বাণী

নূরের দরিয়ায় সিনান করিয়া কে এলো মক্কায় আমিনার কোলে
ফাগুন-পূর্ণিমা-নিশীথে যেমন আস্‌মানের কোলে রাঙা চাঁদ দোলে।।
	কে এলো কে এলো গাহে কোয়েলিয়া,
	পাপিয়া বুল্‌বুল্‌ উঠিল মাতিয়া,
গ্রহতারা ঝুঁকে করিছে কুর্নিশ হুরপরী হেসে পড়িছে ঢ’লে।।
	জিন্নাতের আজ খোলা দরওয়াজা পেয়ে
	ফেরেশ্‌তা আম্বিয়া এসেছে ধেঁয়ে
	তাহ্‌রীমা বেঁধে ঘোরে দরুদ গেয়ে
	দুনিয়া টলমল্‌, খোদার আরশ টলে।।
	এলো রে চির-চাওয়া এলো আখেরি নবী
	সৈয়দে মক্কী মদনী আল্‌-আরবি,
	নাজেল হয়ে সে যে ইয়াকুত-রাঙা ঠোঁটে
	শাহ্‌দতের বাণী আধো আধো বোলে।।

বাণী

মেঘ মেদুর বয়ষায় কোথা তুমি
ফুল ছাড়ায়ে কাঁদে বনভূমি।।
ঝুরে বারিধারা
ফিরে এসো পথহারা
কাঁদে নদী তট চুমি’।।

বাণী

সেই মিঠে সুরে মাঠের বাঁশরি বাজে।
নিঝুম নিশীথে ব্যথিত বুকের মাঝে॥
	মনে প’ড়ে যায় সহসা কখন
	জল ভরা দু’টি ডাগর নয়ন,
পিঠ-ভরা চুল সেই চাঁপা ফুল ফেলে ছু’টে যাওয়া লাজে॥
হারানো সে-দিন পাব না গো আর ফিরে,
দেখিতে পাব না আর সেই কিশোরীরে।
	তবু মাঝে মাঝে আশা জাগে কেন
	আমি ভুলিয়াছি ভোলেনি সে যেন,
গোমতীর তীরে পাতার কুটীরে (সে) আজও পথ চাহে সাঁঝে।

বাণী

ভুল ক'রে যদি ভালোবেসে থাকি ক্ষমিও সে অপরাধ।
অসহায় মনে কেন জেগেছিল ভালবাসিবার সাধ।।
	কত জন আসে তব ফুলবন
	মলয়, ভ্রমর, চাঁদের কিরণ, —
তেমনি আমিও আসি অকারণ অপরূপ উন্মাদ।।
তোমার হৃদয়-শূন্যে জ্বলিছে কত রবি শশী তারা,
তারি মাঝে আমি ধূমকেতু সম এসেছিনু পথহারা।
	তবু জানি প্রিয় একদা নিশীথে
	মনে পড়ে যাবে আমারে চকিতে,
সহসা জাগিবে উৎসব-গীতে সকরুণ অবসাদ।।

বাণী

গভীর নিশীথে জাগি’ খুঁজি তোমারে।
দূর গগনে প্রিয় তিমির-‘পারে।।
জেগে যবে দেখি হায় তুমি নাই কাছে
আঙিনাতে ফুটে’ ফুল ঝ’রে পড়ে আছে,
বাণ-বেঁধা পাখি সম আহত এ প্রাণ মম —
লুটায়ে লুটায়ে কাঁদে অন্ধকারে।।
মৌন নিঝুম ধরা, ঘুমায়েছে সবে,
এসো প্রিয়, এই বেলা বক্ষে নীরবে।
কত কথা কাঁটা হ’য়ে বুকে আছে বিঁধে
কত আভিমান কত জ্বালা এই হৃদে,
দেখে যাও এসো প্রিয় কত সাধ ঝ’রে গেল —
কত আশা ম’রে গেল হাহাকারে।।

বাণী

লায়লী তোমার এসেছে ফিরিয়া মজনুঁ গো আঁখি খোলো।
প্রিয়তম! এতদিনে বিরহের নিশি বুঝি ভোর হলো।।
মজনুঁ! তোমার কাঁদন শুনিয়া মরু–নদী পর্বতে
বন্দিনী আজ ভেঙেছে পিঞ্জর বাহির হয়েছে পথে।
আজিদখিনা বাতাস বহে অনুকূল,
		ফুটেছে গোলাপ নার্গিস ফুল,
ওগো বুলবুল, ফুটন্ত সেই গুলবাগিচায় দোলো।।
বনের হরিণ–হরিণী কাঁদিয়া পথ দেখায়েছে মোরে,
হুরী ও পরীরা ঝুরিয়া ঝুরিয়া চাঁদের প্রদীপ ধ’রে।
		আমার নয়নে নয়ন রাখিয়া
		কি বলিতে চাও, হে পরান–পিয়া!
নাম ধ’রে ডাকো ডাকো মোরে স্বামী
		ভোলো অভিমান ভোলো।।