বাণী

এসেছি তব দ্বারে ভক্তি-শূন্য প্রাণে।
করুণাময় প্রভু! কর হে পূর্ণ দানে।।
শক্‌তি বিহীন করে ধরেছি নিশান তব
বহিতে পারি যেন দিও সে-গৌরব,
দিবাকর কর সম ছড়ায়ে অভিনব
অস্তে যাই যেন জীবন-বিহানে।।
সাঁঝের আকাশে পূর্ণিমা চাঁদ সম
রাঙায়ো আঁধার হৃদি-প্রেমের জোছনা বানে।।

বাণী

এসো মাধব এসে পিও মধু।
এসো মাধবী লতার কুঞ্জ বিতানে (মধু) মাধবী রাতে এসো বঁধু।।
এসো মৃদুল মধুর পা ফেলে
এসো ঝুমুর ঝুমুর ঘুমুর বাজায়ে শ্রবণে অমিয়া মধু ঢেলে,
এসো বাজায়ে বাঁশরি যে সুর-লহরী শুনে কুল ভোলে ব্রজবধূ।।
এসো নিবিড় নীরদ বরণ শ্যাম
তমাল কাননে কাজল বুলায়ে দুলায়ে চাঁচর চিকুর দাম,
এসো বামে হেলায়ে শিখী-পাখা ত্রিভঙ্গ ঠামে এসো বঁধু।।
এসো নারায়ণ এসো অবতার
পার্থসারথি বেশে এসো পাপ কুরুক্ষেত্রে আরবার,
তুমি মহাভারতের ভাগ্যবিধাতা গীতি উদ্গাতা নহ শুধু।।

বাণী

এখনো মেটেনি আশা এখনো মেটেনি সাধ।
এখনো নয়ন মানে নাই তার চাহনির অপরাধ।।
	আজো ঢেউগুলি নীল সায়রের কোলে
	জল-তরঙ্গে ঝঙ্কার তোলে
পিয়াসি চাতক আজো চেয়ে ফেরে বরষার পরসাদ।।
কবে ফুটছিল রূপের কুসুম বনানীর লতা-গাছে,
আজো গৌরী-চাঁপার রঙটুকু তার মরমে লাগিয়া আছে।
	চ'লে গেছে চাঁদ আলো আবছায়
	দাগ ফেলে হিয়া-আয়নার গায়
থেমেছে কানুর বাঁশরি থামেনি যমুনার কলনাদ।।
ঢাল পিয়ালে লাল সিরাজী নিত্য দোদুল তালে তালে
আঁকবো বুকে প্রীতির ব্যথা রঙ্গিন নেশায় রঙ্গিন জালে।।
মত্ত হবো চিত্ত হারা বেদনা ভরা বদমেজাজি
করলে পাগল ব্যর্থ আশায় করলে প্রেমরে দাগাবাজি।।
রঙ্গিন বঁধু তুমি শুধু, তুমি শুধু সত্যি হবে
রঙ্গিন নেশায় রঙ্গিন পথে তুমি শুধু সাথী হবে।।
শুল্ক তালু কণ্ঠ আমার দে রে আমার রুগ্ন গালে
দে রে সাকি দে রে ঢেলে নিত্য দোদুল তালে তালে।।

বাণী

এসো প্রিয়তম এসো প্রাণে।
এসো সুদূর মোর অভিমানে।।
এসো কম্পিত হৃদয়ের ছন্দে
এসো বিরহের বিধুর আনন্দে,
এসো বেদনার চন্দন-গন্ধে —
		মম পূজার বন্দনা-গানে।।
সুখ-স্বপন হয়ে এসো ঘুমে
এসো হৃদয়েশ, মালার কুসুমে,
এসো তপনের রূপে আঁখি চু’মে —
		ঘুম ভাঙায়ো নিশি-অবসানে।।
এসো মাধবী-কাঁকন হয়ে হাতে
এসো কাজল হয়ে আঁখি-পাতে,
এসো পূর্ণিমা চাঁদ হয়ে রাতে —
		এসো ফুল-চোর মালতী-বিতানে।।

নাটক : ‘অর্জুন বিজয়’ (নাট্যকার : দেবেন্দ্রনাথ রাহা)

বাণী

এসো নূপুর বাজাইয়া যমুনা নাচাইয়া
			কৃষ্ণ কানাইয়া হরি।
মাখি’গোখুর ধূলিরেণু গোঠে চরাইয়া ধেনু
			বাজায়ে বাঁশের বাঁশরি।।
গোপী চন্দন চর্চিত অঙ্গে
প্রাণ মাতাইয়া প্রেম তরঙ্গে
বামে হেলায়ে ময়ুর পাখা দুলায়ে তমাল শাখা
			দীপবনে, দাঁড়ায়ে ত্রিভঙ্গে।
এসো লয়ে সেই শ্যাম-শোভা ব্রজ বধু মনোলোভা
			সেই পীত বসন পরি’।।
এসো গগনে ফেলি নীল ছায়া
আনো পিপাসিত চোখে মেঘ মায়া।
এসো মাধব মাধবী তলে
এসো বনমালী বন-মালা গলে
এসো ভক্তিতে প্রেমে আঁখি জলে
এসো তিলক লাঞ্ছিত সুর নর বাঞ্ছিত
			বামে লয়ে রাই কিশোরী।।

বাণী

এলোঐ বনান্তে পাগল বসন্ত
বনে বনে মনে মনে রং সে ছড়ায় রেচঞ্চল তরুণ দুরন্ত।।
		বাঁশীতে বাজায় সে বিধুর
		পরজ বসন্তের সুর
পান্ডু কপোলে জাগে রঙ নব অনুরাগে রাঙা হ’ল ধূসর দিগন্ত।।
		কিশলয়ে পর্ণে অশান্ত
		ওড়ে তার অঞ্চল প্রান্ত
পলাশ কলিতে তার ফুল ধনু লঘু ভার ফুলে ফুলে হাসি অফুরন্ত।।
		এলোমেলো দখিনা মলয় রে
		প্রলাপ বকিছে বনময় রে
অকারণ মন-মাঝে বিরহের বেণু বাজে জেগে ওঠে বেদনা ঘুমন্ত।।