বাণী

এলো এলো শবেরাত তোরা জ্বাল্ রে বাতি।
হোক রওশন মুসলিম-জাহানের অন্ধকার রাতি।।
আজ ফিরদৌসের হুর-পরীরা আলোতে রাঙে
চাঁদ সেতারার প্রদীপ ভাসায় আস্‌মানি গাঙে,
ফেরেশ্‌তা সব হয়েছে আজ মোদের সাথি।।
আজ জ্বাল্‌রে বাতি প্রিয়জনের আঁধার গোরে
আজ বরষ পরে লুকিয়ে তারা এসেছে ঘরে,
রাখ্‌ তাদের তরে অশ্রু-ভেজা হৃদয় পাতি।।

বাণী

এমনি মধুর ক্ষণে প্রিয়তম নাহি পাশে।
আকুল পরান মম চম্পা-ফুল-সুবাসে।।
উতলা সমীরে বাজে ব্যাকুল বাঁশি
কাননে উছলি’ পড়ে সুরের রাশি,
আলোকে সুরভি তারি গগন ভরিয়া হাসে।।
বাতায়নে মোর নিশীথের তারা সুধায় নীরবে ডাকি,
‘হায় গো উদাসী এমন নিশায় সজল কেন গো আঁখি।’
	সুদূরে রহিল বঁধু একেলা আমি
	অসহ বিরহ সহি দিবসযামী,
আশার মালিকা রচি’, বসিয়া তাহারি আশে।।

বাণী

	এক্‌লা ভাসাই গানের কমল সুরের স্রোতে।
	খেলার ছলে ওপার পানে এপার হ’তে।।
	আসবে গো এই গাঙের কূলে হয়ত ভুলে আমার প্রিয়া
	খোঁপায় নেবে আমার গানের কমল তুলে তামার প্রিয়া
	খুঁজতে আমায় আসবে সুরের নদী-পথে।।
	নাম-হারা কোন্ গাঁয়ে থাকে অচেনা সে,
তারে	না-ই জানিলাম, গান ভেসে যাক্ তাহার আশে।
	নদীর জলে আল্‌তা-রাঙা পা ডুবায়ে, রয় সে মেয়ে
	গানের কমল লাগে গো তা’র কমল-পায়ে, উজান বেয়ে,
	সেদিন অমর হয় মোর গান, যায় অমরায় পুষ্প-রথে।।

বাণী

এলো এলো রে ঐ সুদূর বন্ধু এলো।
এলো পথ চাওয়া এলো হারিয়ে পাওয়া
মনের আঁধার দূরে গেল, ঐ বন্ধু এলো।।
এলো চঞ্চল বন্যার ঢল মন্থর স্রোত-নীড়ে,
এলো শ্যামল মেঘ-মায়া তৃষিত গগন ঘিরে;
তার পলাতকা মৃগে বন ফিরে পেল।।
এলো পবনে বিহ্‌বল চঞ্চলতা
যেন শান্ত ভবনে এলো সারা ভুবনের কল-কথা।
অলি গুঞ্জরি’ কয় জাগো বনবীথি;
ডাকে দখিনা মলয় — এলো এলো অতিথি;
বাজে তোরণ দ্বারে বাঁশরি গীতি,
দুখ নিশি পোহাল, আঁখি মেল।।

নাটিকা: ‌‘বাসন্তিকা’

বাণী

এসো মা পরমা শক্তিমতী।
দাও শ্রী দাও কান্তি-আনন্দ-শান্তি অন্তরে বাহিরে দিব্য জ্যোতি।।
	দাও অপরাজেয় পৌরুষ শক্তি
	দাও দুর্জয় শৌর্য পরা-ভক্তি,
দাও সূর্য সম তেজ প্রদীপ্ত প্রাণ ঝঞ্ঝার সম বাধাহীন গতি।।
	এসো মা পরম অমৃতময়ী,
	নির্জিত জাতি হোক মৃত্যুজয়ী।
	পরম জ্ঞান দাও পরম অভয়
	রূপ-সুন্দর তনু প্রাণ প্রেমময়,
আকাশের মত দাও মুক্ত জীবন সকল কর্মে হও তুমি সারথি।।

বাণী

এ ঘোর শ্রাবণ-নিশি কাটে কেমনে।
রহি’ রহি’ সেই মুখ পড়িছে মনে।।
	বিজলিতে সেই আঁখি
	চমকিছে থাকি’ থাকি’
শিহরিত এমনি সে বাহু-বাঁধনে।।
শন শন বহে বায় সে কোথায় সে কোথায়
নাহি নাহি ধ্বনি শুনি উতল পবনে হায়
চরাচর দুলিছে অসীম রোদনে।।