বসন্ত মুখর আজি
বাণী
বসন্ত মুখর আজি। দক্ষিণ সমীরণে মর্মর গুঞ্জনে বনে বনে বিহ্বল বাণী ওঠে বাজি’।। অকারণ ভাষা তার ঝর ঝর ঝরে মুহু মুহু কুহু কুহু পিয়া পিয়া স্বরে, পলাশ বকুলে অশোক শিমুলে — সাজানো তাহার কল–কথার সাজি।। দোয়েল মধুপ বন–কপোত কূজনে, ঘুম ভেঙে দেয় ভোরে বাসর শয়নে। মৌনী আকাশ সেই বাণী–বিলাসে অস্ত চাঁদের মুখে মৃদু মৃদু হাসে, বিরহ–শীর্ণা গিরি–ঝর্ণার তীরে — পাহাড়ি বেণু হাতে ফেরে সুর ভাঁজি’।।
বাজাও প্রভু বাজাও ঘন বাজাও
বাণী
বাজাও প্রভু বাজাও ঘন বাজাও ভীম বজ্র-বিষাণে দুর্জয় মহা-আহ্বান তব। বাজাও! অগ্নি তূর্য কাঁপাক সূর্য বাজুক রুদ্রতালে ভৈরব।। দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও! নট-মল্লার দীপক-রাগে জ্বলুক তড়িৎ-বহ্নি আগে, ভেরির রন্ধ্রে মেঘ-মন্দ্রে জাগাও বাণী জাগ্রত নব।। দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও! দাসত্বের এ ঘৃণ্য তৃপ্তি ভিক্ষুকের এ লজ্জা-বৃত্তি, বিনাশ জাতির দারুণ এ লাজ, দাও তেজ দাও মুক্তি-গরব।। দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও! খুন দাও নিশ্চল এ হস্তে শক্তি-বজ্র দাও নিরস্ত্রে, শীর্ষ তুলিয়া বিশ্বে মোদেরও দাঁড়াবার পুন দাও গৌরব।। দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও! ঘুচাতে ভীরুর নীচতা দৈন্য প্রের হে তোমার ন্যায়ের সৈন্য, শৃঙ্খলিতের টুটাতে বাঁধন আন আঘাত প্রচন্ড আহব।। দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও! নিবীর্য্য এ তেজঃসূর্য্যে, দীপ্ত কর হে বহ্নি-বীর্য্যে, শৌর্য, ধৈর্য্য মহাপ্রাণ দাও, দাও স্বাধীনতা সত্য বিভব।।
বন-মল্লিকা ফুটিবে যখন গিরি-ঝর্নার তীরে
বাণী
বন-মল্লিকা ফুটিবে যখন গিরি-ঝর্নার তীরে। সেই চৈতালি গোধূলি-লগনে এসো তুমি ধীরে ধীরে — গিরি-ঝর্নার তীরে।। বনের কিশোর এসো সেথা হেসে হেসে সাজায়ো আমায় বন-লক্ষ্মীর বেশে, ধোওয়াব তোমার চরণ-কমল বিরহ-অশ্রু নীরে।। ঘনায়ে গহন সন্ধ্যার মায়া আসিও সোনার রথে, অতি সুকোমল শিঁরিশ, কুসুম বিছায়ে রাখিব পথে। মালতী-কুঞ্জে ডাকিবে পাপিয়া পাখি তুমি এসে বেঁধো আলোক-লতার রাখি, ভ্রমরের সম পিপাসিত মোর আঁখি কাঁদিবে তোমারে ঘিরে।।
বাঁশি বাজাবে কবে আবার বাঁশরিওয়ালা
বাণী
বাঁশি বাজাবে কবে আবার বাঁশরিওয়ালা তব পথ চাহি ভারত-যশোদা কাঁদিছে নিরালা।। কৃষ্ণা-তিথির তিমির হারী; শ্রীকৃষ্ণ এসো, এসো, মুরারি ঘরে ঘরে আজ পুতনা ভীতি হানিছে কালা।। কংস-কারার ভাঙো ভাঙো দ্বার দেবকীর বুকের পাষাণ ভঅর নামাও নামাও যুগ যুগ সম্ভব পুর্ণাবতার! নিরানন্দ এ দেশ হাসুক আবার, আনন্দে হে নন্দলালা।।
বলি মাথা খাস্ রাধে ওলো কথা শোন্
বাণী
আবৃত্তি: কুমারী রাধিকা ঘোষের প্রতি শ্রীমৎ ক্যাগ বিমাতার উক্তি: বলি মাথা খাস্ রাধে ওলো কথা শোন্। বলি কুল আর তুই খাস্নে (রাধে কুল আর তুই খাস্নে) ওলো গোকুল ঘোষের কন্যা যে তুই কুল গাছ পানে চাস্নে (পরের কুল গাছ পানে চাস্নে) ও কুল গাছে বড় কাঁটা গায়ে অথবা পায়ে বিঁধিলে দায় হবে পথ হাঁটা (রাধে গায়ে অথবা পায়ে বিঁধিলে দায় হবে পথ হাঁটা) কলঙ্ক দিলি (কলঙ্ক দিলি) তুই যারি তারি কুল চুরি করে খেলি গোকুলের কুলে কলঙ্ক দিলি (কুলে কলঙ্ক দিলি) রাধে গো। ওলো ভাবিস এখনও বয়েস হয়নি কারণ বেড়াস ফ্রক পরে। ওই কুল গাছ আগলায় ভীমরুল চাক (ওই কুল গাছ আগলায় ভীমরুল চাক) তোর কুল খাওয়া বের হবে ফুলে হবি ঢাক (ফুল হবি জয় ঢাক)। বলি পড়তে নাকি কুল খেতে যাস রোজ রোজ ইস্কুলে (রাধে পড়তে নাকি কুল খেতে যাস রোজ রোজ ইস্কুলে) ওই কুলেরি কাঁটায় দুকুল ছিঁড়িস বেণী আঁটিস খুলে (রাধে বেণী আঁটিস খুলে) খাস তুই টোপা কুল খাস নারকুলে কুল (খাস তুই টোপা কুল খাস নারকুলে কুল) অত কুল খেয়ে রাতে পেট ডাকে কুল কুল কুল কুল। ওলো কুলোতে নারি (কুলোতে নারি) ওলো তোর কুল দিয়ে আর কুলোতে নারি (দিয়ে কুলোতে নারি) ছিল কুলুঙ্গীতে কুলের আচার তাও খেয়েছিল কুল খোয়ারী (কুলুঙ্গীর ও কুলের আচার তাও খেয়েছিস কুল খোয়ারী)। ওই কুল গাছ ধরে (সখি গো রাধে গো) (বহুত আচ্ছা দাদা বহুত আচ্ছা বহুত আচ্ছা) ওই কুল গাছ ধরি কোলাকুলি করি ফ্যাসাদ বাধাবি শেষে আর কুল ত্যাগিনী হবে কি নাশিনী কুল গাছ ভালোবেসে (আর কুল ত্যাগিনী হবে কি নাশিনী কুল গাছ ভালোবেসে)॥