বাউল

  • আমরা শক্তি আমরা বল আমরা ছাত্রদল

    বাণী

    		আমরা শক্তি আমরা বল, আমরা ছাত্রদল।
    মোদের	পায়ের তলায় মূর্চ্ছে তুফান
    		ঊর্ধ্বে বিমান ঝড় বাদল!
    				আমরা ছাত্রদল॥
    মোদের	আঁধার রাতে বাধার পথে যাত্রা নাঙ্গা পায়,
    আমরা		শক্ত মাটি রক্তে রাঙাই বিষম চলার ঘায়।
    		যুগে যুগে রক্তে মোদারে সিক্ত হল পৃথ্বীতল।
    				আমরা ছাত্রদল॥
    মোদের	কক্ষচ্যুত ধূমকেতু-প্রায় লক্ষ্যহারা প্রাণ,
    আমরা		ভাগ্যদেবীর যজ্ঞবেদীর নিত্য বলিদান।
    যখন		লক্ষীদেবী স্বর্গে উঠেন আমরা পশি নীল অতল।
    				আমরা ছাত্রদল॥
    		আমরা ধরি মৃত্যু রাজার যজ্ঞ-ঘোড়ার রাশ,
    		মোদের মৃত্যু লেখে মোদের জীবন-ইতিহাস।
    		হাসির দেশে আমরা আনি সর্বনাশী চোখের জল।
    				আমরা ছাত্রদল॥
    		সবাই যখন বৃদ্ধি যোগায়, আমরা করি ভুল।
    		সাবধানীরা বাঁধ বাঁধে সব, আমরা ভাঙি কূল।
    		দারুণ রাতে আমরা তরুণ রক্তে করি পথ পিছিল।
    				আমরা ছাত্রদল॥
    মোদের	চক্ষে জ্বলে জ্ঞানের মশাল বক্ষে ভরা বাক্‌,
    		কণ্ঠে মোদের কুণ্ঠা-বিহীন নিত্য-কালের ডাক।
    আমরা		তাজা খুনে লাল করেছি সরস্বতীর শ্বেত-কমল।
    				আমরা ছাত্রদল॥
    ঐ		দারুণ উপপ্লবের দিনে আমরা দানি শির,
    		মোদের মাঝে মুক্তি কাঁদে বিংশ-শতাব্দীর!
    মোরা		গৌরবেরি কান্না দিয়ে ভরেছি মা’র শ্যাম আঁচল।
    				আমরা ছাত্রদল॥
    		আমরা রচি ভালোবাসার আশার ভবিষ্যৎ,
    মোদের	স্বর্গ-পথের আভাস দেখায় আকাশ-ছায়াপথ!
    		মোদের চোখে বিশ্ববাসীর স্বপ্ন দেখা হোক সফল।
    				আমরা ছাত্রদল॥
    
  • আমার প্রাণের দ্বারে ডাক দিয়ে

    বাণী

    আমার	প্রাণের দ্বারে ডাক দিয়ে কে যায় বারে বারে।
    তাঁর		নূপুর-ধ্বনি রিনি ঝিনি বাজে বন-পারে।।
    			নিঝুম রাতে ঘুমাই যবে
    			সে ডাকে আমায় বেণুর রবে,
    		স্বপন কুমার আসে স্বপন-অভিসারে।।
    আমি		জল নিতে যাই নদী তটে এক্‌লা নাম ধ’রে সে ডাকে
    		ধরতে গেলে পালিয়ে সে যায় বন-পথের বাঁকে।
    			বিশ্ব-বধূর মনোচোরা
    			ধরতে সে চায়, দেয় না ধরা,
    আমি		তা’রি স্বয়ম্বরা, আমি সঁপেছি প্রাণ তারে।।
    
  • আমি বাউল হ’লাম ধূলির পথে

    বাণী

    আমি বাউল হ’লাম ধূলির পথে ল’য়ে তোমার নাম।
    আমার একতারাতে বাজে শুধু তোমারই গান, শ্যাম।।
    	নিভিয়ে এলাম ঘরের বাতি
    	এখন তুমিই সাথের সাথি,
    আমি যেখানে যাই সেই সে এখন আমার ব্রজধাম।।
    আমি আনন্দ-লহরি বাজাই নূপুর বেঁধে পায়ে,
    শ্রান্ত হ’লে জুড়াই তনু বন-বীথি বটের ছায়ে।
    	ভাবনা আমার তুমি নিলে
    	আমায় ভিক্ষা-পাত্র দিলে
    কখন তুমি আমার হবে পূরবে মনস্কাম।।
    

