বাণী

ছলছল নয়নে মোর পানে চেয়ো না
যাবে যাও, নয়নে জল নিয়ে যেয়ো না।।
থাকে ব্যথা থাক বুকে, যাও তুমি হাসি মুখে
আমার চাঁদিনী রাত ঘন মেঘে ছেয়ো না।।
রঙিন পিয়ালাতে মম লোনা অশ্রু-জল ঢালি’
পানসে ক’রো না নেশা, জীবন ভরা ব্যথা খালি।
ভুলিতে চাহি যে ব্যথা, মনে এনো না সে কথা,
করুণ সুরে আর বিদায়-গীতি গেয়ো না।।

বাণী

ছেড়ে দাও মোরে আর হাত ধরিও না
প্রেম যারে দিতে পারিলে না
	তারে আর কৃপা করিও না।।
আমি  করুনা চাহিনি কভু কারো কাছে
বহু লোক পারে, তব কৃপা যারা যাচে
যারে  হৃদয়ে দিলে না ঠাঁই
	তার তরে কাদিঁও আখিঁজল ঝুরিও না।।
ভুল করেছিনু যেথা শুধু বিষ অসুন্দরের ভিড়,
সেই   পৃথিবীতে কেঁদেছি খুজিঁয়া প্রেম-যমুনার তীর।
যার তরণী ভাসিল বিরহের পারাবারে
পিছু ডেকে আর ফিরাতে চেয়ো না তারে
আমারে পাষাণ-বিগ্রহ ক'রে
	আর মালা পরিও না।।

বাণী

ছি ছি ছি কিশোর হরি, হেরিয়া লাজে মরি
সেজেছ এ কোন রাজ সাজে
যেন সঙ্ সেজেছ, হরি হে যেন সঙ্‌ সেজেছ —
ফাগ মুছে তুমি পাপ বেঁধেছ হরি হে যেন সঙ্ সেজেছ;
সংসারে তুমি সঙ্ সাজায়ে নিজেই এবার সঙ্ সেজেছ।
বামে শোভিত তব মধুরা গোপিনী নব
সেথা মথুরার কুবুজা বিরাজে।
মিলেছে ভাল, বাঁকায় বাঁকায় মিলেছে ভাল,
ত্রিভঙ্গ অঙ্গে কুবুজা সঙ্গে বাঁকায় বাঁকায় মিলেছে ভাল।
হরি ভাল লাগিল না বুঝি হৃদয়-আসন
তাই সিংহাসনে তব মজিয়াছে মন
প্রেম ব্রজধাম ছেড়ে নেমে এলে কামরূপ
হরি, এতদিনে বুঝিলাম তোমার স্বরূপ
তব স্বরূপ বুঝি না হে
গোপাল রূপ ফেলে ভূপাল রূপ নিলে স্বরূপ বুঝি না হে।
হরি মোহন মুরলী কে হরি’ নিল
কুসুম কোমল হাতে এমন নিঠুর রাজদন্ড দিল
মোহন মুরলী কে হরি।
দন্ড দিল কে, রাধারে কাঁদালে বলে দন্ড দিল কে
দন্ডবৎ করি শুধাই শ্রীহরি দন্ড দিল কে
রাঙা চরণ মুড়েছে কে সোনার জরিতে 
খুলে রেখে মধুর নূপুর, হরি হে খুলে রেখে মধুর নূপুর।
হেথা সবাই কি কালা গো ?
কারুর কি কান নাই নূপুর কি শোনে নাই, সবাই কাল গো
কালায় পেয়ে হল হেথায় সবাই কি কালা গো।
তব এ রূপ দেখিতে নারি, হরি আমি ব্রজনারী,
ফিরে চল তব মধুপুর
সেথা সকলি যে মধুময়, অন্তরে মধু বাহিরে মধু
সেথা সকলি যে মধুময় — ফিরে চল হরি মধুপুর।

বাণী

ছাড় ছাড় আঁচল, বঁধু, যেতে দাও।
বনমালী, এমনি ক’রে মন ভোলাও।।
একা পথে দুপুর বেলা, নিরদয়, একি খেলা।
তুমি এমনি করে মায়া-জাল বিছাও।।
পথে দিয়ে বাধা, একি প্রেম সাধা,
আমি নহি তো রাধা, বঁধু, ফিরে যাও।।
হে নিখিল নর-নারী, তোমার প্রেম-ভিখারি
লীলা বুঝিতে নারি তব শ্যাম রাও।।

বাণী

	ছাড়িতে পরান নাহি চায় তবু যেতে হবে হায়
	মলয়া মিনতি করে তবু কুসুম শুকায়॥
		রবে না এ মধুরাতি
		জানি তবু মালা গাঁথি
মালা	চলিতে দলিয়া যাবে তবু চরণে জড়ায়॥
		যে কাঁটার জ্বালা সয়ে
		উঠে ব্যথা ফুল হয়ে
	আমি কাঁদিব সে-কাঁটা লয়ে নিশীথ বেলায়॥
		নীরবে রবে যবে পরবাসে
		আমি দূর নীল আকাশে
	জাগিব তোমারি আশে নূতন তারায়॥

বৈতালিক

বাণী

ছিটাইয়া ঝাল নুন এলো ফাল্গুন মাস
কাঁচা বুকে ধরে ঘুণ, শ্বাস ওঠে ফোঁস ফাঁস।।
শিমুল ফুলের মত ফটাফট্‌ ফাটে হিয়া
প্রেম-তুলো বের হয়ে পড়ে গো ছড়াইয়া,
সবে বালিশ ধরিয়া করে ছটপট হাঁসফাঁস।।
চিবুতে সজ্‌’নে খাড়া সজনীরা ভুলে যায়,
আনাগোনা করে প্রেম পরানের দরজায়,
হৃদয়ের ইঞ্জিনে গ্যাস্‌ ওঠে ভোঁস ভাঁস।।
কচি আম-ঝোল-টক খাইয়া গিন্নি মায়
বৌঝির সাথে করে টক্ষাই টক্ষাই।
আইবুড়ো আইবুড়ি জল গেলে ছ’ গেলাস।।
বিরহিণীদের আঁখি-কলসি হয়েছে ফুটো,
গাধাও আজ গাহে গান ফেলিয়া ঘাসের মুঠো,
নোনা-পাকা মন বলে, কবে আসে তালশাঁস।।