বাণী

চলে কুস্‌মি শাড়ি পরি' বসন্তের পরী
নবীনা কিশোরী হেসে হেসে।
হেলিয়া দুলিয়া সমীরণে ভেসে ভেসে।।
রঙ্গীলা রঙ্গে নৃত্য-ভঙ্গে চলিছে চপলা এলোকেশে।
পাপিয়া 'পিয়া পিয়া' ডাকে শাখে তাহারে ভালোবেসে।।
মদির চপল বায়, অঞ্চল উড়ে যায়,
সে বৈকালি সুর যেন চৈতী বেলাশেষে।।
মনে সে নেশা লাগায়, বনে সে আঁখির ইঙ্গিতে ফুল ফোটায়।
বেনুবনে তারি বাঁশি বাজে, তারি নাম গুঞ্জরে ভ্রমর
তার ঝির্‌ঝির্‌ মিরমির বাজে মঞ্জির নাচের আবেশে
তার ঝুমুর ঝুমুর নূপুর-ধ্বনি হাওয়াতে মেশে।।

বাণী

	রাঙামাটির পথে লো মাদল বাজে, বাজে বাঁশের বাঁশি,
	বাঁশি বাজে বুকের মাঝে লো, মন লাগে না কাজে লো,
	রইতে নারি ঘরে ওলো প্রাণ হলো উদাসী লো।।
	মাদলীয়ার তালে তালে অঙ্গ ওঠে দুলে লো,
	দোল লাগে শাল পিয়াল বনে, নোটন খোঁপার ফুলে লো,
	মহুয়া বনে লুটিয়ে পরে মাতাল চাঁদের হাসি লো।।
	চোখে ভালো লাগে যাকে, তারে দেখবো পথের বাঁকে,
তার 	চাঁচড় কেশে বেঁধে দেবো ঝুমকো জবার ফুল
তার 	গলার মালার কুসুম কেড়ে করব কানের দুল।
তার 	নাচের তালের ইশারাতে বলবো ভালোবাসি লো।।

বাণী

এসো মুরলীধারী বৃন্দাবন-চারী গোপাল গিরিধারী শ্যাম।
তেমনি যমুনা বিগলিত-করুণা কুলু কুলু কুলু স্বরে ডাকে অবিরাম।।
	কোথায় গোকুল-বিহারী শ্রীকৃষ্ণ
	চাহিয়া পথ পানে ধরণী সতৃষ্ণ,
ডাকে মা যশোদায় নীলমণি আয় আয় ডেকে যায় নন্দ শ্রীদাম।।
ডাকে প্রেম-সাধিকা আজো শত রাধিকা গোপ-কোঙারি,
এসো নওল-কিশোর কুল-লাজ-মান-চোর ব্রজ-বিহারী।
পরি’ সেই পীতধড়া, সেই বাঁকা শিখী চূড়া বাজায়ে বেণূ
আরবার এসো গোঠে, খেল সেই ছায়া-বটে চরাও ধেনু
কদম তমাল-ছায়ে এসো নূপুর পায়ে ললিত বঙ্কিম ঠাম।।

বাণী

আমার	মুক্তি নিয়ে কি হবে মা, (মাগো) আমি তোরেই চাই
		স্বর্গ আমি চাইনে মাগো, কোল্ যদি তোর পাই॥
(মাগো)		কি হবে সে মুক্তি নিয়ে,
			কি হবে সে স্বর্গে গিয়ে;
		যেথায় গিয়ে তোকে ডাকার আর প্রয়োজন নাই॥
		যুগে যুগে যে লোকে মা প্রকাশ হবে তোর
(আমি)	পুত্র হয়ে দেখব লীলা এই বাসনা মোর।
			তুই, মাখাস্ যদি মাখ্‌ব ধূলি,
			শুধু তোকে যেন নাহি ভুলি;
		তুই, মুছিয়ে ধূলি নিবি তুলি বক্ষে দিবি ঠাঁই॥

বাণী

শোন্ 	ও-সন্ধ্যা-মালতী, বালিকা তপতী
	বেলা শেষের বাঁশি বাজে, বাজে।
	শোনো মাধবী চাঁদের মধুর মিনতি
	উদাস আকাশ মাঝে।।
তব	মৌন ব্রত ভাঙ্গো কও কথা কও
মোর	নৃত্য আরতির সঙ্গিনী হও,
	মাধবী হেনা হের এলো বাহিরে —
	রসরাজে হেরি’ রাস-নৃত্যের সাজে।।
তুমি	যার লাগি’ সারাদিন, বিরহ ধ্যান-লীন একাকিনী কুঞ্জে।
	সুন্দর দাঁড়ায়ে তব দ্বারে আঁধারে
	মঞ্জরি-দীপ জ্বালো ডাকো তারে,
	বুকের চন্দন-সুরভি ঢালো —
	পাতার আঁচলে মুখ ঢেকো না লাজে।।

বাণী

আজি এ বাদল দিনে কত কথা মনে পড়ে।
হারাইয়া গেছে পিয়া এমনি বাদল-ঝড়ে।।
	আমারি এ বুকে থাকি’
	ঘুমাত সে ভীরু পাখি,
জলদ উঠিলে ডাকি’ লুকাত বুকের ’পরে।।
মোর বুকে মুখ রাখি নিবিড় তিমির কাঁদে,
আমার প্রিয়ার মত বাঁধিয়া বাহুর বাঁধে।
	কোথায় কাহার বুকে
	আজি সে ঘুমায় সুখে,
প্রদীপ নিভায়ে কাঁদি একা ঘরে তারি তরে।।