বাণী

	আদরিণী মোর কালো মেয়ে রে কেমনে কোথায় রাখি।
তারে	রাখিলে চোখে বাজে ব্যথা বুকে বুকে রাখিলে দুখে ঝুরে আঁখি।।
	কাঙাল যেমন পাইলে রতন লুকাতে ঠাঁই নাহি পায়;
	তেমনি আমার শ্যামা মেয়েরে জানি না রাখিব কোথায়।
			দুরন্ত মোর এই মেয়েরে
			বাঁধব আমি কি দিয়ে রে,
(তাই)পালিয়ে যেতে চায় সে যবে আমি অমনি মা ব’লে ডাকি।।

বাণী

সখি গো বৃথা প্রবোধ দিস্‌নে ললিতে
কোন্ প্রাণে তুই বলতে পারিলি মোর শ্রীকৃষ্ণে ভুলিতে।।
সেই নন্দপুরের চন্দ্র বিহনে নাহি আনন্দ মোর।
তারে না হেরিলে তিলেকের তরে বাঁচে না চিত-চকোর।।
বলে দে বলে দে কোথা আমার প্রাণসখা
				ভাসি আমি আঁখি-নীরে 
কেঁদে কেঁদে অন্ধ হলাম ভাসি আমি আঁখি-নীরে।
সখি, এই তো আমার সাধনা
আমার মত জগত কাঁদুক, এই তো আমার কামনা।।
কাঁদতে হবে — 
যে হরিরে মোর হরিবে, তায় রাধার মত কাঁদতে হবে।
সে কৃষ্ণ কৃষ্ণ বলে চিরজীবন কাঁদবে ভবে।
সখি কাঁদলে তারে যায় না পাওয়া
তাহলে সখি আমি পেতাম 
যদি কাঁদলে তারে পাওয়া যেত যশোমতী তারে হারাত না।
সে যে প্রেমের চির-কাঙাল 
প্রেম বিনে তায় যায় না পাওয়া।

বাণী

আবির-রাঙা আভীরা নারী সনে কৃষ্ণ কানাই খেলে হোলি।
হোরির মাতনে চুড়ি ও কাঁকনে উঠিছে কল-কাকলি।।
শ্যামল তনু হ’ল রাঙা আবিরে রেঙে,
ইন্দ্রধনু-ছটা যেন কাজল মেঘে,
				রাঙিল রঙে নীল চোলি।।
লহু লহু হাসে মুহু মুহু ভাসে রাঙা কুঙ্কুম ফাগের রাগে,
দোঁহে দুহু ধরি’ মারে পিচকারি চাঁদ-মুখে কলঙ্ক জাগে।
অঙ্গে অপাঙ্গে অনঙ্গ-রঙ্গিমা ইঙ্গিতে উঠিছে উছলি’।।

বাণী

	চাষ কর দেহ জমিতে
	হবে নানা ফসল এতে।
	নামাজে জমি ‘উগালে’
	রোজাতে জমি ‘সামালে’,
কলেমায় জমিতে মই দিলে চিন্তা কি হে এই ভবেতে।।
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাতে
বীজ ফেল্ তুই বিধি-মতে,
পাবি ‘ঈমান’ ফসল তাতে —
		আর রইবি সুখেতে।।
নয়টা নালা আছে তাহার
ওজুর পানি সিয়াত যাহার,
ফল পাবি নানা প্রকার —
		ফসল জন্মিবে তাহাতে।।
যদি ভালো হয় সে-জমি
হজ্ জাকাত লাগাও তুমি,
আরো সুখে থাকবে তুমি —
		কয় নজরুল এসলামেতে।।

লেটো : ‘চাষার সঙ’

বাণী

বিদেশী তরী এলো কোথা হ’তে
প্রভাত-ঘাটে, আলোর স্রোতে।।
অসীম বিরহ-রাতের শেষে
কে এলো কিশোর-নাইয়ার বেশে,
বাঁশরি বাজায়ে দুয়ারে এসে —
	ডাকে হেসে অকূল-পথে।।
অঙ্গনে এলা শুভ দিনের আলো,
বুঝি মোর নিরাশার শর্বরী গো পোহালো।
আশাবরি সুরে বেণুকা বাজে
চির-চাওয়া এলো অভিসারে-সাজে,
	পূর্বাচলের ঘাটে অরুণ-রথে।।

বাণী

বকুল বনের পাখি ডাকিয়া আর ভেঙ্গো না ঘুম
বকুল বাগানে মম, ফুরায়েছে ফুলের মরশুম॥
ওগো, প্রিয় মোর দূর বিদেশে কারে আর ডাকিছ পাখি
খুলিয়া পড়িছে হাতের, মলিন মালতী রাখি।
নিভিয়া গিয়াছে প্রদীপ রেখে গেছে স্মৃতির ধূম॥
ষোড়শী বাসন্তিকার রঙ দেহে মোর হয়েছে ম্লান।
খেলার সাথী পরদেশে, কারে দিই এ প্রীতির কুম্‌কুম্‌॥