    ১. শ্রান্ত হলে জুড়াই তবু বংশী-বটের ছায়ে।

  • আমি ভাই ক্ষ্যাপা বাউল

    বাণী

    আমি ভাই ক্ষ্যাপা বাউল, আমার দেউল আমারি এই আপন দেহ।
    আমার এ প্রাণের ঠাকুর নহে সুদূর অন্তরে মন্দির-গেহ।।
    সে থাকে সকল সুখে সকল দুখে আমার বুকে অহরহ,
    কভু তায় প্রণাম করি, বক্ষে ধরি, কভু তা’রে বিলাই স্নেহ।।
    ভুলায়নি আমারি কুল, ভুলেছে নিজেও সে কুল,
    ভুলে বৃন্দাবন গোকুল মোর সাথে মিলন বিরহ।
    সে আমার ভিক্ষা-ঝুলি কাঁধে তুলি’, চলে ধূলি-মলিন পথে,
    নাচে গায় আমার সাথে একতারাতে, কেউ বোঝে, বোঝে না কেহ।।
    
  • ওরে এ কোন্ স্নেহ-সুরধুনী

    বাণী

    ওরে এ কোন্ স্নেহ-সুরধুনী নামলো আমার সাহারায়।
    বক্ষে কাঁদার বান ডেকেছে, আজ হিয়া কূল না হারায়।।
    কণ্ঠে চেপে শুষ্ক তৃষা
    মরুর সে-পথ তপ্ত সীসা,
    চ’লতে একা পাইনি দিশা ভাই,
    বন্ধ নিঃশ্বাস — একটু বাতাস্!
    এক ফোঁটা জল জহর-মিশা! মিথ্যা আশা, নাই সে নিশানা’ই
    হঠাৎ ও-কার ছায়ার মায়া রে —
    যেন ডাক-নাম আজ গাল্-ভরা ডাক ডাকছে কে ঐ মা-হারায়।।
    লক্ষ যুগের বক্ষ-ছায়া তুহিন্ হ’য়ে যে ব্যথা আর কথা ছিল ঘুমা,
    কে সে ব্যথায় বুলায় পরশ রে?
    ওরে গলায় তুহিন্ কাহার কিরণ-তপ্ত সোহাগ-চুমা?
    ওরে ও-ভূত, লক্ষ্মী-ছাড়া
    হতভাগা বাঁধন-হারা,
    কোথায় ছুটিস্! একটু দাঁড়া, হায়!
    ঐ ত তোরে ডাক্‌ছে স্নেহ
    হাতছানি দেয় ঐ ত গেহ,
    কাঁদিস্ কেন পাগল-পারা তায়?
    এত ডুক্‌রে’ কিসের তিক্ত কাঁদন তোর?
    অভিমানী! মুখ ফেরা দেখ্ যা পেয়েছিস্ তা’ও হারায়!
    হায়, বুঝ্‌বে কে যে স্নেহের ছোঁওয়ায় আমার বাণী রা’ হারায়।।
    
  • কার বাঁশরি বাজিল মেঠো সুরে

    বাণী

    কার বাঁশরি বাজিল মেঠো সুরে মন উদাস করা দুপুরে (গো)।
    সখি কে কাহারে চায়
    আজো সুরে সুরে ঝুরে ঝুরে কাহারে ধেয়ায়
    মোর মন যেতে চায় বাঁশুরিয়ার সুরের দেশে উড়ে (গো)।।
    হেরি যেতে নদী পথে
    সে ভাঁট ফুলেরি মালা গেঁথে ভাসায় ভাটির স্রোতে (গো)
    আমার সাধ জাগে ঐ মালা যাহার দেখি সেই বঁধু রে (গো)।।
    
