বাণী

ছড়ায়ে বৃষ্টির বেলফুল, দুলায়ে মেঘলা চাঁচর চুল
চপল চোখে কাজল মেঘে আসিল কে।।
		বাজায়ে মেঘর মাদল
		ভাঙালে ঘুম ছিটিয়ে জল,
একা-ঘরে বিজলিতে এমন হাসি হাসিল কে।।
	এলে কি দুরন্ত মোর ঝোড়ো হাওয়া,
	চির-নিঠুর প্রিয় মধুর পথ-চাওয়া।
		হৃদয়ে মোর দোলা লাগে
		ঝুলনেরই আবেশ জাগে,
ফেলে-যাওয়া বাসি মালায় — আবার ভালোবাসিল কে।।

বাণী

	ছয় লতিফার ঊর্ধ্বে আমার আরফাত ময়দান।
	তারি মাঝে আছে কারা জানে বুজর্গান।।
যবে	হজরতেরি নাম জপি ভাই হাজার হজের আনন্দ পাই,
	জীবন মরণ দুই উঠে ভাই দেই সেথা কোরবান্।।
	আমি তুর পাহাড়ে সুর শুনে ভাই প্রেমানন্দে গলি,
	ফানাফির রসুলে আমি হেরার পথে চলি।
	হজরতেরি কদম চুমি হিজরে আসোয়াদ
	ইব্রাহিমের কোলে চ’ড়ে দেখি ঈদের চাঁদ,
মোরে	খোতবা শুনাব ইমাম হয়ে জিব্রাইল কোরআন।।

বাণী

ছাড়িয়া যেও না আর।
বিরহের তরী মিলনের ঘাটে লাগিল যদি আবার।।
	কত সে-বিফল জনমের পর
	পথ-চাওয়া মোর ফিরে এলে ঘর,
এলো শুভ দিন, কাটিল অসহ রাতের অন্ধকার।।
দেবতা গো ফিরে চাও,
মোর বেদনার তপস্যা-শেষ, মিলনের বর দাও।
	ল’য়ে জীবনের সঞ্চিত ব্যথা
	তোমার চরণে হলাম প্রণতা,
লহ পূজা মোর নয়নের লোর শীর্ণা তনুর হার।।

বাণী

	ছাড়িতে পরান নাহি চায় তবু যেতে হবে হায়
	মলয়া মিনতি করে তবু কুসুম শুকায়॥
		রবে না এ মধুরাতি
		জানি তবু মালা গাঁথি
মালা	চলিতে দলিয়া যাবে তবু চরণে জড়ায়॥
		যে কাঁটার জ্বালা সয়ে
		উঠে ব্যথা ফুল হয়ে
	আমি কাঁদিব সে-কাঁটা লয়ে নিশীথ বেলায়॥
		নীরবে রবে যবে পরবাসে
		আমি দূর নীল আকাশে
	জাগিব তোমারি আশে নূতন তারায়॥

বৈতালিক

বাণী

ছন্দের বন্যা হরিণী অরণ্যা
চলে গিরি-কন্যা চঞ্চল ঝর্ণা
নন্দন-পথ-ভোলা চন্দন-বর্ণা।।
গাহে গান ছায়ানটে, পর্বতে শিলাতটে
লুটায়ে পড়ে তীরে শ্যামল ওড়না।।
ঝিরি ঝিরি হাওয়ায় ধীরি ধীরি বাজে
তরঙ্গ-নূপুর বন-পথ মাঝে।
এঁকেবেকে নেচে যায় সর্পিল ভঙ্গে
কুরঙ্গ সঙ্গে অপরূপ রঙ্গে
গুরু গুরু বাজে তাল মেঘ-মৃদঙ্গে
তরলিত জোছনা-বালিকা অপর্ণা।।

বাণী

ছিটাইয়া ঝাল নুন এলো ফাল্গুন মাস
কাঁচা বুকে ধরে ঘুণ, শ্বাস ওঠে ফোঁস ফাঁস।।
শিমুল ফুলের মত ফটাফট্‌ ফাটে হিয়া
প্রেম-তুলো বের হয়ে পড়ে গো ছড়াইয়া,
সবে বালিশ ধরিয়া করে ছটপট হাঁসফাঁস।।
চিবুতে সজ্‌’নে খাড়া সজনীরা ভুলে যায়,
আনাগোনা করে প্রেম পরানের দরজায়,
হৃদয়ের ইঞ্জিনে গ্যাস্‌ ওঠে ভোঁস ভাঁস।।
কচি আম-ঝোল-টক খাইয়া গিন্নি মায়
বৌঝির সাথে করে টক্ষাই টক্ষাই।
আইবুড়ো আইবুড়ি জল গেলে ছ’ গেলাস।।
বিরহিণীদের আঁখি-কলসি হয়েছে ফুটো,
গাধাও আজ গাহে গান ফেলিয়া ঘাসের মুঠো,
নোনা-পাকা মন বলে, কবে আসে তালশাঁস।।