বাণী

বকুল বনের পাখি ডাকিয়া আর ভেঙ্গো না ঘুম
বকুল বাগানে মম, ফুরায়েছে ফুলের মরশুম॥
ওগো, প্রিয় মোর দূর বিদেশে কারে আর ডাকিছ পাখি
খুলিয়া পড়িছে হাতের, মলিন মালতী রাখি।
নিভিয়া গিয়াছে প্রদীপ রেখে গেছে স্মৃতির ধূম॥
ষোড়শী বাসন্তিকার রঙ দেহে মোর হয়েছে ম্লান।
খেলার সাথী পরদেশে, কারে দিই এ প্রীতির কুম্‌কুম্‌॥

বাণী

বনের হরিণ বনের হরিণ ওরে কপট চোর।
কেমন ক’রে করলি চুরি প্রিয়ার আঁখি মোর।।
	লায়লীরে তুই দেখ্‌লি কখন
	কর্‌লি বদল তোদের নয়ন,
ওরে বন হয়েছে স্বর্গ আমার হেরি নয়ন তোর।।

নাটকঃ ‘লায়লী-মজনু’

বাণী

বাঁশিতে সুর শুনিয়ে নূপুর রুনঝনিয়ে
	এলে আজি বাদলপ্রাতে।
কদম কেশর ঝুরে পুলকে তোমার পায়ে,
তমাল বিছায়ে ছায়া শ্যামল আদুল গায়ে।
অলকা পথ বাহি আসিলে মেঘের নায়ে,
নাচের তালে বাজিয়া ওঠে চুড়ি কাঁকন হাতে।।
ধানি রঙের শাড়ি ফিরোজা রঙ উত্তরীয়
প'রেছি এ শ্রাবণ দোলাতে দুলিতে প্রিয়।
কেশের কমল-কলি, বনমালী, তুলিয়া আদরে
চাঁচর চিকুরে আপনি পরিও
তোমার রূপের কাজল পরায়ো আমার আঁখি পাতে।।

বাণী

বিদেশিনী বিদেশিনী চিনি চিনি
ঐ চরণের নূপুর রিনিঝিনি॥
দীপ জেগে ওঠে পাথার জলে তোমার চরণ-ছন্দে,
নাচে গাঙচিল সিন্ধু-কপোত তোমারি সুরে আনন্দে।
মুকুতা কাঁদিছে হার্‌ হ’তে ওগো তোমার বেণীর বন্ধে।
মলয়ে শুনেছি তোমার বলয় চুড়ির রিনিঠিনি॥
সাগর-সলিল হয়েছে সুনীল তোমার তনুর বর্ণে,
তোমার আঁখির আলো ঝলমল দেবদারু তরু-পর্ণে।
অস্ত-তপন হয়েছে রঙিন তোমার হাসির স্বর্ণে
শঙ্খ-ধবল বেলাভূমে খেল সাগর-নটিনী॥

বাণী

বিঁধে গেল তীর তেরছ তার চাহনি।
বিঁধিল মরম-মূলে চাহিল যেমনি।।
হৃদয় বনের নিষাদ সে নিঠুর
তনু তার ফুলবন আঁখি তাহে ফণি।
এলো যখন স্বপন-পরী উড়ায়ে আঁচল সোনালি,
মোর ধেয়ান-লোক হতে যেন এলো রূপ ধরে রূপওয়ালী।
দেহে তার চাঁদিনী-চন্দন মাখা, হায় চাহিল সে যেই
তার চোখের ঐ তীর খেয়ে কেঁদে কহিল হৃদি;
ওগো হেনে গেল তীর।।

বাণী

বেণুকা ও-কে বাজায় মহুয়া বনে।
কেন ঝড় তোলে তার সুর আমার মনে।।
বলে আয় সে দুরন্তে সখি
আমারে কাঁদাবে সারা জনম ও-কি,
সে কি ভুলিতে তারে দেবে না জীবনে।।
সখি, ভাল ছিল তার তীর-ধনুক নিঠুর,
বাজে আরো সকরুণ তা’র বেণুকার সুর।
সখি, কেন সে বন-বিলাসী
আমারই ঘরের পাশে বাজায় বাঁশি,
আছে আরো কত দেশ, কত নারী ভুবনে।।