বেহাগ

  • আন্‌মনে জল নিতে ভাসিল গাগরী

    বাণী

    আনমনে জল নিতে ভাসিল গাগরী
    সাঁতার জানি না, আনি কলস কেমন করি।।
    জানি না বলিব কি শুধাবে যবে ননদী
    কাহার কথা ভাবে পোড়া মন নিরবধি
    কলসি না ভাসিয়া ভাসিতাম আমি যদি
    কি বলিব কেন মোর ভিজিল ঘাগরী।।
    একেলা কুলবধূ, পথ বিজন, নদীর বাঁকে
    ডাকিল বৌ–কথা–কও কেন হলুদ চাঁপার শাখে
    বিদেশে শ্যাম আমার পড়ল মনে সেই সে ডাকে
    ঠাঁই দে যমুনে, বুকে, আমিও ডুবিয়া মরি।।
    
  • আমি সুন্দর নহি জানি হে বন্ধু জানি

    বাণী

    আমি	সুন্দর নহি জানি হে বন্ধু জানি
    তুমি	সুন্দর, তব গান গেয়ে নিজেরে ধন্য মানি।।
    		আসিয়াছি সুন্দর ধরণীতে
    		সুন্দর যারা তাদেরে দেখিতে
    	রূপ-সুন্দর দেবতার পায় অঞ্জলি দেই বাণী।।
    	রূপের তীর্থে তীর্থ-পথিক যুগে যুগে আমি আসি'
    	ওগো সুন্দর বাজাইয়া যাই তোমার নামের বাশিঁ।
    		পরিয়া তোমার রূপ-অঞ্জন
    		ভুলেছে নয়ন রাঙিয়াছে মন
    	উছলি' উঠুক মোর সঙ্গীতে সেই আনন্দখানি।।
    
  • কেন দিলে এ কাঁটা যদি গো কুসুম দিলে

    বাণী

    কেন দিলে এ কাঁটা যদি গো কুসুম দিলে
    ফুটিত না কি কমল ও কাঁটা না বিঁধিলে।।
    	কেন এ আঁখি-কূলে
    	বিধুর অশ্রু দুলে
    কেন দিলে এ হৃদি যদি না হৃদয় মিলে।।
    	কেন কামনা-ফাঁদে
    	রূপ-পিপাসা কাঁদে
    শোভিত না কি কপোল ও কালো তিল নহিলে।।
    	কাঁটা-নিকুঞ্জে কবি
    	এঁকে যা সুখের ছবি
    নিজে তুই গোপন রবি তোরি আঁখির সলিলে।।
    
  • ডুবু ডুবু ধর্ম-তরী ফাট্‌ল মাইন

    বাণী

    কোরাস্:
    ডুবু ডুবু ধর্ম-তরী, ফাট্‌ল মাইন সর্‌দা’র
    সামাল সামাল পড়ল সাড়া ব-মাল মেয়ে মর্দার।।
    এ কোন্ এলো বালাই, এবে পালাই বল কোন্ দেশ,
    গাছের নীচে ঘ’ড়েল শেয়াল, কাকের মুখে সন্দেশ।
    কন্যা-ডোবা কন্যা এলো, ভাস্ল বুঝি ঘর-দ্বার।।
    আয়েস্ ক’রে ধুম্‌ড়ো মেয়ের বাড়বে বয়েস চৌদ্দ
    বাপের বুকের তপ্ত-খোলায়? দিব্যি গেয়ান-বোধ তো!
    হদ্দ হ’লেন বৌদি ভেবে, ছাড়ল্ নাড়ী বড়দা’র।।
    দিব্যি স্বর্গ-মার্গে যেত গৌরী-দানের মারফৎ
    যমের যমজ জামাতৃকে লিখে দিয়ে ফার্খত!
    (হ’ল) নৈকষ্য কস্য এখন, জাত গেল ‘মেল-খড়দা’র।।
    দেব্‌তা বুড়ো শিব যে মাগেন আট-বছরী নাতনি,
    চতর্দশী মুক্তকেশী — ক’নে নয়, সে হাত্‌নী!
    পুঁটুলি নয় — এঁটুলি সে, কিংবা পুলিশ-সর্দার।।
    সিঙ্গি-চড়া ধিঙ্গি মেয়ে বৌ হবে কি? বাপ্ রে!
    প্রথম প্রণয়-সম্ভাষণেই হয়ত দিবে থাপ্‌ড়ে।
    লাফ দিয়ে সে বাইরে যাবে ঝাঁপ খুলে ঐ পর্দার।।
    সম্বন্ধ ভুলে শেষে যা-তা বলে ডাকব?
    বধূ তো নয়, যদুর পিসি! কোথায় তারে রাখব?
    ধর্মিণী নয়, জার্মানী শেল! গো-স্বামী, খবরদার।।
    টাকাতে নয়, ভাব্‌নাতে শেষ মাথাতে টাক পড়বে,
    যোদ্ধা বামা গুটিয়ে জামা কথায় কথায় লড়বে,
    যেই পাবে না সেমিজ, বডিস, কৌটো পানের জর্দার।।
    স্বামীকে সে বলবে নাথ, রাখ্‌বে না মান দুর্গার,
    হয়ত কবে বল্‌বে, ‘পিও, ঝোল রেঁধেছি মুর্গার!’
    আন্‌বে কে বাপ গুর্খা-সেপাই দন্ত-নখর-বর্দার।।
    গটমটিয়ে কইবে কথা, কট্‌মটিয়ে চাইবে,
    ‘বামা’ সে নয়, ‘ডাইনে সে যে, ডাইনে’ সদা ধাইবে!
    নিতুই নতুই চাইবে যেতে সিমলা শিলং হর্‌দ্বার।।
    ভেবেছিলাম জাত নিয়েছিস, জাতিটা নয় যাক্‌গে,
    গৃহিণীরূপ গ্রহণী রোগ, তাও ছিল শেষ ভাগ্যে!
    দোক্ত ফেলে গিন্নি কাঁদেন, কর্তা করেন ঘর-বার।।
    
