দাদ্‌রা

  • নিরুদ্দেশের পথে আমি হারিয়ে যাদি যাই

    বাণী

    	নিরুদ্দেশের পথে আমি হারিয়ে যাদি যাই
    	নিত্য নূতন রূপে আবার আসবো এই হেথাই।।
    	চাঁদনী রাতের বাতায়নে, রইবে চেয়ে উদাস মনে
    	বলবো আমি হারাইনি গো, নাই ভাবনা নাই
    	আকাশ থেকে তারার চোখে তোমার পানে চাই।।
    তুমি	আকুল হয়ে ফিরবে কেঁদে যে বনপথ বেয়ে'
    	ঝরা মুকুল হয়ে আমি সে পথ দেব ছেয়ে।
    ‌	তোমায়ভালোবেসে সাধ মেটেনি স্বামী
    	মরেও মরতে পারব না তাই আমি
    	দূরে গিয়ে দেখবো তোমায় কাছে যদি পাই।।
    

  • নিশি কাজল শ্যামা আয় মা

    বাণী

    	নিশি কাজল শ্যামা আয় মা নিশীথ রাতে।
    	যেমন কালো বাদল নামে নীল আকাশের নয়নপাতে।।
    	কুল-কুণ্ডলিনী রূপে ওঠ মা জেগে চুপে চুপে,
    	মা ছেলেতে যাব মা চল্‌ ভোলানাথের ঘুম ভাঙাতে।।
    	তোর বরাভয় রূপ দেখায়ে দূর কর মা আঁধার ভীতি,
    	কৃষ্ণা চতুর্দশীতে মা দেখা পূর্ণ চাঁদের জ্যোতি।
    	পাতার কোলে কুঁড়ি সম মাগো হৃদয় কমল মম
    তোর	চরণ অরুণ দেখার আশায় রাত্রি জাগে রাতের সাথে।।
    
  • নিশি না পোহাতে যেয়ো না যেয়ো না

    বাণী

    নিশি না পোহাতে যেয়ো না যেয়ো না দীপ নিভিতে দাও।
    নিবু-নিবু প্রদীপ নিবুক হে পথিক ক্ষণিক থাকিয়া যাও॥
    ঢুলিয়া পড়িতে দাও ঘুমে অলস আঁখি ক্লান্ত করুণ কায়,
    সুদূর নহবতে বাঁশরি বাজিতে দাও উদাস যোগিয়ায়।
    	হে প্রিয় প্রভাতে ও-রাঙা পায়
    	বকুল ঝরিয়া মরিতে চায়,
    তব হাসির আভায় তরুণ অরুণ প্রায় দিক রাঙিয়ে যাও॥
    
  • নিশিদিন তব ডাক শুনিয়াছি মনে মনে

    বাণী

    নিশিদিন তব ডাক শুনিয়াছি মনে মনে
    শ্রবণে শুনিনি আহ্বান তব পবনে শুনেছি বনে বনে।।
    	হে বিরহী তব আতাস
    	পাণ্ডু করেছে তোমার আকাশ
    বিজনে তোমারে করিয়াছি ধ্যান শুধা যে ফিরিনি জনে জনে।।
    সকলে যখন ঘুমায়ে পড়েছে আধ রাতে
    স্মৃতি মঞ্জুষা খুলিয়া দেখেছি নিরালাতে।
    	যদি তব ছবি ম্লান হয়ে যায়
    	অশ্রু সলিলে ধুয়ে রাখি তায়
    দেবতা তোমারে মৌন পূজায় নীরবে ধেয়াই নিরজনে।।
    
  • নিশীথ-স্বপন তোর ভু’লে যা

    বাণী

    নিশীথ-স্বপন তোর ভু’লে যা নিশি-শেষে।
    বাদল-অবসানে আকাশ উঠেছে হেসে।।
    চখার পাশে আসে বিরহ-রাতের চখি
    আঁধার লুকাল ঐ দূর বনে এলোকেশে।।
    শরম-রাঙা গালে জাগিল কুমারী ঊষা,
    তরুণ অরুণ ঐ এসো রাঙা বর-বেশে।।
    
