বাণী

আমি প্রভাতী তারা পূর্বাচলে
আশা-প্রদীপ আমি নিশির শীশ-মহলে।।
রাতের কপোলে আমি ছলছল অশ্রুর জল,
আমি ধরণীতে হিম-কণা টলমল, নব দুর্বাদলে।।
নব অরুণোদয়ের আমি ইঙ্গিত
বিহগ-কণ্ঠে আমি জাগাই শুভ-সঙ্গীত।
আমিকনক-কদম তিমির নীপ শাখায়
আমিমধ্যমণি মালিকায়, শ্যাম গগন-গলে।।

বাণী

আগের মত আমের ডালে বোল ধরেছে বউ।
তুমিই শুধু বদ্‌লে গেছ, আগের মানুষ নও।।
	তেম্‌নি আজো তোমার নামে
	উথলে মধু গোলাপ-জামে,
উঠ্ল পু’রে জামরুলে রস, মহুল ফুলে মউ।।
ডালিম-দানায় রং ধরেছে, ডাঁশায় নোনা আতা,
তোমার পথে বিছায় ছায়া ছাতিম তরুর ছাতা।
	তেম্‌নি আজো নিমের ফুলে
	ঝিম্‌ হয়ে ঐ ভ্রমর দুলে,
হিজল-শাখায় কাঁদছে পাখি বউ গো কথা কও।।

বাণী

হিন্দু আর মুসলিম মোরা দুই সহোদর ভাই।
এক বৃন্তে দু’টি কুসুম এক ভারতে ঠাঁই॥
সৃষ্টি যাঁর মুসলিম রে ভাই হিন্দু সৃষ্টি তাঁরি
মোরা বিবাদ ক’রে খোদার উপর করি যে খোদকারি।
শাস্তি এত আজ আমাদের হীন-দশা এই তাই॥
দুই জাতি ভাই সমান মরে মড়ক এলে দেশে
বন্যাতে দুই ভাইয়ের কুটির সমানে যায় ভেসে।
দুই জনারই মাঠেরে ভাই সমান বৃষ্টি ঝরে —
সব জাতিরই সকলকে তাঁর দান যে সমান করে
চাঁদ সুরুযের আলো কেহ কম-বেশি কি পাই
বাইরে শুধু রঙের তফাৎ ভিতরে ভেদ নাই॥

বাণী

প্রিয়	তুমি কোথায় আজি কত সে দূর।
প্রাণ	কাঁদে ব্যথায় বিরহ-বিধুর।।
	স্বপন-কুমারী, স্বপনে এসে
	মিশাইলে কোন্ ঘুমের দেশে
	তড়িত-শিখা ক্ষণিক হেসে
	লুকালে মেঘে আঁধারি’ হৃদি-পুর।।
	আপনা নিয়ে ছিনু একেলা
	কোন্ সে কূলে ভিড়ালে ভেলা
	জীবন নিয়ে মরণ-খেলা
	খেলিতে কেন আসিলে নিঠুর।।
	ঊষার গাঙে গাহন করি’
	দাঁড়ালে নভে রঙের পরী
	প্রেমের অরুণ উদিল যবে
	মিশালে নভে, হে লীল-চতুর।।

বাণী

আয় ওলো সই, খেলবো খেলা ফাগের ফাজিল পিচ্‌কিরিতে।
আজ শ্যামে জোর করব ঘায়েল হোরির সুরে গিট্‌কিরিতে।।
	বসন-ভূষণ ফেল্‌লো খুলে’,
	দে দোল্ দে দোল্ দোদুল-দুলে,
কর্ লালে-লাল কালায় কালো আবির হাসির টিট্‌কিরিতে।।

বাণী

আজো কাঁদে কাননে কোয়েলিয়া।
চম্পা কুঞ্জে আজো গুঞ্জে ভ্রমরা, কুহরিছে পাপিয়া।।
প্রেম-কুসুম শুকাইয়া গেল হায়,
প্রাণ-প্রদীপ মোর হের গো নিভে যায়,
বিরহী এসো ফিরিয়া।।
তোমারি পথ চাহি হে প্রিয় নিশিদিন
মালার ফুল মোর ধূলায় হ’ল মলিন
জনম গেল ঝুরিয়া।।