বাণী

শ্যামা নামের ভেলায় চ'ড়ে কাল-নদীতে দুলি।
ঘাটে ঘাটে ঘটে ঘটে (আমি) সুরের লহর তুলি।।
	কাল-তরঙ্গে ভাসিয়ে অঙ্গ,
	দেখে বেড়াই কত রঙ্গ,
কায়ায় কায়ায় রঙ-বেরঙের (ওরে) শত মায়ার ঠুলি।।
জন্মান্তর ঘাটে ঘাটে ভাসি উঠি ডুবি
মা নিশিদিন ডাকে আমায়, 'ওরে আয় আমারে ছুঁবি'।
	মোরে কাল-স্রোতে ভাসানের ছলে
	মা লীলা দেখান নাট-মহলে
ওই খেলার (ছলে) শেষে আপনি এসে (মা) বক্ষে নেবেন তুলি।।

বাণী

আসিলে এ ভাঙা ঘরে কে মোর রাঙা অতিথি।
হরষে বরিষে বারি শাওন-গগন তিতি'।।
বকুল-বনের সাকি নটীন পুবালি হাওয়া
বিলায় সুরভি-সুরা মাতায় কানন-বীথি।।
তিতির শিখীর সাথে নোটন-কপোতী নাচে;
ঝিঁঝির ঝিয়ারি গাহে ঝুমুর কাজরি-গীতি।
হিঙুল হিজল-তলে ডাহুক পিছল-আঁখি,
বধূর তমাল-চোখে ঘনায় নিশীথ-ভীতি।
তিমির-ময়ুর আজি তারার পেখম খোলে
জড়ায় গগন-গলে চাঁদের ষোড়শী তিথি।।

বাণী

বনে মোর ফুটেছে হেনা চামেলি যূথী বেলি।
এসো এসো কুসুম সুকুমার শীতের মায়া-কুহেলি অবহেলি’॥
পরানে দেয় দোলা দেয় দোলা দুল্ দোলায়
(পরানে দেয় দোলা দেয় দোলা দেয় দোলন্)
	উতলা দখিন হাওয়া
কোকিল কুহরে কুহু কুহু স্বরে মদির স্বপন-ছাওয়া।
হাসে গীত-চঞ্চল, জোছনা-উজল মাধবী রাতি
	এসো এসো যৌবন সাথি
ফুল-কিশোর, হে চিতচোর, দেবতা মোর।
	মম লাজ অবগুণ্ঠন ঠেলি’॥

বাণী

	কোন্‌ সুদূরের চেনা বাঁশির ডাক শুনেছিস্‌ ওরে চখা?
			ওরে আমার পলাতকা!
তোর প’ড়লো মনে কোন্‌ হানা–ঘর,
			স্বপন-পারের কোন্‌ অলকা?
			ওরে আমার পলাতকা।।
তোর জল ভ’রেছে চপল চোখে,
বল কোন্‌ হারা–মা ডাক্‌লো তোকে রে
ঐ গগন–সীমায় সাঁঝের ছায়ায় —
	হাতছানি দেয় নিবিড় মায়ায় —
	উতল পাগল! চিনিস্‌ কি তুই চিনিস্‌ ওকে রে?
যেনবুক–ভরা ও’ গভীর স্নেহে ডাক দিয়ে যায়, ‘আয়,
			ওরে আয় আয় আয়,
কোলে আয় রে আমার দুষ্টু খোকা!
‌ওরে আমার পলাতকা।।‘
			দখিন হাওয়ায় বনের কাঁপনে —
	দুলাল আমার! হাত–ইশারায় মা কি রে তোর
				ডাক দিয়েছে আজ?
			এতদিনে চিনলি কি রে পর ও আপনে!
	নিশি ভোরেই তাই কি আমার নামলো ঘরে সাঁঝ?
			ধানের শীষে, শ্যামার শিষে —
			যাদুমণি! বল্‌ সে কিসে রে,
		তুই শিউরে চেয়ে ছিঁড়্‌লি বাঁধন!
			চোখ ভরা তোর উছলে কাঁদন রে!
তোরে কে পিয়ালো সবুজ স্নেহের কাঁচা বিষে রে!
‌‌যেন আচম্‌কা কোন্‌ শশক–শিশু চম্‌কে ডাকে হায়,
			‘ওরে আয় আয় আয় —
		বনে আয় ফিরে আয় বনের সখা।
		ওরে চপল পলাতকা।।

বাণী

চল জয়যাত্রায় চল বাসন্তী-বাহিনী
চল রচিতে বুকে বুকে নব প্রেম-কাহিনী।।
যথা উদাসীন পুরুষ তপস্যা-মগ্ন
জাগো সেথা সুরত রতি অতি লগ্ন —
যার বাসনা ফুরায় মনে — চলো তার তপোবনে
		চল কামনার কামিনী।।

নাটক : ‘হরপার্বতী’

বাণী

মোরা এক বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু-মুসলমান।
মুসলিম তার নয়ন-মণি, হিন্দু তাহার প্রাণ।।
	এক সে আকাশ মায়ের কোলে
	যেন রবি শশী দোলে,
এক রক্ত বুকের তলে, এক সে নাড়ির টান।।
এক সে দেশের খাই গো হাওয়া, এক সে দেশের জল,
এক সে মায়ের বক্ষে ফলাই একই ফুল ও ফল।
	এক সে দেশের মাটিতে পাই
	কেউ গোরে কেউ শ্মাশানে ঠাঁই
এক ভাষাতে মা’কে ডাকি, এক সুরে গাই গান।। 

নাটিকাঃ‘পুতুলের বিয়ে’