ও বন্ধু! দেখলে তোমায় বুকের মাঝে
বাণী
ও বন্ধু! দেখ্লে তোমায়, বুকের মাঝে জোয়ার-ভাঁটা খেলে। আমি এক্লা ঘাটে কুলবধূ কেন তুমি এলে বন্ধু, কেন তুমি এলে।। ও বন্ধু, আমার অঙ্গে কাঁটা দিয়ে ওঠে বাজাও যখন বাঁশি আমি খিড়্কি দুয়ার দিয়ে বন্ধু, জল ভরিতে আসি ভেসে’ নয়ন-জলে ঘরে ফিরি ঘাটে কলস ফেলে।। আমার পাড়ায়, বন্ধু, তোমার নাম যদি নেয় কেউ বুকে আমার দুলে ওঠে পদ্মা নদীর ঢেউ বন্ধু পদ্মা নদীর ঢেউ। ওগো ও চাঁদ, এনো না আর দু’কূল-ভাঙা এমন জোয়ার কত ছল ক’রে জল লুকাই চোখের কাঁচা কাঠে আগুন জ্বেলে।।
পথে কি দেখলে যেতে আমার
বাণী
পথে কি দেখলে যেতে আমার গৌর দেবতারে। যা’রে কোল যায় না দেওয়া, কোল দেয় সে ডেকে তারে।। নবীন সন্ন্যাসী সে রূপে তার পাগল করে আঁখির ঝিনুকে তা’র অবিরল মুক্তা ঝরে। কেঁদে সে কৃষ্ণের প্রেম ভিক্ষা মাগে দ্বারে দ্বারে।। জগতের জগাই-মাধাই মগ্ন যারা পাপের পাঁকে সকলের পাপ নিয়ে সে সোনার গৌর-অঙ্গে মাখে। উদার বক্ষে তাহার ঠাঁই দেয় সকল জাতে দেখেছ প্রেমের ঠাকুর সচল জগন্নাথে? একবার বললে হরি যায় নিয়ে সে ভবপারে।।
তোমার আসার আশায় দাঁড়িয়ে থাকি
বাণী
তোমার আসার আশায় দাঁড়িয়ে থাকি একলা বালুচরে নদীর পানে চেয়ে চেয়ে মন যে কেমন করে।। অনেক দূরে তরী বেয়ে আসে যদি কেউ, আমার বুকে দুলে ওঠে উজান নদীর ঢেউ; নয়ন মুছে চেয়ে দেখি সে গিয়েছে স'রে।। আঁচল-ঢাকা ফুলগুলিও শুকায় বুকের তলে ঘরে ফিরি গাগরি মোর ভ'রে নয়ন জলে। বিদেশে তো যায় অনেকে আবার ফিরে আসে, কপাল দোষে তুমি শুধু রইলে পরবাসে; অধীর নদী রোদন বাজে বুকের পিঞ্জরে।।
চঞ্চল ঝর্না সম হে প্রিয়তম
বাণী
চঞ্চল ঝর্না সম হে প্রিয়তম আসিলে মোর জীবনে। নীরব মনের উপবন মর্মরি’ উঠিল অধীর হরষণে।। যে মুকুল ঘুমায়ে ছিল পত্রপুটে অনুরাগে ফুল হয়ে উঠিল ফুটে, তনুর কূলে কূলে ছন্দ উঠিল দুলে আকুল শিহরণে।। অলকানন্দা হ’তে রসের ধারা তুমি আনিলে বহি’, অশান্ত সুরে একি গাহিলে গান, হে দূর বিরহী। মায়ামৃগ তুমি হেসে চ’লে যাও তব কূলে যে কাঁদে তারে ফিরে নাহি চাও, কত বন ভূমিরে আঁখি-নীরে ভাসাও — হে উদাসীন আনমনে।।
হে পার্থসারথি বাজাও বাজাও
বাণী
হে পার্থসারথি! বাজাও বাজাও পাঞ্চজন্য শঙ্খ চিত্তের অবসাদ দূর কর কর দূর ভয়–ভীত জনে কর হে নিঃশঙ্ক।। ধনুকে টঙ্কার হানো হানো, গীতার মন্ত্রে জীবন দানো; ভোলাও ভোলাও মৃত্যু–আতঙ্ক।। মৃত্যু জীবনের শেষ নহে নহে — শোনাও শোনাও — অনন্ত কাল ধরি’ অনন্ত জীবন প্রবাহ বহে। দুর্মদ দুরন্ত যৌবন–চঞ্চল ছাড়িয়া আসুক মা’র স্নেহ–অঞ্চল; বীর সন্তানদল করুক সুশোভিত মাতৃ–অঙ্ক।।