বাণী

		বল রাঙা হংসদূতি তা’র বারতা।
		দাও তা’র বিরহ-লিপি, বল সে কোথা।।
		কেমনে কাটে তা’র অলস বেলা
		আজো কি গাঙের ধারে কাঁদে একেলা,
		দু’জনের আশা-তরী ডুবিল যথা।।
		দীপ জ্বালেনি কি কেউ তাহার ঘরে,
		ভাঙা ঘর বেঁধেছে কি নূতন ক’রে।
		দেখা হ’লে তা’রে কহিও নিরালায়
		আমি মরিয়াছি — মোর প্রেম মরেনি, হায়!
(মোর)	অন্তরে সে আজো অন্তর-দেবতা।।

বাণী

দূর বনান্তের পথ ভুলি কোন্ বুলবুলি বুকে মোর আসিলি হেথায়।
হায় আনন্দের দূত যে তুই, তবু তোর চোখে কেন জল কি ব্যথায়।।
কোথা দিই ঠাঁই তোরে ওরে ভীরু পাখি, বেদনাময় আমার ও প্রাণ,
এ মরুতে নাই তরু, নাই তোর তৃষার তরে জল যে হেথায়।।
নিকুঞ্জে কার গাইতে গেলি গান, বিঁধিল বুক কণ্টকে;
হায় পুড়িয়া বৈশাখে এলি ভিজিতে অশ্রুর বরষায়।।

বাণী

সাঁঝের পাখিরা ফিরিল কুলায় তুমি ফিরিলে না ঘরে,
আঁধার ভবন জ্বলেনি প্রদীপ মন যে কেমন করে।।
	উঠানে শূন্য কলসির কাছে
	সারাদিন ধরে ঝ’রে প’ড়ে আছে
তোমার দোপাটি গাঁদা ফুলগুলি যেন অভিমান ভরে।।
বাসন্তী রাঙা শাড়িখানি তব ধূলায় লুটায় কেঁদে,
তোমার কেশের কাঁটাগুলি বুকে স্মৃতির সমান বেঁধে।
	যাইনি বাহিরে আজ সারাদিন
	ঝরিছে বাদল শ্রান্তিবিহীন
পিয়া পিয়া ব’লে ডাকিছে পাপিয়া এ বুকের পিঞ্জরে।।

বাণী

আমায়		আঘাত যত হানবি শ্যামা ডাকব তত তোরে।
		মায়ের ভয়ে শিশু যেমন লুকায় মায়ের ক্রোড়ে।।
ওমা		চারধারে মোর দুখের পাথার
তুই		পরখ্ কত করবি মা আর,
আমি		জানি তবু পার হ’ব মা চরণতরী ধ’রে।।
আমি		ছাড়বো না তোর নামের ধেয়ান বিশ্বভুবন পেলে,
আমায়		দুঃখ দিয়ে নাম ভুলাবি, নই মা তেমন ছেলে।
		আমায় দুঃখ দেওয়ার ছলে
		তুই স্মরণ করিস পলে পলে,
আমি		সেই আনন্দে দুখের অসীম-সাগর যাব ত’রে।।

বাণী

আমার ভুবন কান পেতে রয় প্রিয়তম তব লাগিয়া
দীপ নিভে যায়, সকলে ঘুমায় মোর আঁখি রহে জাগিয়া।।
	তারারে শুধাই, ‘কত দেরি আর
	কখন আসিবে বিরহী আমার?’
ওরা বলে, ‘হের পথ চেয়ে তার নয়ন উঠেছে রাঙিয়া’।।
আসিতেছে সে কি মোর অভিসারে কাঁদিয়া শুধাই চাঁদে
মোর মুখপানে চেয়ে চেয়ে চাঁদ নীরবে শুধু কাঁদে।
	ফাগুন বাতাস করে হায় হায়
	বলে, বিরহিণী তোর নিশি যে পোহায়
ফুল বলে, ‘আর জাগিতে নারি গো ঘুমে আঁখি আসে ভাঙিয়া’।।

বাণী

আমার কালিবাঞ্ছা কল্পতরুর ছায়াতলে আয় রে,
এই তরুতলে যে যাহা চায় তখনি তা পায় রে॥
	তুই চতুর্বর্গ ফল কুড়াবি
	যোগ পাবি, ভোগ পাবি
এমন কল্পতরু থাকতে - কেন মরিস্ নিরাশায় রে॥
দস্যু ছেলের আবদারে সে সাজে ডাকাত কালির বেশে,
কত রামপ্রসাদের কন্যা হয়ে বেড়া বেঁধে যায় রে।
	ওরে পুত্র-কন্যা বিভব-রতন,
	চেয়ে নে যার ইচ্ছা যেমন,
ওরে আমার এ মন থাকে যেন বাঞ্ছাময়ীর পায় রে॥
	সে আর কিছু না চায়
	চেয়ে চেয়ে বাসনা তার শেষ হল না হায়!
এবার খালি হাতে তালি দিয়ে (আমি) চাইব কালিকায় রে॥