এসো এসো রস-লোক বিহারী
বাণী
এসো এসো রস-লোক বিহারী এসো মধুকর-দল। এসো নভোচারী — স্বপন-কুমার এসো ধ্যান-নিরমল।। এসো হে মরাল কমল-বিলাসী, বুলবুল পিক সুর-লোক-বাসী, এসো হে স্রষ্টা এসো অ-বিনাশী এসো জ্ঞান-প্রোজ্জ্বল।। দীওয়ানা প্রেমিক এসো মুসাফির — ধূলি-ম্লান তবু উন্নত শির, আমরা-অমৃত-জয়ী এসো বীর আনন্দ বিহ্বল।। মাতাল মানব করি’ মাতামাতি দশ হাতে যবে লুটে যশ খ্যাতি, তোমরা সৃজিলে নব দেশ জাতি অগোচর অচপল।। খেল চির-ভোলা শত ব্যথা স’য়ে সংঘাত ওঠে সঙ্গীত হ’য়ে, শত বেদনার শতদল ল’য়ে লীলা তব অবিরল।। ভুলি’ অবহেলা অভাব বিষাদ ধরণীতে আনো স্বর্গের স্বাদ, লভি’ তোমাদের পুণ্য প্রসাদ পেনু তীর্থের ফল।।
এবারের পূজা মাগো দশভূজা
বাণী
মা-মা-মা-মা-মা-মাগো এবারের পূজা মাগো দশভূজা বড় দুর্গতিময়। পড়েছিস এ.বি.সি.ডি? বুঝিস ব্ল্যাক আউট কারে কয়? ব্ল্যাক আউট মানে যত কালো ছিল বাহির হয়েছে মাগো যত আলো ছিল যত ভালো ছিল, সকলেরে বলে ভাগো। ডাইনে বাঁ ধারে ভীষণ আঁধারে হাঁটু কাঁপে আর হাঁটি আমড়ার মত হয়ে আছি মাগো চামড়া এবং আঁটি। নন্দী ভৃঙ্গী সিঙ্গি যাইলে তাহারাও ভয় পাবে তাদের দিব্য দৃষ্টি লয়েও মাগো আঁধারে হোঁচট খাবে। বলি বিগ্রহ তোর কে দেখিতে যাবে মা কুগ্রহের ফেরে বিড়ি খেয়ে ফেরে গুন্ডারা যদি দেয় মাগো ভুঁড়ি ফেড়ে। মা তুই বর দেওয়ার আগেই বর্বরেরা এসে ঠেসে ধরে নিয়ে যাবে চিত্রগুপ্তের দেশে। চোঁয়া ঢেকুর ওঠে মা মেকুর ডাকিলে কেঁদে উঠি ওঙা ওঙা; ঢেঁকির আওয়াজ শুনলে মাগো ভয়ে খাড়া হয়ে ওঠে রোঁয়া। সত্য পথে মা চলিতে পারি না পথে কাদা রাখে ফেলে উচিত কথা মাগো বলিতে পারি না চিৎ করে দেয় ফেলে। এ চিতে শক্তি দে মা চিৎ করবো ভয়কে বলবো এবার তোরে খাব দে মা মাগো মা।।
নাট্য-গ্রন্থঃ ‘ব্লাক আউট’
ব্ল্যাক আউট নাট্যগ্রন্থের এই পাঠকে, আদি রেকর্ডের (এন. ২৭২০৬) পাঠের তুলনায়, স্বতন্ত্র গান হিসাবে বিবেচনা করা যায়।
[অগ্রন্থিত নজরুল, সংকলন ও সম্পাদনাঃ ব্রহ্মমোহন ঠাকুর, ডি.এম. লাইব্রেরি, কলকাতা, ২০০৩]
এই শিকল পরা ছল
বাণী
এই শিকল পরা ছল মোদের এ শিকল-পরা ছল। এই শিকল পরেই শিকল তোদের করব রে বিকল।। তোদের বন্ধ কারায় আসা মোদের বন্দী হতে নয়, ওরে ক্ষয় করতে আসা মোদের সবার বাঁধন–ভয়। এই বাঁধন প’রেই বাঁধন–ভয়কে কর্ব মোরা জয়, এই শিকল– বাঁধা পা নয় এ শিকল ভাঙা কল।। তোমার বন্ধ ঘরের বন্ধনীতে কর্ছ বিশ্ব গ্রাস, আর ভয় দেখিয়েই ক’র্বে ভাবছ বিধির শক্তি হ্রাস সেই ভয় দেখানো ভূতের মোরা ক’র্বো সর্বনাশ, এবার আন্বো মাভৈঃ বিজয়–মন্ত্র বল–হীনের বল।। তোমরা ভয় দেখিয়ে কর্ছ শাসন জয় দেখিয়ে নয়; সেই ভয়ের টুঁটি ধর্ব টিপে কর্ব তারে লয়। মোরা আপনি ম’রে মরার দেশে আন্ব বরাভয়, প’রে ফাঁসি আন্ব হাসি মৃত্যু–জয়ের ফল।। ওরে ক্রন্দন নয় বন্ধন এই শিকল–ঝঞ্ঝনা, এ যে মুক্তি–পথের অগ্রদূতের চরণ–বন্দনা! এই লাঞ্ছিতেরাই অত্যাচারকে হান্ছে লাঞ্ছনা, মোদের অশ্রু দিয়েই জ্ব’লবে দেশে আবার বজ্রানল।।
এলে তুমি কে কে ওগো
বাণী
পুরুষ : এলে তুমি কে, কে ওগো তরুণা অরুণা করুণা সল চোখে। স্ত্রী : আমি তব মনের বনের পথে ঝিরি ঝিরি গিরি-নির্ঝরিণী আমি যৌবন-উন্মনা হরিণী মানসলোকে।। পুরুষ : ভেসে যাওয়া মেঘের সজল ছায়া ক্ষণিক মায়া তুমি প্রিয়া স্বপনে আসি' বাজায়ে বাঁশি স্বপনে যাও মিশাইয়া। স্ত্রী : বাহুর বাঁধনে দিই না ধরা — আমি স্বপন-স্বয়ম্বরা সঙ্গীতে জাগাই ইঙ্গিতে ফোটাই তোমার প্রেমের যুঁই-কোরকে। পুরুষ : আধেক প্রকাশ স্ত্রী : আধেক গোপন পুরুষ : আধো জাগরণ স্ত্রী : আধেক স্বপন উভয়ে : খেলিব খেলা ছায়া-আলোকে।।