বাণী

আঁধার রাতে			কে গো একেলা
নয়ন-সলিলে		ভাসালে ভেলা।।
কাঁদিয়া কারে 		খোঁজ ওপারে
আজো যে তোমার		প্রভাত বেলা।।
কি দুখে আজি		যোগিনী সাজি’
আপনারে ল’য়ে		এ হেলা-ফেলা।।
সোনার কাঁকন		ও দুটি করে
হের গো জড়ায়ে		মিনতি করে।
খুলিয়া ধূলায়		ফেলো না গো তায়,
সাধিছে নূপুর		চরণ ধ’রে।
হের গো তীরে		কাঁদিয়া ফিরে
আজি ও-রূপের		রঙের মেলা।।

বাণী

বাঁকা শ্যামল এলো বন-ভবনে
তার বাঁশির সুর শুনি পবনে॥
	রাঙা সে চরণের নূপুর-রোলে রে
	আকুল এ হৃদয় পুলকে দোলে রে
সে নূপুর শুনি’ নাচে ময়ূর কদম তমাল-বনে॥
	বুঝি সেই শ্যামের পরশ লাগিল
	আমার চরণে তাই নাচন জাগিল —
ঘিরি শ্যামে দখিন-বামে নেচে বেড়াই আপন মনে॥
	এলো মাধবী চাঁদ গগন আঙিনায়
	জোয়ার এসেছে তাই হৃদয় যমুনায়
খুলিয়া গলার মালা পরাব শ্যামেরি বরণে॥

বাণী

নামাজ রোজা হজ্জ-যাকাতের পসারিণী আমি
নবীর কল্‌মা হেঁকে ফিরি পথে দিবস-যামী।।
আমার নবীজির পিয়ারি আয়রে ছুটে মুসলিম নারী,
দ্বীনের সওদা করবি কে আয় আয় রে মুক্তিকামী।।
জন্ম আমার হাজার বছর আগে আরব দেশে
সারা ভুবন ঠাঁই দিয়েছে আমায় ভালোবেসে।
আমার আজান ধ্বনি বাজে — কুল মোমিনের বুকের মাঝে
আমি নবীর মানস কন্যা আল্লাহ্‌ মোর স্বামী।।

বাণী

হে মাধব, হে মাধব, হে মাধব!
তোমারেই প্রাণের বেদনা কব তোমারি শরণ লব।।
সুখের সাগরে লহরি সমান
হিল্লোলি’ উঠে যেন তব নমি গান
দুঃখে শোকে কাঁদে যবে প্রাণ যেন নাম না ভুলি তব।।
তুমি ছাড়া বিশ্বে কাহারও কাছে
এ প্রাণ যেন কিছু নাহি যাচে।
যেনতোমারি অধিক কেহ প্রিয় নাহি হয়
বিশ্ব ভুবনে যেন হেনি তুমি-ময়
কলঙ্ক-লাঞ্ছনা যত বাধা ভয় তব প্রেমে সকলি স’ব।।

বাণী

উঠেছে কি চাঁদ সাঁঝ গগনে
আজিকে আমার বিদায় লগনে।।
জানালা পাশে চাঁপার শাখে
‘বউ কথা কও’ পাখি কি ডাকে?
ফুটেছে কি ফুল মালতী বকুল —
আমার সাধের কুসুম বনে সাঁঝ গগনে।।
তুলসী তলায় জ্বলেছে কি দীপ
পরেছে আকাশ তারকার টিপ?
হারিয়ে যাওয়া বঁধূ অবেলায়
এলো কি ফিরে দেখিতে আমায়,
ঝুরিছে বাঁশি পিলু বারোয়াঁয় —
কেন গো আমার যাবার ক্ষণে।।

বাণী

মেঘের ডমরু ঘন বাজে।
	বিজলি চমকায়
	আমার বনছায়,
মনের ময়ূর যেন সাজে॥
সঘন শ্রাবণ গগন-তলে
রিমি ঝিমি ঝিম্ নবধারা জলে,
চরণ-ধ্বনি বাজায় কে সে —
নয়ন লুটায় তারি লাজে॥
ওড়ে গগন-তলে গানের বলাকা,
শিহরণ জাগে উজ্জ্বল পাখা।
সুদূরের মেঘে অলকার পানে
ভেসে চ’লে যায় শ্রাবণের গানে,
কাহার ঠিকানা খুঁজিয়া বেড়ায় —
হৃদয়ে কার স্মৃতি রাজে॥