এসো ফিরে প্রিয়তম এসো ফিরে
বাণী
এসো ফিরে’ প্রিয়তম, এসো ফিরে’। আঁখির আলোক হায় জীবনের সন্ধ্যায় ডুবে যায় নিরাশা-তিমিরে।। আসে যে-পথে প্রভাতী আলোর ধারা যে-পথে আসে চাঁদ, রাতের তারা, নিতি সেই পথে চাই যদি তব দেখা পাই — শুধাই তোমার কথা দক্ষিণ সমীরে।। খুঁজে’ ফিরি ঝরা ফুলে নদীর স্রোতে ঘর-ছাড়া পথিক ধায় যে-পথে, তব পথ, হে সুদূর কত দূর, কত দূর — কোথা পাব তব দেখা (কোন্) কালের তীরে।।
একদা সব সুরাসুরের খেয়াল হল
বাণী
একদা সব সুরাসুরের খেয়াল হল দাদা। সমুদ্রেরে ঘেঁটে ঘুঁটে করতে হবে দধিকাদা।। দেখেছ তো গয়লানিরা যে-ভাবে দুই মথে। (তেমনি) সাগরকে সব ঘুঁটেছিলেন মন্দার পর্বতে।। (অর্থাৎ) মন্দার গিরি হয়েছিল দই ঘুঁটবার কাঠি।। আর কূর্ম হলেন সমুদ্ররূপ দই রাখবার বাটি।। কাঠি এলো, বাটি এলো, দড়া কোথায় পান। (সবে) বাসুকীর শ্রী-লেজুড় ধ’রে মারেন হেঁচ্কা টান।। বাসুকী কয় ল্যাজ ছাড়ো বাপ গ্যাজ উঠল মুখে। বাসুকীকে করল দড়া দেবতারা সব রুখে।। ল্যাজ ধরল দেবতা, অসুর দানব ধরে মুড়ো। সাগর বলে আস্তে বাবা একি প্রলয় হুড়ো।। যা আছে মোর বের করছি — ঘাঁটিস্নে আর পেট।। উচ্চৈঃশ্রবা, চন্দ্র, লক্ষ্মী — সব দিচ্ছি ভেট।। (ক্রমে) অমৃত যেই উঠল অমনি লাগলো গুঁতোগুঁতি। দৈত্যেরা সব কোপ্নি আঁটে দেবতা কষেন ধুতি।। মাঝে থেকে শ্রীবিষ্ণু মোহিনী রূপ ধ’রে। ছোঁ মেরে সেই সুধার ভাণ্ড নিয়ে পড়লেন স’রে।। অমৃত খান দেবতারা সব, অসুর মাটি চাটে। (যেমন) দোহন শেষে দুগ্ধ খোঁজে বাছুর শুকনো বাঁটে।। (ক্রম) ঘটর ঘটর ঘোঁটার ঠেলায় উঠলো হলাহল। ত্রাহি ত্রাহি বলে ত্রিলোক, করে কোলাহল।। বিষের জ্বালায় সৃষ্টি বুঝি পটল তোলে ওই। সিদ্ধিখোর শ্রীপিশাচপতি কয় ডেকে মাভৈঃ।। ছুটে এসে পাগ্লা ভাঙোড় এক সুমুদ্দুর বিষ। ঢক ঢকিয়ে ফেললে গিলে গা করে নিস্পিস্।। বলদে যে বেড়ায় চ’ড়ে ছাই পাঁশ গায়ে মাখে। তাকে ছাড়া চতুর দেবতা বিষ দেবে বল কাকে।। ফুলের মধ্যে ধুতরো নিলেন মশান যাহার ঘর। (পোড়া) কপালে তার আগুন জ্বলে — জয় ন্যাংটেশ্বর।।
নাটক : ‘সতী’ (মন্মথ রায়-রচিত)
এলো এলো শবেরাত তোরা জ্বাল্ রে বাতি
বাণী
এলো এলো শবেরাত তোরা জ্বাল্ রে বাতি। হোক রওশন মুসলিম-জাহানের অন্ধকার রাতি।। আজ ফিরদৌসের হুর-পরীরা আলোতে রাঙে চাঁদ সেতারার প্রদীপ ভাসায় আস্মানি গাঙে, ফেরেশ্তা সব হয়েছে আজ মোদের সাথি।। আজ জ্বাল্রে বাতি প্রিয়জনের আঁধার গোরে আজ বরষ পরে লুকিয়ে তারা এসেছে ঘরে, রাখ্ তাদের তরে অশ্রু-ভেজা হৃদয় পাতি।।
এসো আনন্দিতা ত্রিলোক-বন্দিতা
বাণী
এসো আনন্দিতা ত্রিলোক-বন্দিতা কর দীপান্বিতা আঁধার অবনি মা। ব্যাপিয়া চরাচর শারদ অম্বর ছড়াও অভয় হাসির লাবনি মা।। সারাটি বরষ নিখিল ব্যথিত চাহিয়া আছে মা তব আসা-পথ, ধরার সন্তানে ধর তব কোলে ভুলাও দুঃখ-শোক চির-করুণাময়ী মা।। অটুট স্বাস্থ্য দীর্ঘ পরমায়ু দাও আরো আলো নির্মল বায়ু, দশ হাতে তব আনো মা কল্যাণ পীড়িত-চিত গাহে অকাল জাগরণী মা।।
এসো নূপুর বাজাইয়া যমুনা নাচাইয়া
বাণী
এসো নূপুর বাজাইয়া যমুনা নাচাইয়া কৃষ্ণ কানাইয়া হরি। মাখি’গোখুর ধূলিরেণু গোঠে চরাইয়া ধেনু বাজায়ে বাঁশের বাঁশরি।। গোপী চন্দন চর্চিত অঙ্গে প্রাণ মাতাইয়া প্রেম তরঙ্গে বামে হেলায়ে ময়ুর পাখা দুলায়ে তমাল শাখা দীপবনে, দাঁড়ায়ে ত্রিভঙ্গে। এসো লয়ে সেই শ্যাম-শোভা ব্রজ বধু মনোলোভা সেই পীত বসন পরি’।। এসো গগনে ফেলি নীল ছায়া আনো পিপাসিত চোখে মেঘ মায়া। এসো মাধব মাধবী তলে এসো বনমালী বন-মালা গলে এসো ভক্তিতে প্রেমে আঁখি জলে এসো তিলক লাঞ্ছিত সুর নর বাঞ্ছিত বামে লয়ে রাই কিশোরী।।