  • গেরুয়া রঙ মেঠো পথে বাঁশরি বাজিয়ে কে যায়

    বাণী

    গেরুয়া রঙ মেঠো পথে বাঁশরি বাজিয়ে কে যায়।
    সুরের নেশায় নুয়ে প'ড়ে ভুঁই-কদম তার পায়ে জড়ায়।
    	আহা ভূঁই-কদম তারা পায়ে জড়ায়।।
    	সুর শুনে তার সাঝেঁর ঠোটেঁ,
    	বাঁকা শশীর হাসি ফোটে,
    গো-পথ বেয়ে ধেনু ছোটে রাঙা মাটির আবির ছড়ায়।
    	তারা রাঙা মাটির আবির ছাড়ায়।।
    	গগন গোঠে গ্রহ তারা
    	সে সুর শুনে দিশেহারা
    হাটের পথিক ভেবে সারা ঘরে ফেরার পথ ভুলে যায়।।
    	জল নিতে নদী কূলে
    	কুলবালা কূল ভুলে
    সন্ধ্যা তারা প্রদীপ তুলে বাঁশুরিয়ার নয়নে চায়।
    	তারা বাঁশুরিয়ার নয়নে চায়।।
    
  • তুমি দুখের বেশে এলে বলে

    বাণী

    তুমি দুখের বেশে এলে বলে ভয় করি কি হরি।
    দাও ব্যথা যতই তোমায় ততই নিবিড় করে ধরি।
    			আমি ভয় করি কি হরি।।
    	আমি শূন্য করে তোমার ঝুলি
    	দুঃখ নেব বক্ষে তুলি,
    আমি করব দুঃখের অবসান আজ সকল দুঃখ বরি।।
    	কত সে মন কত কিছুই
    	হজম করে ফেলি নিতুই,
    এক মনই তো দুঃখ দেবে তারে নাহি ডরি।।
    	তুমি তুলে দিয়ে সুখের দেয়াল,
    	ছিলে আমার প্রাণের আড়াল,
    আজ আড়াল ভেঙে দাঁড়ালে মোর সকল শূন্য হরি।।
    
  • প্রাণের ঠাকুর লীলা করে আমার দেহের আঙিনাতে

    বাণী

    প্রাণের ঠাকুর লীলা করে আমার দেহের আঙিনাতে
    রসের লুকোচুরি খেলা নিত্য আমার তারই সাথে।।
    তারে নয়ন দিয়ে খুঁজি যখন
    অন্তরে সে লুকায় তখন
    অন্তরে তায় ধরতে গেলে লুকায় গিয়ে নয়ন-পাতে।।
    ঐ দেখি তার হাসির ঝিলিক আমার ধ্যানের ললাট-মাঝে
    ধরতে গেলে দেখি সে নাই কোন্ সুদূরে নূপুর বাজে।
    এত কাছে রয় সে তবু পাই না তারে হাতে হাতে।।
    
  • বিজন গোঠে কে রাখাল বাজায় বেণু

    বাণী

    	বিজন গোঠে কে রাখাল বাজায় বেণু
    আমি	সুর শুনে তা'র বাউল হয়ে এনু (গো)।।
    	ঐ সুরে পড়ে মনে কোন সুদুর বৃন্দাবনে
    যেত	নন্দ-দুলাল ব্রজ-গোপাল বাজিয়ে বেণু বনে
    পথে	লুটতো কেঁদে গোপাবালা, ভূরতো তৃণ-ধেণু গো
    		কেঁদে ভুলতো তৃণ-ধেণু।।
    কবে	নদীয়াতে গোরা
    ও ভাই	ডেকেছিল এমনি সুরে এমনি পাগল-করা।
    কেঁদে	ডাকতো বৃথাই শচীমাতা, সাধতো বসুন্ধরা,
    প্রেমে	গ'লে যত নর-নারী যাচতো পদ-বেণু গো
    		তারা যাচতো পদ-রেণু।।
    
  • হায় গো ভালোবেসে অবশেষে

    বাণী

    (হায় গো) 	ভালোবেসে অবশেষে কেঁদে দিন গেল।
    		ফুল-শয্যা বাসি হল, বঁধূ না এলো।।
    		শুকাইল পানের খিলি বাঁটাতে ভরা,
    		এ পান আমি কারে দিব সে বঁধূ ছাড়া।
    (হায় গো) 	নীলাম্বরী শাড়ি ছি ছি পরলেম মিছে লো।।
    		এবার ধ’রে দিস্ যদি তায়
    		রাখ্‌ব বেঁধে বিনোদ খোঁপায়,
    		কাঙালে পাইলে রতন রাখে যেমন লো।।
    		সোঁদা-মাখা নিস্‌নে কেশে, গন্ধে যে লো তার
    		মনে আনে চন্দন-গন্ধ সোনার বঁধূয়ার।
    		এত দুঃখ ছিল আমার এই বয়সে লো।।
    

    বাউল