আদ্ধা কাওয়ালি

  • আজি নাচে নটরাজ এ কী ছন্দে

    বাণী

    আজি নাচে নটরাজ এ কী ছন্দে ছন্দে।
    	কী জানি কী সুখাভাসে
    	মৃদু মৃদু মধু হাসে
    কে জানে মাতিল কোন আনন্দে।।
    	ধুতুরা খুলিয়া ফেলি’
    	পড়েছে চম্পা বেলি
    অপরূপ রূপ হেরি সবে বন্দে।।
    সুরধুনী গঙ্গে তরল তরঙ্গে,
    ছন্দে তুলিল ধ্বনি তরঙ্গ রঙ্গে।
    	উমারে লইয়া বুকে
    	মহাকাল দোলে সুখে
    রবি শশী গ্রহতারা অভিবন্দে।।
    
  • উদার প্রাতে কে উদাসী এলে

    বাণী

    		উদার প্রাতে কে উদাসী এলে।
    		প্রশান্ত দীঘল নয়ন মেলে’।।
    		স্নিগ্ধ সকরুণ তোমার হাসি
    		আঘাত করে যেন আমারে আসি’,
    পাষাণ সম তব মৌন মূরতি মোর বুকে বিষাদের ছায়া কেন ফেলে।।
    		উন্মন ভিখারি গো বল মোর কাছে
    		শূন্য হৃদয় তব কোন মন যাচে,
    অশ্রু তুষার ঘন বিগ্রহ তব গলিয়া পড়িবে প্রেমে কার মালা পেলে।।
    
  • কি দিয়ে পূজি ভগবান

    বাণী

    	কি দিয়ে পূজি ভগবান!
    আমার ব’লে কিছু নাহি হরি সকলি তোমারি যে দান
    	মন্দিরে তুমি, মূরতিতে তুমি
    	পূজার ফুলে তুমি, স্তব-গীতে তুমি,
    ভগবান দিয়ে ভগবান পূজা করিতে — তুমি যদি ভাব অপমান॥
    	কেমন তব রূপ দেখিনি হরি
    	আপন মন দিয়ে তোমারে গড়ি,
    কাঁদ না হাস তুমি সে-রূপ হেরি — বুঝিতে পারি না আমি তাই কাঁদে প্রাণ॥
    	কোটি রবি-শশী আরতি করে যারে,
    	প্রদীপ জ্বালিয়া খুঁজি আমি তারে।
    বন-ডালা যাঁর পূজার সম্ভার, যোগী মুনি করে যুগযুগ ধ্যান।
    কোথা শ্রীমুখ তব কোথা শ্রীচরণ, চন্দন দিব কোন্‌খান ॥
    
  • কেঁদে কেঁদে নিশি হল ভোর

    বাণী

    কেঁদে কেঁদে নিশি হল ভোর।
    মিটিল না সাধ উঠিল না চাঁদ ফিরিল কেঁদে চকোর।।
    	শিয়রে দীপ নিভিয়া আসে
    	ভোরের বাতাস কাঁদে হতাশে,
    মালার ফুল ঝরে নিরাশে — যেন মোর আঁখি লোর।।
    	আমার নয়নে নয়ন রাখি’
    	চাহে শুকতারা ছলছল আঁখি,
    পাপিয়ার সনে পিয়া পিয়া ডাকি — এসো এসো চিতচোর।।
    
  • কেন আন ফুল-ডোর আজি বিদায় বেলা

    বাণী

    কেন	আন ফুল-ডোর আজি বিদয়-বেলা,
    মোছ	মোছ আঁখি-লোর যদি ভাঙিল মেলা॥
    কেন	মেঘের স্বপন আন মরুর চোখে,
    ভু’লে	দিয়ো না কুসুম যারে দিয়েছ হেলা॥
    যবে	শুকাল কানন এলে বিধুর পাখি,
    ল’য়ে	কাঁটা-ভরা প্রাণ এ কি নিঠুর খেলা।
    যদি	আকাশ-কুসুম পেলি চকিতে কবি,
    চল	চল মুসাফির, ডাকে পারের ভেলা॥
    
  • কেন আসিলে যদি যাবে চলি’

    বাণী

    কেন আসিলে যদি যাবে চলি’।
    গাঁথিলে না মালা ছিঁড়ে ফুল-কলি।।
    কেন বারে বারে আসিয়া দুয়ারে
    ফিরে গেলে ‘পারে কথা নাহি বলি’,
    কী কথা বলিতে, আসিয়া নিশীথে,
    শুধু ব্যথা-গীতে গেলে মোরে ছলি’।।
    প্রভাতের বায়ে কুসুম ফুটায়ে,
    নিশীথে লুকায়ে উড়ে গেল অলি।।
    কবি শুধু জানে, কোন্ অভিমানে,
    চাহি যারে গানে কেন তা’রে দলি।।
    
  • কোকিল সাধিলি কি বাদ

    বাণী

    কোকিল, সাধিলি কি বাদ।
    নিশি অবসান হল না মিটিতে সাধ।।
    	মিলনের মোহ কেন
    	ডাকিয়া ভাঙিলি হেন,
    তুই রে সতিনী যেন — চন্দ্রাবলীর ফাঁদ।।
    	সারা নিশি অভিমানে
    	চাহিনি শ্যামের পানে,
    জেগে দেখি কুহু-তানে — নাহি শ্যামচাঁদ।।
    	ননদিনী কুটিলা কি
    	পাঠায়েছে তোরে পাখি,
    সুরের বাসরে ডাকি’ — আনিলি বিষাদ।।
    
