বাণী

		বল রাঙা হংসদূতি তা’র বারতা।
		দাও তা’র বিরহ-লিপি, বল সে কোথা।।
		কেমনে কাটে তা’র অলস বেলা
		আজো কি গাঙের ধারে কাঁদে একেলা,
		দু’জনের আশা-তরী ডুবিল যথা।।
		দীপ জ্বালেনি কি কেউ তাহার ঘরে,
		ভাঙা ঘর বেঁধেছে কি নূতন ক’রে।
		দেখা হ’লে তা’রে কহিও নিরালায়
		আমি মরিয়াছি — মোর প্রেম মরেনি, হায়!
(মোর)	অন্তরে সে আজো অন্তর-দেবতা।।

বাণী

বঁধু		মিটিলনা সাধ ভালোবাসিয়া তোমায়।
তাই		আবার বাসিতে ভালো আসিব ধরায়।।
		আবার বিরহে তব কাঁদিব
		আবার প্রণয়–ডোরে বাঁধিব,
শুধু		নিমেষেরি তরে আঁখি দুটি ভ’রে —
		তোমারে হেরিয়া ঝ’রে যাব অবেলায়।।
যে		গোধূলি–লগ্নে নববধূ হয় নারী,
সেই		গোধূলি–লগ্নে বঁধু দিল আমারে গেরুয়া শাড়ি।
বঁধু		আমার বিরহ তব গানে
		‌‌সুর হয়ে কাঁদে প্রাণে প্রাণে,
		আমি নিজে নাহি ধরা দিয়ে —
		সকলের প্রেম নিয়ে দিনু তব পায়।।

বাণী

(সখি) ব'লো বঁধুয়ারে নিরজনে
দেখা হ'লে রাতে ফুল-বনে।।
কে করে ফুল চুরি জেনেছে ফুলমালী
কে দেয় গহীন রাতে ফুলের কুলে কালি
জেনেছে ফুলমালী গোপনে।।
ও-পথে চোর-কাঁটা, সখি, তায় বলে দিও
বেঁধে না বেঁধে না লো যেন তার উত্তরীয়।
এ বনফুল লাগি' না আসে কাঁটা' দলি'
আপনি যাব চলি' বঁধুয়ার কুঞ্জ-গলি
বিনা মূলে বিকাইব ও-চরণে।।

বাণী

		বন্ধু, আজো মনে রে পড়ে আম কুড়ানো খেলা।
		আম কুড়াইবার যাইতাম দুইজন নিশি-ভোরের বেলা।।
		জোষ্ঠি মাসের গুমোঁট রে বন্ধু আস্‌ত নাকো নিদ
					রাত্রে আস্‌ত নাকো নিদ্
		আম-তলায় এক চোর আইস্যা কাঁট্ত প্রাণে সিঁদ্
(আর)	নিদ্রা গেলে ফেল্‌ত সে চোর আঙিনাতে ঢেলা।।
		আমরা দুইজন আম কুড়াইতাম, ডাক্‌ত কোকিল গাছে,
		ভোলো যদি — বিহান বেলার সূয্যি সাক্ষী আছে,
(তুমি)	পায়ের কাছে আম ফেইল্যা গায়ে দিতে ঠেলা।।
		আমার বুকের আঁচল থাইক্যা কাইড়া নিতে আম,
		বন্ধু, আজও পাই নাই দাসী সেই না আমের দাম,
(আজ)	দাম চাইবার গিয়া দেখি তুমি দিছ মেলা।।
		নিশি জাইগ্যা বইস্যা আছি, জোষ্ঠি মাসের ঝড়ে
		সেই না গাছের তলায় বন্ধু এখনো আম পড়ে
		তুমি কোথায় আমি কোথায় দুইজনে একেলা।।

বাণী

	বর্ণচোরা  ঠাকুর এলো রসের নদীয়ায়
	তোরা দেখবি যদি আয়
তারে	কেউ বলে শ্রীমতি রাধা কেউ বলে সে শ্যামরায়।।
	কেউ বলে তার সোনার অঙ্গে রাধা-কৃষ্ণ খেলেন রঙ্গে;
ওগো	কেউ বলে তায় গৌর-হরি কেউ অবতার বলে তায়।।
তার	ভক্ত তারে ষড়ভুজ শ্রী নারায়ণ বলে,
কেউ	দেখেছে শ্রীবাসের ঘরে কেউ বা নীলাচলে।
	দুই হাতে তার ধনুর্বাণ ঠিক যেন শ্রীরাম,
	দুই হাতে তার মোহন বাঁশি যেন রাধা-শ্যাম,
	আর দু'হাতে দণ্ড ঝুলি নবীন সন্ন্যাসীরই প্রায়।।

বাণী

বরষ গেল, আশ্বিন এলো, উমা এলো কই
শূন্য ঘরে কেমন করে পরান বেঁধে রই।।
‌	ও গিরিরাজ! সবার মেয়ে
	মায়ের কোলে এলো ধেয়ে,
আমারই ঘর রইল আঁধার, আমি কি মা নই?
নাই শাশুড়ি ননদ উমার, আদর করার নাই (কেহ)
মা অনাদরে কালী সেজে বেড়ায় নাকি তাই।
	মোর গৌরী বড় অভিমানী,
	সে বুঝবে না মার প্রাণ-পোড়ানী;
আনতে তারে সাধতে হবে তার যে স্বভাব ঐ।।