বাঁধিয়া দুইজনে দুঁহু ভুজ
বাণী
বাঁধিয়া দুইজনে দুঁহু ভুজ বন্ধনে কাঁদিছে শ্যাম রাই। মিলনের মাঝে এত বেদনা যে বাজে গো – দেখি নাই, শুনি নাই।। সাগরে মিশে নদী, তবু কাঁদে নিরবধি, বুঝি না কেন গো – বুকে যত পায়, তত তৃষ্ণা বেড়ে যায়, সাধ মেটে না যেন গো।। সাধ কি মেটে গো চাঁদকে হেরে চকোরিণীর সাধ কি মেটে গো – মেঘ দেখে চাতকিনীর সাধ কি মেটে গো। হের, নব নাগরি নব নাগর মাতিল প্রেম-রসে, নব প্রভাত-কমলে যেন বন ভ্রমর বসে। নব সোনার শতদলে যেন নব মেঘের ছায়া কনকমালা ঘিরিল যেন বন নীল গিরি কায়া। গিরিধারীরে ধরিল, ধিরিধিরি রাধা গিরিধারীরে ধরিল।। আধ অধরে ধরে নাক’ হাসি, আধ-অধরে বাঁশি, হেরি’ আধ অঙ্গ দাস হতে চায়, আধ অঙ্গ দাসী; শ্রীচরণ ঘিরিয়া মন মধুকর গাহে, চরণাম্বুজ-রজ মাধুকরী চাহে।। বলে, ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও – ওই চরণ কমল-মধু ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও, ঐ যুগল-রূপ রাধা-শ্যাম দেখি যেন অবিরাম (ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও) আমি আনন্দ-যমুনা হয়ে, চরণ ধুয়ে যাব বয়ে, (ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও) আমি নিত্য হৃদি-ব্রজধামে হেরিব মোর রাধা-শ্যামে, (ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও)।।
বেতার গীতিচিত্রঃ ‘যুগল মিলন’
আয় মরু পারের হাওয়া নিয়ে যা রে
বাণী
আয় মরু পারের হাওয়া নিয়ে যা রে মদিনায় — জাত-পাক মুস্তাফার রওজা মুবারক যেথায়।। মরিয়া আছি দুখে মাশরেকী এই মুল্লুকে, পড়ব মাগরিবের নামাজ কবে খানা-এ কা'বায়।। হজরতের নাম তসবি করে যাব রে মিসকিন বেশে ইসলামের ঐ দ্বীনী ডঙ্কা বাজল প্রথম যে দেশে। কাঁদব ধরে মাজার শরীফ ধরে শুনব সেথায় কান পাতি, — নবীর মুখে তেমনি কি রে রব ওঠে 'এ্যায় উম্মতি'! পাক কোরানের কালাম হয়ত সেথা শোনা যায়।।
আমি যার নূপুরের ছন্দ
বাণী
আমি যার নূপুরের ছন্দ বেণুকার সুর - কে সেই সুন্দর কে! আমি যার বিলাস-যমুনা বিরহ-বিধুর কে সেই সুন্দর কে।। যাহার গানের আমি বনমালা আমি যার কথার কুসুম-ডালা, না-দেখা সুদূর - কে সেই সুন্দর কে।। যার শিখী-পাখা লেখনী হয়ে গোপনে মোরে কবিতা লেখায় সে রহে কোথায় হায়! আমি যার বরষার আনন্দ-কেকা নৃত্যের সঙ্গিনী দামিনী-রেখা, যে মম অঙ্গে কাঁকন-কেয়ূর কে সেই সুন্দর কে।।
জাগো জাগো রে মুসাফির
বাণী
জাগো জাগো, রে মুসাফির হ’য়ে আসে নিশিভোর। ডাকে সুদূর পথের বাঁশি ছাড় মুসাফির-খানা তোর।। অস্ত-আকাশ-অলিন্দে ঐ পান্ডুর কপোল রাখি’ কাঁদে মলিন ভোরের শশী, বিদায় দাও বন্ধু চকোর।। মরুচারী খুঁজিস সলিল অগ্নিগিরির কাছে, হায়! খুঁজিস অমর ভালোবাসা এই ধরণীর এই ধূলায়। দারুণ রোদের দাহে খুঁজিস কুঞ্জ-ছায়া স্বপ্ন-ঘোর।।
বাঁকা চোখে চাহে ও কে
বাণী
বাঁকা চোখে চাহে ও কে ওকি ভয়ে, না লাজে, না ভালোবাসায়? বটের ঝুরি ধ’রে হেসে তাকায় দীঘির জলে কভু কল্সি ভাসায়॥ (আমার) পাখি শিকার দেখে তাহার আঁখি ছলছল যেন দুটি ঝিনুক ভরা কাজলা দীঘির জল তার আঁজলা ভরা শাপলা কাঁপে টলমল্ গো সে বাঁকিয়ে জোড়া ভুরু মোরে শাসায়॥ কভু এলায়ে গা বাঁধে খোঁপা কোমরে জড়ায় আঁচল মট্কায় আঙুল, কভু ঘসে সে পা গো কভু জলে ডোবে কভু সাঁতার কাটে নানান ছলে সে দেরি করে জলের ঘাটে মোরে জানায় যেন ও সে আছে ব’সে কাহার আসার আশায়॥