বাণী

অসুর-বাড়ির ফেরত এ মা
শ্বশুর-বাড়ির ফেরত নয়।
দশভুজার করিস পূজা
		ভুলরূপে সব জগতময়।।
নয় গোরী নয় এ উমা
মেনকা যার খেতো চুমা
রুদ্রাণী এ, এযে ভূমা
		এক সাথে এ ভয়-অভয়।।
অসুর দানব করল শাসন এইরূপে মা বারে বারে,
রাবণ-বধের বর দিল মা এইরূপে রাম-অবতারে।
দেব-সেনানী পুত্রে লয়ে মা
এই বেশে যান দিগ্বিজয়ে
সেই রূপে মা’র কর্‌রে পূজা
		ভারতে ফের আসবে জয়।।

বাণী

মনে যে মোর মনের ঠাকুর তারেই আমি পূজা করি,
আমার দেহের পঞ্চভূতের পঞ্চপ্রদীপ তুলে ধরি।।
	ফকির যোগী হয়ে বনে
	ফিরি না তার অন্বেষণে
আমি	মনের দুয়ার খুলে দেখি রূপের জোয়ার মরি মরি।।
	আছেন যিনি ঘিরে আমায়
	তারে আমি খুঁজব কোথায়
সাগরে খুঁজে বেড়াই সাগর বুকে ভাসিয়ে তরী।
	মন্দিরের ঐ বন্ধ খোঁপে
	ঠাকুর কি রয় পূজার লোভে?
পেতে রাখি ভক্তি বেদী আসবে নেমে প্রেমের হরি।।

বাণী

উদার অম্বর দরবারে তোরই প্রশান্ত প্রভাত বাজায় বীণা।
শতদল-শ্রভ্রা পদতল-লীনা, প্রশান্ত প্রভাত বাজায় বীণা।।
	সহস্র কিরণ-তারে হানি’ ঝঙ্কার
	ধ্বনি তোলে অনাহত গভীর ওঙ্কার,
সেই সুরে উদাসীন, পরমা প্রকৃতি ধ্যান-নিমগ্না মহাযোগাসীনা।।
	আনন্দ-হংস বিমুগ্ধ গতিহীন
	স্থির হ’য়ে ব্যোমে শোনে সে জ্যোতির্বীণ,
ঝরা ফুল-অঞ্জলি তা’রি চরণে প্রণতা ধরণী বাণী-বিহীনা।।

বাণী

কলহংসিকা বাহনা পদ্মিনী-পাণি
মণি মঞ্জীরা শোভনা, ছন্দিতা বাণী।
বন্দে দামিনী-বর্ণা রাধা বৃন্দা-বন-চন্দে
মত্ত-ময়ূর-ছন্দে নাচে কৃষ্ণ প্রেমানন্দে।।
পল্লব-ঘন চক্ষে ঝরে অশ্রু-রস-ধারা
পূব হাওয়াতে বংশী ডাকে আয় রে পথ-হারা,
রুমঝুম ঝুম্ মঞ্জীর বাজে কঙ্কণ মণি বন্ধে।।
রিম্ ঝিম্ রিম্ ঝিম্ ঝিম্ কেকা-বন ঘন বর্ষে
তৃষ্ণ-তৃপ্ত আত্মা নাচে নন্দালোক হর্ষে,
ঝঞ্ঝার ঝাঁঝর তাল বাজে শূন্যে মেঘ মন্দ্রে।।

বাণী

আমি	গগন গহনে সন্ধ্যা-তারা
	কনক গাঁদার ফুল গো।
	গোধূলির শেষে হেসে উঠি আমি
	এক নিমেষের ভুল গো।
আমি	কণিকা,
আমি	সাঁঝের অধরে ম্লান আনন্দ-কণিকা
আমি	অভিমানিনীর খুলে ফেলে দেওয়া মণিকা
আমি	দেব-কুমারীর দুল গো।।
	আলতা রাখার পাত্র আমার আধখানা চাঁদ ভাঙা
	তাহারি রং গড়িয়ে পরে (ঐ) অস্ত-আকাশ রাঙা।
আমি	একমুঠো আলো কৃষ্ণা-সাঁঝের হাতে
আমি	নিবেদিত ফুল আকাশ-নদীতে রাতে
	ভাসিয়া বেড়াই যাঁর উদ্দেশে গো
	তার পাই না চরণ-মূল।।

বাণী

		নয়ন মুদিল কুমুদিনী হায়!
		তাহার ধ্যানের চাঁদ ডুবে যায়।।
		ভরিল সরসী তা’রি আঁখি-জলে
		ঢলিয়া পড়িল পল্লব-তলে,
অকরুণ নিষাদের তীর সম অরুণ-কিরণ বেঁধে এসে গায়।।
		কপোলের শিশির অভিমানে শুকালো,
		পাপড়ির আড়ালে পরাগ লুকাল।
		সরসীর জলে পড়ে আকাশের ছায়া
		নাই সেথা তারা-দল, চাঁদের মায়া,
জলে ডুবে মেটে না প্রাণের তৃষা হৃদয়ের মধু তার হৃদয়ে শুকায়।।