বাণী

মা! আমার মনে আমার বনে
		ফোটে যত কুসুম দল
সে ফুল মাগো তোরই তরে
		পূজ্‌তে তোরই চরণতল।।

নাটকঃ ‘বিদ্যাপতি’

বাণী

‘কালী কালী’ মন্ত্র জপি ব’সে শোকের ঘোর শ্মশানে।
মা অভয়ার নাম গুণে শান্তি যদি পাই এ প্রাণে।।
	এই শ্মশানে ঘুমিয়ে আছে
	যে ছিল মোর বুকের কাছে,
সে হয়ত আবার উঠবে জেগে মা ভবানীর নাম-গানে।।
সকল সুখ শান্তি আমার নিল হ’রে যে-পাষাণী,
শূন্য বুকে বন্দী ক’রে রাখব আমি তারেই আনি’।
	মোর, যাহা প্রিয় মাকে দিয়ে
	জাগি আশার দীপ১ জ্বালিয়ে,
মা’র সেই চরণের নিলাম শরণ, যে-চরণে মা আঘাত হানে।।২

১. বুকে চিতা, ২. যে চরণে প্রলয় আনে

বাণী

শিব-অনুরাগিণী গৌরী জাগে।
আঁখি অনুরঞ্জিত প্রেমানুরাগে।।
	স্বপনে কি শিব এসে
	বর দিল বর-বেশে,
বালিকা বলিতে নারে, শরম লাগে।।
‘কি হয়েছে উমা তোর’ — গিরিরানী সাধে,
কে মাখালো কুম্‌কুম্‌ ভোরের চাঁদে?
	লুকায় মায়ের বুকে
	বলিতে বাধে মুখে,
পাগল শিব ঐ রূপ-ভিক্ষা মাগে।।

বাণী

ছিটাইয়া ঝাল নুন এলো ফাল্গুন মাস
কাঁচা বুকে ধরে ঘুণ, শ্বাস ওঠে ফোঁস ফাঁস।।
শিমুল ফুলের মত ফটাফট্‌ ফাটে হিয়া
প্রেম-তুলো বের হয়ে পড়ে গো ছড়াইয়া,
সবে বালিশ ধরিয়া করে ছটপট হাঁসফাঁস।।
চিবুতে সজ্‌’নে খাড়া সজনীরা ভুলে যায়,
আনাগোনা করে প্রেম পরানের দরজায়,
হৃদয়ের ইঞ্জিনে গ্যাস্‌ ওঠে ভোঁস ভাঁস।।
কচি আম-ঝোল-টক খাইয়া গিন্নি মায়
বৌঝির সাথে করে টক্ষাই টক্ষাই।
আইবুড়ো আইবুড়ি জল গেলে ছ’ গেলাস।।
বিরহিণীদের আঁখি-কলসি হয়েছে ফুটো,
গাধাও আজ গাহে গান ফেলিয়া ঘাসের মুঠো,
নোনা-পাকা মন বলে, কবে আসে তালশাঁস।।

বাণী

মাগো চিন্ময়ী রূপ ধ’রে আয়।
মৃন্ময়ী রূপ তোর পূজি শ্রী দুর্গা তাই দুর্গতি কাটিল না হায়।।
	যে মহা-শক্তির হয় না বিসর্জন
	অন্তরে বাহিরে প্রকাশ যার অনুখন
মন্দিরে দুর্গে রহে না যে বন্দী সেই দুর্গারে দেশ চায়।।
আমাদের দ্বিভুজে দশভুজা-শক্তি দে পরম ব্রহ্মময়ী।
শক্তিপূজার ফল ভক্তি কি পাব শুধু হব না কি বিশ্বজয়ী?
এই পূজা-বিলাস সংহার কর্‌ যদি, পুত্র শক্তি নাহি পায়।।

বাণী

লক্ষ্মী মা তুই ওঠ্ গো আবার সাগর জলে সিনান করি’।
হাতে ল’য়ে সোনার ঝাঁপি, সুধার পাত্রে সুধা ভরি’।।
আন্ মা আবার আঁচলে তোর নবীন ধানের মঞ্জরি সে,
টুনটুনিতে ধান খেয়েছে, খাজনা মাগো দিব কিসে।
ডুবে গেছে সপ্ত-ডিঙা, রত্ন বোঝাই সোনার তরী।।
ক্ষীরোদ-সাগর-কন্যা যে তুই, খেতে দে ক্ষীর সর মা আবার,
পান্তা লবণ পায় না ছেলে, জননী তোর এ কোন বিচার?
কার কাছে মা নালিশ করি, অনন্ত শয়নে হরি।।
তোরও কি মা ধর্‌ল ঘুমে নারায়ণের ছোঁয়াচ লেগে,
বর্গী এল দেশে মাগো, খোকারা তোর কাঁদে জেগে।
এসে এবার ঘুম পাড়া মা, মাগো ভয়ে ক্ষিদেয় মরি।।
কোন্‌ দুখে তুই রইলি ভুলে বাপের বাড়ি অতল-তুলে,
ব্যথার সিন্ধু মন্থন শেষ, ভ’রল যে দেশ হলাহলে।
অমৃত এনে সন্তানে তোর, বাঁচা মা, তোর পায়ে ধরি।।