  • নিশি নিঝুম ঘুম নাহি আসে

    বাণী

    নিশি নিঝুম ঘুম নাহি আসে,
    হে প্রিয়, কোথা তুমি দূর প্রবাসে।।
    বিহগী ঘুমায় বিহগ–কোলে,
    ঘুমায়েছে ফুলমালা শ্রান্ত আঁচলে;
    ঢুলিছে রাতের তারা চাঁদের পাশে।।
    ফুরায় দিনের কাজ, ফুরায় না রাতি,
    শিয়রের দীপ হায় অভিমানে নিভে যায়
    নিভিতে চাহে না নয়নের বাতি।
    কহিতে নারি কথা তুলিয়া আঁখি
    বিষাদ–মাখা মুখ গুন্ঠনে ঢাকি’
    দিন যায় দিন গুণে, নিশি যায় নিরাশে।।
    

  • মন লহ নিতি নাম রাধা শ্যাম গাহো

    বাণী

    মন লহ নিতি নাম রাধা শ্যাম গাহো হরি গুণ গান।
    তব ধন জন প্রাণ, যাহার কৃপার দান
    জপ তারি নাম জয় ভগবান জয় ভগবান।।
    জনক-জননীর স্নেহে তাঁহার হেরিস্‌ তুই স্নেহময়,
    ভাই ভগিনীর প্রীতিতে যাঁর, শান্ত মধুর পরিচয়।
    প্রণয়ী বন্ধুর মাঝে, যাঁর প্রেম রূপ বিরাজে;
    পুত্র কন্যা-রূপে সেই জুড়ায় তাপিত পরান।।
    তৃষ্ণা ক্ষুধায় সেই কৃষ্ণেরি লীলা,
    হাসে শ্যাম শস্যে কুসুমে রঙিলা;
    তরঙ্গে ছলছল আঁখি জল-নীলা,
    	কল-ভাষা নদী-কলতান।
    দেয় দুখ্‌ শোক সেই, পুন সেই করে ত্রাণ।
    জয় ভগবান, জয় ভগবান, জয় ভগবান।।
    
  • রে অবোধ শূন্য শুধু শূন্য

    বাণী

    রে অবোধ!		শূন্য শুধু শূন্য ধূলো মাটির ধরা।
    শূন্য ঐ		অসীম আকাশ রংবেরং-এর খিলান-করা।।
    হাওয়াতে		শূন্য নিমেষ নিমেষে যার হ’য়ে শেষ।
    এসেছি		পথিক এ পর-দেশ জীবন-মৃত্যু ভরা।।
    হুরী আর		গানের প্রিয়া, সাথে তার শারাব নিয়া
    চল ঐ		সবুজ-বিথার ঝর্না-কিনার গোলাব-ঝরা।।
    এর অধিক		সুখের বিলাস স্বরগে করিসনে আশ
    সে স্বরগ		নাই রে কোথাও এমন উধাও দুখ্-পসরা।।