ছায়ানট

  • ডাকতে তোমায় পারি যদি আড়াল থাকতে পারবে না

    বাণী

    ডাকতে তোমায় পারি যদি আড়াল থাকতে পারবে না
    এখন আমি ডাকি তোমায় তখন তুমি ছাড়বে না।।
    	যদি দেখা না পাই কভু —
    	সে দোষ তোমার নহে প্রভু
    সে সাধনায় আমারি হার জানি তুমি ছাড়বে না।।
    বহু লোকের চিন্তাতে মোর বহু দিকে মন যে ধায়,
    জানি জানি, অভিমানী পাইনে আজ তাই তোমায়।
    	বিশ্ব, ভুবন ভুলে যেদিন
    	তোমার ধ্যানে হব বিলীন,
    সেদিন আমার বক্ষ হতে চরণ তোমার কাড়বে না।।
    
  • তোমার প্রেমে সন্দেহ মোর

    বাণী

    তোমার প্রেমে সন্দেহ মোর দুর কর নাথ ভক্তি দাও।
    যেখানে হোক তুমি আছ — এই বিশ্বাস শক্তি দাও।।
    	যে কোন জনমে আমি
    	পাইব পাব তোমায় আমি
    অবিশ্বাসের আঁধার রাতে তোমায় পাওয়ার পথ দেখাও।।
    শত দুঃখ ব্যথার মাঝে এইটুকু দাও শন্তি নাথ।
    কাঁদিবে তুমি আমার দুঃখে আজকে যতই দাও আঘাত।।
    	হয়ত কোটি জনম পরে
    	পাব তোমায় আমার করে,
    তোমায় আমায় মিলন হবে এই আশাতেই মন দোলাও।।
    
  • দোলা লাগিল দখিনার বনে বনে

    বাণী

    দোলা লাগিল দখিনার বনে বনে
    বাঁশরি বাজিল ছায়ানটে মনে মনে॥
    	চিত্তে চপল নৃত্যে কে
    	ছন্দে ছন্দে যায় ডেকে;
    যৌবনের বিহঙ্গ ঐ ডেকে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে॥
    বাজে বিজয়-ডঙ্কা তারই এলো তরুণ ফাল্গুনী,
    জাগো ঘুমন্ত – দিকে দিকে ঐ গান শুনি’।
    	টুটিল সব অন্ধকার –
    	খোলো খোলো বন্ধ দ্বার;
    বাহিরে কে যাবি আয় সে শুধায় জনে জনে॥
    

  • পথিক ওগো চল্‌তে পথে

    বাণী

    পথিক ওগো চল্‌তে পথে
    	তোমায় আমায় পথের দেখা।
    ঐ দেখাতে দুইটি হিয়ায়
    	জাগ্‌ল প্রেমের গভীর রেখা।।
    এই যে দেখা শরৎ-শেষে
    পথের মাঝে অচিন্‌ দেশে,
    কে জানে ভাই কখন কে সে
    	চল্‌ব আবার পথটি একা।।
    এই যে মোদের একটু চেনার
    	আবছায়াতেই বেদন জাগে
    ফাগুন হাওয়ার মদির ছোঁওয়া
    	পূবের হাওয়ার কাঁপন লাগে।
    হয়ত মোদের শেষ দেখা এই
    এম্‌নি ক’রে পথের বাঁকেই
    রইল স্মৃতি চারটি আঁখেই
    	চেনার বেদন নিবি লেখা।।
    
  • বনে বনে দোলা লাগে

    বাণী

    বনে বনে দোলা লাগে।
    মনে মনে দোলা লাগে
    	দখিনা-সমীর জাগে।।
    একি এ বেদনা লয়ে
    ফুটিল কুসুম হৃদয়ে
    আবেশে পুলকে ভয়ে
    	না-জানা পরশ মাগে।।
    কিশোর হৃদয় পুটে
    অশোক রঙিন ফোটে
    কপোল রাঙিয়া ওঠে
    	অতনুর অনুরাগে।।
    

