বাণী

দাও দাও দরশন পদ্ম-পলাশ লোচন,
	কেঁদে দু’ নয়ন হ’ল অন্ধ।
আকাশ বাতাস ঘেরা, তব ও মন্দির বেড়া
	আর কতকাল রবে বন্ধ॥
পাখি যেমন সন্ধ্যাকালে, বন্ধু-স্বজন পালে পালে
উড়ে এসে ব’সেছিল ডালে হে।
রাত পোহালে একে এক, উড়ে গেল দিগ্বিদিকে,
	প’ড়ে আছি একা নিরানন্দ।
টুটিল বাঁধন মায়ার, কবে শুনিব এবার
	ও রাঙা চরণ নূপুর ছন্দ॥
দুখ-শোক রৌদ্রজলে, ফেলে মোরে পলে পলে
	ছলিতেছ হরি কত ছল হে
জীবনের বোঝা প্রভু, বহিতে কি হবে তবু
	সহিতে পারি না আর দ্বন্দ্ব।
মরণের সোনার ছোঁওয়ায়, ডেকে লও ও রাঙা পায়
	দেখাও এবার মুখ-চন্দ॥

বাণী

	মেঘের হিন্দোলা দেয় পূব-হাওয়াতে দোলা।
কে	দুলিবি এ-দোলায় আয় আয় ওরে কাজ-ভোলা॥
		মেঘ-নটীর নূপুর
		ঐ বাজে ঝুমুর ঝুমুর,
	শীর্ণা-তনু ঝর্না তরঙ্গ-উতরোলা॥
	ফুল-পসারিণী ঐ দুলিছে বনানী
	বিনিমূলে বিলায় সে সুরভি, ফুল ছানি।
আজ	ঘরে ঘরে ফুল-দোল্ সব বন্ধ দুয়ার খোলা॥
		জলদ-মৃদঙ বাজে
		গভীর ঘন আওয়াজে,
	বাদলা-নিশীথ দুলে ঐ তিমির-কুন্তলা॥

বাণী

আমার পায়ের বেড়ি এই সোনার পুরী ভেঙে।
যাও গো নিয়ে তোমার দেশে (তোমায়) পাব সেথায় জেগে।।
এই যে সাগর এই যে কুমার এই যে তোমার আমি
এই যে তুমি স্বপ্নে-পাওয়া মধুমালার স্বামী,
(এবার) তোমার হাসির রঙে, আঁধার পুরী উঠুক রেঙে।।

নাটক : 'মধুমালা'

বাণী

কৃষ্ণজি কৃষ্ণজি কৃষ্ণজি কৃষ্ণজি।
যে কৃষ্ণ নাম জপেন ইন্দ্র-ব্রহ্মা-মহেশ্বর
যে নাম করে ধ্যান যোগী-ঋষি-সুরাসুর-নর,
এই অসীম বিশ্ব সীমা যাঁহার পায় নাকো খুঁজি -
আমি জীবনে মরণে যেন সেই নামই ভজি।।
যাঁর অনন্ত লীলা যাঁহার অনন্ত প্রকাশ
মধু কৈটভ মর কংসে যুগে যুগে করেন নাশ,
ন্যায় পাণ্ডবের হলেন সখা সারথি সাজি’
এই পাপ কুরুক্ষেত্রে কাঁদি তাঁহারেই খুঁজি’।।
যাঁর মুখে গীতা হাতে বাঁশি নূপুর রাঙা পায়
কভু শ্রীকৃষ্ণ গোকুলে কভু গোরা নদীয়ায়,
ফেরে প্রেম-যমুনার তীরে চির-রাধিকায় খুঁজি’
মোর মন গোপিনী উন্মাদিনী সেই নামে মজি’।।

বাণী

সুদূর মক্কা মদিনার পথে আমি রাহি মুসাফির,
বিরাজে রওজা মোবারক যথা মোর প্রিয় নবীজীর।।
	বাতাসে যেখানে বাজে অবিরাম
	তওহিদ বাণী খোদার কালাম, 
জিয়ারতে যথা আসে ফেরেশ্‌তা শত আউলিয়া পীর।।
মা ফাতেমা আর হাসান হোসেন খেলেছেন পথে যার, 
কদমের ধূলি পড়েছে যথায় হাজারো আম্বিয়ার।
	সুরমা করিয়া কবে সেই ধূলি
	মাখিব নয়নে দুই হাতে তুলি',
কবে এ দুনিয়া হ’তে যাবার আগে রে কা'বাতে লুটাব শির।।

বাণী

নিদাঘের খর তাপে ক্লান্ত এ ধরণী।
মাধুরী হারায়ে হল পাণ্ডুর বরণী।।
পিঙ্গল জটাজাল, তেজ তার অশনি।
বৈশাখী ভোরে স্মরি’ রুদ্রাণী জননী।।
ধূলি-ধূসরিত প্রসারিত অম্বর
বুক-ভরা তৃষা তার, চাহে সে নটবর,
শ্যামলী মেঘ-মালা, সেই তার জলধর —
দাহনের অবসানে জুড়াইবে আপনি।।