বাণী

এরি লাগি তপস্যা কি করে আঁধার রাতি।।
সই দেখলো চেয়ে রূপ-সায়রে জ্বলে এ কোন্ বাতি
লক্ষ চাঁদের জোছনা হেথা কে রেখেছে পাতি’?

নাটক : ‘মধুমালা’ (স্বপনপরীর গান)

বাণী

	এক্‌লা ভাসাই গানের কমল সুরের স্রোতে।
	খেলার ছলে ওপার পানে এপার হ’তে।।
	আসবে গো এই গাঙের কূলে হয়ত ভুলে আমার প্রিয়া
	খোঁপায় নেবে আমার গানের কমল তুলে তামার প্রিয়া
	খুঁজতে আমায় আসবে সুরের নদী-পথে।।
	নাম-হারা কোন্ গাঁয়ে থাকে অচেনা সে,
তারে	না-ই জানিলাম, গান ভেসে যাক্ তাহার আশে।
	নদীর জলে আল্‌তা-রাঙা পা ডুবায়ে, রয় সে মেয়ে
	গানের কমল লাগে গো তা’র কমল-পায়ে, উজান বেয়ে,
	সেদিন অমর হয় মোর গান, যায় অমরায় পুষ্প-রথে।।

বাণী

এত কথা কি গো কহিতে জানে
		চঞ্চল ঐ আঁখি
নীরব ভাষায় কি যে ক'য়ে যায়
	ও সে মনের বনের পাখি।।
বুঝিতে পারি না ঐ আঁখির ভাষা
জলে ডুবে তবু মেটে না পিপাসা,
আদর সোহাগ প্রেম ভালোবাসা
	অভিমান মাখামাখি।।
মুদিত কমলে ভ্রমরেরি প্রায়
বন্দী হইয়া কাঁদিয়া বেড়ায়
চাহিয়া চাহিয়া মিনতি জানায়
	সুনীল আকাশে ডাকি'।।

বাণী

এ কোথায় আসিলে হায়, তৃষিত ভিখারি।
হায়, পথ-ভোলা পথিক, হায়, মৃগ মরুচারী।।
	মোর ব্যথায় চরণ ফেলে
	চির-দেবতা কি এলে,
হায়, শুকায়েছে যবে মোর নয়নে নয়ন-বারি।।
তোমার আসার পথে প্রিয় ছিলাম যবে পরান পাতি’,
সেদিন যদি আসিতে নাথ হইতে ব্যথার ব্যথী।
ধোওয়ায়ে নয়ন-জলে পা মুছাতাম আকুল কেশে
আজ কেন দিন-শেষে এলে নাথ মলিন বেশে!
হায়, বুকে ল’য়ে ব্যথা আসিলে ব্যথা-হারী।।
স্মৃতির যে শুকানো মালা যতনে রেখেছি তুলি’
ছুঁয়ে সে হার ঝরায়ো না ম্লান তার কুসুমগুলি,
হায়, জ্বলুক বুকে চিতা, তা’য় ঢেলো না আর বারি।।

বাণী

এলো ফুলের মরশুম শরাব ঢালো সাকি
বকুল শাখে কোকিল ওঠে ডাকি’।।
গেয়ে ওঠে বুলবুল আঙ্গুর-বাগে
নীল আঁখি লাল হলো রাঙ্-অনুরাগে
আজি ফুল-বাসরে শিরাজির জল্‌সা
		বরবাদ্‌ হবে না-কি।।
চাঁপার গেলাস ভরি’ ভোমরা মধু পিয়ে
মহুয়া ফুলের বাসে আঁখি আসে ঝিমিয়ে।
পাপিয়া পিয়া পিয়া ডাকে বন-মাঝে
গোলাপ-কপোল রাঙে গোলাপী লাজে
হৃদয়-ব্যথার সুধা আছে তব কাছে
		রেখো না তারে ঢাকি’।।

বাণী

এসো হে সজল শ্যাম-ঘন দেয়া 
বেণু-কুঞ্জ-ছায়ায় এসো তাল-তমাল বনে 
এসো শ্যামল ফুটাইয়া যূথী কুন্দ নীপ কেয়া।। 
বারিধারে এসো চারিধার ভাসায়ে 
বিদ্যুৎ ইঙ্গিতে দশদিক হাসায়ে 
বিরহী মনে জ্বালায়ে আশার আলেয়া 
ঘন দেয়া, মোহনীয়া, শ্যাম-পিয়া।। 
শ্রাবণ বরিষণ হরষণ ঘনায়ে 
এসো নব ঘন শ্যাম নূপুর শুনায়ে। 
হিজল তমাল ডালে ঝুলন ঝুলায়ে 
তাপিতা ধরার চোখে অঞ্জন বুলায়ে 
যমুনা স্রোতে ভাসায়ে প্রেমের খেয়া 
ঘন দেয়া, মোহনীয়া, শ্যাম-পিয়া।।