  • কোথা চাঁদ আমার

    বাণী

    		কোথা চাঁদ আমার!
    		নিখিল ভুবন মোর ঘিরিল আঁধার।।
    ওগো		বন্ধু আমার, হ’তে কুসুম যদি,
    		রাখিতাম কেশে তুলি’ নিরবধি।
    		রাখিতাম বুকে চাপি’ হ’তে যদি হার।।
    আমার		উদয়-তারার শাড়ি ছিঁড়েছে কবে,
    		কামরাঙা শাঁখা আর হাতে কি রবে।
    		ফিরে এসো, খোলা আজো দখিন-দুয়ার।।
    
  • জাগো জাগো বধূ নব-বাসরে

    বাণী

    জাগো — জাগো বধূ নব-বাসরে।
    গৃহ-দীপ জ্বালো কল্যাণ-করে।।
    ভুবনের ছিলে, এলে ভবনে
    স্বপন হ’তে এলে জাগরণে,
    শ্রীমতী আসিলে শ্রী হীন ঘরে।।
    স্বপন-বিহারিণী অকুণ্ঠিতা
    পরিলে গুণ্ঠন সলাজ ভীতা’,
    কমলা আসিলে কাঁকন প’রে।।
    
  • জানি পাব না তোমায় হে প্রিয় আমার

    বাণী

    জানি পাব না তোমায় হে প্রিয় আমার
    			এ জীবনে আর॥
    		এ আমার ললাট লেখা
    		আমি রব চির একা
    নিমেষের দিয়ে দেখা কাঁদাবে আবার॥
    		তুব হে জীবন স্বামী
    		তোমারি আশায় আমি
    আসিব এ ধরণীতে যুগে যুগে অনিবার॥
    
  • টলমল টলে হৃদয়-সরসী

    বাণী

    টলমল টলে হৃদয়-সরসী।
    নীর ভরণে এলে কে ষোড়শী।।
    এলে কি নাহিতে, পরশ চাহিতে
    এলে কি অলস তরণী বাহিতে,
    এলে কি ভুলিতে কমল তুলিতে —
    	আমার স্বপন-মানসী।।
    
  • তব ফুলহার নহে মোর

    বাণী

    তব ফুলহার নহে মোর নহে।
    ভুলায়ো না আর মালার মোহে।।
    মালার সাথে যদি না মেলে হৃদয়
    হানে আরো জ্বালা, মালা সে নয়,
    	আরো কাঁদায় বিরহে।।
    
  • দূর প্রবাসে প্রাণ কাঁদে আজ

    বাণী

    দূর প্রবাসে প্রাণ কাঁদে আজ শরতের ভোর হাওয়ায়।
    শিশির-ভেজা শিউলি ফুলের গন্ধে কেন কান্না পায়।।
    সন্ধ্যা বেলার পাখির সম মন উড়ে যায় নীড়-পানে।
    নয়ন-জলের মালা গাঁথে বিরহিণী এক্‌লা, হায়।।
    কোন্ সুদূরে নওবতে কার বাজে সানাই যোগিয়ায়।
    টলমল টলিছে মন কমল-পাতে শিশির-প্রায়।।
    ফেরেনি আজ ঘরে কে হায় ঘরে যে আর ফিরবে না।
    কেঁদে কেঁদে তারেই যেন ডাকে বাঁশি, ‘ফিরে আয়’।।
    
  • পিউ পিউ পিউ বোলে পাপিয়া

    বাণী

    পিউ পিউ পিউ বোলে পাপিয়া
    বুকে তারি পিয়ারে চাপিয়া।।
    বাতাবি নেবুর ফুলেলা কুঞ্জে
    মাতাল সমীরণ প্রলাপ গুঞ্জে
    ফুলের মহলায় চাঁদিনী শিহরায়
    নদীকূলে ঢেউ ওঠে ছাপিয়া।।
    এমনি নেবু ফুল এমনি মধুরাতে
    পরাতো বঁধু মোর বিনোদ খোঁপাতে,
    বাতায়নে পাখি করিত ডাকাডাকি
    মনে পড়ে তায় উঠি কাঁপিয়া।।
    
  • রহি' রহি' কেন আজো সেই মুখ মনে পড়ে

    বাণী

    রহি' রহি' কেন আজো সেই মুখ মনে পড়ে।
    ভুলিতে তা'য় চাহি যত, তত স্মৃতি কেঁদে মরে।।
    দিয়েছি তাহারে বিদায় ভাসায়ে নয়ন-নীরে,
    সেই আঁখি-বারি আজো মোর নয়নে ঝরে।।
    হেনেছি যে অবহেলা পাষাণে বাঁধিয়া হিয়া,
    তারি ব্যথা পাষাণ সম রহিল বুকে চাপিয়া।
    সেই বসন্ত ও বরষা আসিবে গো ফিরে ফিরে,
    আসিবে না আর ফিরে অভিমানী মোর ঘরে।।