যেদিন রোজ হাশরে করতে বিচার
বাণী
যেদিন রোজ হাশরে করতে বিচার তুমি হবে কাজী সেদিন তোমার দিদার আমি পাব কি আল্লাজী।। সেদিন নাকি তোমার ভীষণ কাহ্হার রূপ দেখে পীর পয়গম্বর কাঁদবে ভয়ে ‘ইয়া নফসী’ ডেকে; সেই সুদিনের আশায় আমি নাচি এখন থেকে। আমি তোমায় দেখে হাজারো বার দোজখ যেতে রাজী। আল্লাহ তোমায় দেখে হাজারো বার দোজখ যেতে রাজি।। যেরূপে হোক বারেক যদি দেখে তোমায় কেহ দোজখ্ কি আর ছুঁতে পারে পবিত্র তাঁর দেহ। সে হোক না কেন হাজার পাপী হোক না বে-নামাজী।। ইয়া আল্লাহ, তোমার দয়া কত তাই দেখাবে ব’লে রোজ-হাশরে দেখা দেবে বিচার করার ছলে, — প্রেমিক বিনে কে বুঝিবে তোমার এ কারসাজি।।
আমায় আঘাত যত হানবি শ্যামা
বাণী
আমায় আঘাত যত হানবি শ্যামা ডাকব তত তোরে। মায়ের ভয়ে শিশু যেমন লুকায় মায়ের ক্রোড়ে।। ওমা চারধারে মোর দুখের পাথার তুই পরখ্ কত করবি মা আর, আমি জানি তবু পার হ’ব মা চরণতরী ধ’রে।। আমি ছাড়বো না তোর নামের ধেয়ান বিশ্বভুবন পেলে, আমায় দুঃখ দিয়ে নাম ভুলাবি, নই মা তেমন ছেলে। আমায় দুঃখ দেওয়ার ছলে তুই স্মরণ করিস পলে পলে, আমি সেই আনন্দে দুখের অসীম-সাগর যাব ত’রে।।
সখি তখন আমার বালিকা বয়স
বাণী
সখি তখন আমার বালিকা বয়স বেণু শুনেছিনু যবে। আমি বুঝিনি সেদিন, ডাকে বাশুরিয়া আমারেই বেণু রবে, সখি, আমারেই বেণু রবে।। তার বাঁশরির সুরে মাঝে মাঝে সখি শিহরিয়া উঠিতাম গো — মনে হ’ত ঐ সুরের আড়ালে আছে যেন মোর নাম গো। ডাকিত — ‘রাধা জাগো, জাগো প্রিয়া’, হের গো যমুনা তোমার বিরহে উঠিয়াছে উথলিয়া।। শিহরিত কলেবর, জাগিত ভীতি গো, ও কি পূর্বানুরাগ, ও কি প্রথম প্রীতি গো।সখি গো — সখি, হেরিনু স্বপনে নব জলধর রসে-ঢলঢল কালা মোর বুকে এসে কাঁদে, বলে লহ, রাধে, কণ্ঠের বনমালা তার শিরে শিখি-পাখা, চাঁচর চিকুর দোলে কপোলের কাছে লো দোলে দোলে দোলে দোলে গো — সে বাঁশী রেখে পায় মুখপানে চায়, কি যেন ভিক্ষা যাচে।। আমি দিতে যে নারি লো, যাহা চায় তাহা আমি দিতে যে নারি লো; ও বোঝে না কুলবতী কুলের বাধা, দিতে যে নারী লো, দিতে যে নারি লো।
বাজাও প্রভু বাজাও ঘন বাজাও
বাণী
বাজাও প্রভু বাজাও ঘন বাজাও ভীম বজ্র-বিষাণে দুর্জয় মহা-আহ্বান তব। বাজাও! অগ্নি তূর্য কাঁপাক সূর্য বাজুক রুদ্রতালে ভৈরব।। দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও! নট-মল্লার দীপক-রাগে জ্বলুক তড়িৎ-বহ্নি আগে, ভেরির রন্ধ্রে মেঘ-মন্দ্রে জাগাও বাণী জাগ্রত নব।। দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও! দাসত্বের এ ঘৃণ্য তৃপ্তি ভিক্ষুকের এ লজ্জা-বৃত্তি, বিনাশ জাতির দারুণ এ লাজ, দাও তেজ দাও মুক্তি-গরব।। দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও! খুন দাও নিশ্চল এ হস্তে শক্তি-বজ্র দাও নিরস্ত্রে, শীর্ষ তুলিয়া বিশ্বে মোদেরও দাঁড়াবার পুন দাও গৌরব।। দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও! ঘুচাতে ভীরুর নীচতা দৈন্য প্রের হে তোমার ন্যায়ের সৈন্য, শৃঙ্খলিতের টুটাতে বাঁধন আন আঘাত প্রচন্ড আহব।। দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও! নিবীর্য্য এ তেজঃসূর্য্যে, দীপ্ত কর হে বহ্নি-বীর্য্যে, শৌর্য, ধৈর্য্য মহাপ্রাণ দাও, দাও স্বাধীনতা সত্য বিভব।।