তমাল তরু পল্লব হাসি উৎসব শুকায়েছে সব। সখি গো — চির-বসন্ত ছিল যথা আজ সেথা শূন্যতা হাহাকার রবে কাঁদে শ্যাম (হে) ললিতা বিশাখা নাই, নাই চন্দ্রাবলী নাই ব্রজে শ্রীদাম সুদাম। (সখী গো)
এসো চির-জনমের সাথি
বাণী
এসো চির-জনমের সাথি। তোমারে খুঁজেছি দূর আকাশে জ্বালায়ে চাঁদের বাতি।। খুঁজেছি প্রভাতে গোধূলি-লগনে মেঘ হয়ে আমি খুঁজেছি গগনে, ঢেকেছে ধরণী আমার কাঁদনে অসীম তিমির রাতি।। ফুল হয়ে আছে লতায় জড়ায়ে মোর অশ্রুর স্মৃতি, বেণু বনে বাজে বাদল-নিশীথে আমারি করুণ-গীতি। শত জনমের মুকুল ঝরায়ে ধরা দিতে এলে আজি মধু-বায়ে, ব’সে আছি আশা-বকুলের ছায়ে বরণের মালা গাঁথি’।।
বন-কুন্তল এলায়ে বন শবরী ঝুরে
বাণী
বন-কুন্তল এলায়ে বন শবরী ঝুরে সকরুণ সুরে। বিষাদিত ছায়া তার চৈতালী সন্ধ্যার চাঁদের মুকুরে।। চপলতা বিসরি যেন বন-যৌবন বিরহ-ক্ষীণ আজি উদাস উন্মন, তোলে না ঝঙ্কার আর ঝরা পাতার মর্মর নূপুরে।। যে কুহু কুহরিত মধুর পঞ্চমে বিভোর ভাবে, ভগ্ন কণ্ঠে তার থেমে যায় সুর করুণ রেখাবে। কোন বন-শিকারীর অকরুণ তীর আলো হ’রে নিল ওই উজল আঁখির — ফেলে যাওয়া বাঁশি তা’র অঞ্চলে লুকায়ে — গিরি–দরি–প্রান্তরে খোঁজে সে নিঠুরে।।
বুনো ফুলের করুণ সুবাস
বাণী
বুনো ফুলের করুণ সুবাস ঝুরে। নাম-না-জানা গানের পাখি, তোমার গানের সুরে।। জানাতে হায় এলে কোথা বনের ছায়ার মনের ব্যথা, তরুর ছায়া ফেলে এলে মরুর বুকে উড়ে।। এলে চাঁদের তৃষ্ণা নিয়ে কৃষ্ণা তিথির রাতে, পাতার বাসা ফেলে এলে সজল নয়ন-পাতে। ওরে পাখি, তোর সাথে হায় উড়তে নারি দূর অলকায়, বন্ধনে যে বাঁধা আমি মলিন মাটির পুরে।।