  • বিরহী বেণুকা যেন বাজে সখি ছায়ানটে

    বাণী

    বিরহী বেণুকা যেন বাজে সখি ছায়ানটে।
    উথলি’ উঠিল বারি শীর্ণা যমুনাতটে।।
    	নীরব কুঞ্জে কুহু
    	গেয়ে ওঠে মুহু মুহু,
    আঁধার মধু বনে বকুল চম্পা ফোটে।।
    সহসা সরস হল বিরস বৃন্দাবন,
    চন্দ্রা যামিনী হাসে খুলি মেঘ-গুণ্ঠন।
    	সে এলো, তারে নিরখি’
    	পরান কি রবে সখি,
    আবেশে অঙ্গ মম থরথর কেঁপে ওঠে।।
    
  • রিনিকি ঝিনিকি ঝিনিরিনি রিনি ঝিনিঝিনি বাজে

    বাণী

    রিনিকি ঝিনিকি ঝিনিরিনি রিনি ঝিনিঝিনি বাজে পায়েলা বাজে
    নওল কিশোরী ধায় অভিসারে ভবন তেয়াগি' বন-মাঝে।।
    	বারণ করে তায়
    	লতিকা ধরি' পায়
    ভাব-বিলাসিনী না মানে গুরুজন-ভয় লাজে।।
    আবেশ বিহ্বল এলোমেলো কুন্তল ছায়া-নটিনী চলে
    মধুকর গুঞ্জে মাধবী কুঞ্জে কুসুম দীপালি জ্বলে।
    	সে রূপ হেরি' হায়
    	মুরলী থামিয়া যায়
    পথ-ভোলা শশী কাননে এলো যেন রাধা-সাজে।।
    

  • শূণ্য এ বুকে পাখি মোর আয়

    বাণী

    শূন্য এ–বুকে পাখি মোর আয় ফিরে আয় ফিরে আয়!
    তোরে না হেরিয়া সকালের ফুল অকালে ঝরিয়া যায়।।
    		তুই নাই ব’লে ওরে উন্মাদ
    		পান্ডুর হ’ল আকাশের চাঁদ,
    কেঁদে নদী–জল করুণ বিষাদ ডাকে: ‘আয় ফিরে আয়’।।
    		গগনে মেলিয়া শত শত কর
    		খোঁজে তোরে তরু, ওরে সুন্দর!
    তোর তরে বনে উঠিয়াছে ঝড় লুটায় লতা ধূলায়!
    		তুই ফিরে এলে, ওরে চঞ্চল
    		আবার ফুটিবে বন ফুল–দল
    ধূসর আকাশ হইবে সুনীল তোর চোখের চাওয়ায়।।
    
  • হিন্দু-মুসলমান দুটি ভাই ভারতের

    বাণী

    হিন্দু-মুসলমান দুটি ভাই ভারতের দুই আঁখি-তারা।
    এক বাগানে দুটি তরু — দেবদারু আর কদমচারা।।
    	যেন গঙ্গা সিন্ধু নদী
    	যায় গো ব’য়ে নিরবধি,
    এক হিমালয় হতে আসে, এক সাগরে হয় গো হারা।।
    	বুলবুল আর কোকিল পাখি
    	এক কাননে যায় গো ডাকি’,
    ভাগীরথী যমুনা বয় মায়ের চোখের যুগল-ধারা।।
    পেটে-ধরা ছেলের চেয়েও চোখে ধরার মায়া বেশি,
    অতীতে ছিল অতিথি, আজ সে সখা প্রতিবেশী।
    	ফুল পাতিয়ে গোলাপ বেলি
    	এক সে-মায়ের বুকে খেলি,
    পাগল তারা — ভিন্ন ভাবে আল্লা ভগবানে যারা।।