এলো এলো রে ঐ সুদূর বন্ধু এলো
বাণী
এলো এলো রে ঐ সুদূর বন্ধু এলো। এলো পথ চাওয়া এলো হারিয়ে পাওয়া মনের আঁধার দূরে গেল, ঐ বন্ধু এলো।। এলো চঞ্চল বন্যার ঢল মন্থর স্রোত-নীড়ে, এলো শ্যামল মেঘ-মায়া তৃষিত গগন ঘিরে; তার পলাতকা মৃগে বন ফিরে পেল।। এলো পবনে বিহ্বল চঞ্চলতা যেন শান্ত ভবনে এলো সারা ভুবনের কল-কথা। অলি গুঞ্জরি’ কয় জাগো বনবীথি; ডাকে দখিনা মলয় — এলো এলো অতিথি; বাজে তোরণ দ্বারে বাঁশরি গীতি, দুখ নিশি পোহাল, আঁখি মেল।।
নাটিকা: ‘বাসন্তিকা’
এসো মা দশভুজা
বাণী
এসো মা দশভুজা দশহাতে কল্যাণ আন দশভুজা মৃত্যুঞ্জয় ঘরনী! মৃতজনে অমৃত দান। নিরাশ প্রাণে দাও আশা মূকজনে দাও ভাষা আঁধার মহিষাসুর বুকে আলোর ত্রিশূল হান॥ দেও জয় বরাভয়, শক্তি, তেজ, প্রেম, প্রীতি দনুজদলনী! শাপ মুক্ত কর ক্ষিতি, এলে যদি আর বার মাগো ভক্তের হৃদি মাঝে জাগো দুঃখ শোক আর দিও না গো তারিণী সন্তানে ত্রাণ॥
এসো মুরলীধারী বৃন্দাবন-চারী
বাণী
এসো মুরলীধারী বৃন্দাবন-চারী গোপাল গিরিধারী শ্যাম। তেমনি যমুনা বিগলিত-করুণা কুলু কুলু কুলু স্বরে ডাকে অবিরাম।। কোথায় গোকুল-বিহারী শ্রীকৃষ্ণ চাহিয়া পথ পানে ধরণী সতৃষ্ণ, ডাকে মা যশোদায় নীলমণি আয় আয় ডেকে যায় নন্দ শ্রীদাম।। ডাকে প্রেম-সাধিকা আজো শত রাধিকা গোপ-কোঙারি, এসো নওল-কিশোর কুল-লাজ-মান-চোর ব্রজ-বিহারী। পরি’ সেই পীতধড়া, সেই বাঁকা শিখী চূড়া বাজায়ে বেণূ আরবার এসো গোঠে, খেল সেই ছায়া-বটে চরাও ধেনু কদম তমাল-ছায়ে এসো নূপুর পায়ে ললিত বঙ্কিম ঠাম।।
এ কি অপরূপ রূপে মা তোমায়
বাণী
এ কি অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী-জননী। ফুলে ও ফসলে কাদা মাটি জলে ঝলমল করে লাবনি॥ রৌদ্রতপ্ত বৈশাখে তুমি চাতকের সাথে চাহ জল, আম কাঁঠালের মধুর গন্ধে জ্যৈষ্ঠে মাতাও তরুতল। ঝঞ্ঝার সাথে প্রান্তরে মাঠে কভু খেল ল’য়ে অশনি॥ কেতকী-কদম-যূথিকা কুসুমে বর্ষায় গাঁথ মালিকা, পথে অবিরল ছিটাইয়া জল খেল চঞ্চলা বালিকা। তড়াগে পুকুরে থই থই করে শ্যামল শোভার নবনী॥ শাপলা শালুক সাজাইয়া সাজি শরতে শিশির নাহিয়া, শিউলি-ছোপানো শাড়ি পরে ফের আগামনী-গীত গাহিয়া। অঘ্রাণে মা গো আমন ধানের সুঘ্রাণে ভরে অবনি॥ শীতের শূন্য মাঠে তুমি ফের উদাসী বাউল সাথে মা, ভাটিয়ালি গাও মাঝিদের সাথে গো, কীর্তন শোনো রাতে মা। ফাল্গুনে রাঙা ফুলের আবিরে রাঙাও নিখিল ধরণী॥
এখনো ওঠেনি চাঁদ এখনো ফোটেনি তারা
বাণী
এখনো ওঠেনি চাঁদ এখনো ফোটেনি তারা এখনো দিনের কাজ হয়নি যে মোর সারা — হে পথিক যাও ফিরে।। এখনো বাঁধিনি বেণী, তুলিনি এখনো ফুল জ্বালি নাই মণিদীপ মম মন–মন্দিরে — হে পথিক যাও ফিরে।। পল্লব–গুণ্ঠনে নিশি–গন্ধার কলি চাহিতে পারে না লাজে দিবস যায়নি বলি’। এখনো ওঠেনি ঢেউ থির সারসির নীরে — হে পথিক যাও ফিরে।। যবে ঝিমাইবে চাঁদ ঘুমে তখন তোমার লাগি’ র’ব একা পথ চেয়ে বাতায়ন–পাশে জাগি’ কবরীর মালা খুলে ফেলে দেব ধীরে ধীরে — হে পথিক যাও ফিরে।।