নিবন্ধ সূচীপত্র

 

নজরুল সেনাবাহিনীতে যোগ দেন আনুমানিক ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসের পর প্রি-টেস্ট পরীক্ষার সময়ে। প্রথমে কলকাতা ফোর্ট উইলিয়াম , পরে প্রশিক্ষণের জন্যে লাহোর হয়ে নওশেরা আর ট্রেনিং শেষে করাচী সেনানিবাসে তাঁর সৈনিক জীবন অতিবাহিত হয়। ১৯১৭ খৃষ্টাব্দের আগস্ট-সেপ্টেম্বর থেকে ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ - এপ্রিল মাস পর্যন্ত প্রায় পৌনে তিন বৎসর তিনি সেনাবাহিনীতে ছিলেন এবং এর মধ্যে সাধারণ সৈনিক থেকে ব্যাটেলিয়ন কোয়ার্টার মাস্টার হাবিলদার পদে উন্নীত হন। সেনাবাহিনীতে সৈনিক জীবনের কঠোর নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যেও তাঁর সাহিত্য ও সঙ্গীত চর্চা চলতে থাকে। ৪৯ বেঙ্গলি রেজিমেন্টের পাঞ্জাবী মৌলভীর কাছে তিনি ফারসি শেখেন , সঙ্গীতানুরাগী সহ-সৈনিকদের প্রমোদের জন্যে সরবরাহকৃত বিভিন্ন দেশী-বিদেশী বাদ্যযন্ত্র সহযোগে সঙ্গীত চর্চা করেন আর গদ্য-পদ্য সাহিত্যচর্চা করতে থাকেন।করাচী সেনানিবাসে রচিত এবং কলকাতায় প্রেরিত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত নজরুল রচনাবলীর মধ্যে ছিল "বাউন্ডেলের আত্মকাহিনী" - নজরুলের প্রথম প্রকাশিত রচনা (সওগাত,মে ১৯১৯),প্রথম প্রকাশিত কবিতা "মুক্তি"(বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা, জুলাই ১৯১৯),করাচীতে রচিত অন্যান্য রচনা ,গল্প "হেনা", "ব্যথার দান", "মেহের নেগার", ঘুমের ঘোরে",কবিতা "আশায়" এবং "কবিতা-সমাধি" প্রভৃতি। উল্লেখ্য যে , করাচীতে থেকেও তিনি কলকাতার সমকালীন প্রধান প্রধান সাহিত্য পত্রিকা যেমন:- "প্রবাসী", ভারতবর্ষ, "ভারতী", "মানসী", সবুজপত্র", সওগাত", "বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা" প্রভৃতির গ্রাহক ছিলেন।এছাড়াও তাঁর কাছে রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র এবং ফরাসি কবি হাফিজের কিছু গ্রন্থও ছিল। ফলে এ কথা বলা যায় যে নজরুলের আনুষ্ঠানিক সাহিত্য চর্চার শুরু করাচী সেনানিবাস থেকেই।

 

 

 

** নজরুল ইন্সটিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত নজরুল এ্যালবাম থেকে সংগৃহীত