  • নীল আকাশের কোলে শুয়ে হেরে

    বাণী

    নীল আকাশের কোলে শুয়ে হেরে শ্রান্ত মেঘের দল,
    পল্লবে-ফুলে পূর্ণ হ’লো কি ধরণীর অঞ্চল।।
    	দেয়া গরজে না, উপবনে তাই
    	বেণী-বন্ধনে কেয়া ফুল নাই,
    গুণ্ঠন খুলি’ প্রকৃতি হাসিছে, মেলি’ এলো-কুন্তল।।
    সায়র ছেয়েছে শাপ্‌লা শালুকে, ‘নায়রে’ চলেছে বৌ,
    বৌ-কথা-কও ডাকে ফুলবনে, ঝরে মমতার মৌ।
    	বাজে আনন্দ-বেণু শারদীয়া
    	মিলন পিয়াসি ডাকে পিয়া পিয়া,
    সৌরভ-মধু ভারে বেদনায় কার প্রেম-শতদল, করে টলমল।।
    
  • নীল যমুনা সলিল কান্তি

    বাণী

    নীল যমুনা সলিল কান্তি চিকন ঘনশ্যাম।
    তব শ্যামরূপে শ্যামল হল সংসার ব্রজধাম।।
    রৌদ্রে পুড়িয়া তপিতা অবনি
    চেয়েছিল শ্যাম-স্নিগ্ধা লাবনি,
    আসিলে অমনি নবনীত তনু
    ঢলঢল অভিরাম চিকন ঘনশ্যাম।।
    আধেক বিন্দু রূপ তব দুলে ধরায় সিন্ধুজল
    তব বেণু শুনি’, ওগো বাঁশুরিয়া,
    প্রথম গাহিল কোকিল পাপিয়া,
    হেরি কান্তার-বন-ভুবন ব্যাপিয়া
    বিজড়িত তব নাম; চিকন ঘনশ্যাম।।
    
  • নেহি তোড়ো ইয়ে ফুলোঁ কি

    বাণী

    নেহি তোড়ো ইয়ে ফুলোঁ কি ডালি রে হা।
    মালি ভোমরা বুলবুল তেরি গালি রে হা।।
    যাও সওতন কে পাশ শুনো ভিগা ভিগা বাত
    ম্যায়তো হোনেকা চাহতি হুঁ প্রীত বিমার —
    আভি চাহ ফেকা যায়েগা কালীরে হা।।
    হায়রে হায় বান্দা আব দালা যৌবন আভি
    আভি ফুলো মে নেহি আয়ি হ্যায় সৌগন্ধ,
    আভি গালো পে আয়ি নেহি লালীরে হা।।
    নেহি আও আভি নাজানে পাও নেহি বাত
    আভি ছোটি হ্যায় ফুল কলি কাচ্চা আনার
    যৌবন সে ম্যায় অব তক আনজানে হা।।
    
  • পদ্মদীঘির ধারে ধারে ঐ

    বাণী

    	পদ্মদীঘির ধারে ধারে ঐ সখি লো কমল-দীঘির পারে।
    	আমি জল নিতে যাই সকাল সাঁঝে সই,
    সখি, 	ছল ক'রে সে মাছ ধরে, আর, চায় সে বারে বারে।।
    	মাছ ধরে সে, বঁড়শী আমার বুকে এসে বেঁধে,
    			ওলো সই বুকে এসে বেঁধে,
    আর,	চোখের জল কলসি আমার সই, আমি ভরাই কেঁদে কেঁদে
    				সই যত দেখি তা'রে।।
    	ছিপ নিয়ে যায় মাছ জলে তার (ওলো সই) তাকায় না তা’র পানে
    	মন ধরে না মীন ধরে সে সখি লো সেই জানে।
    	মন-ভিখারি মীন-শিকারি মুখের পানে চায়,
    			সখি লো চোখের পানে চায়,
    আমি	বঁড়শী-বেঁধা মাছের মত (গো)
    			সখি ছুটিয়া মরি হায়, অকূল পাথারে।।
    
  • পদ্মার ঢেউ রে

    বাণী

    পদ্মার ঢেউ রে —
    মোর শূণ্য হৃদয়–পদ্ম নিয়ে যা, যা রে।
    এই পদ্মে ছিল রে যার রাঙ্গা পা
    আমি হারায়েছি তারে।।
    মোর পরান–বঁধু নাই, পদ্মে তাই মধু নাই (নাই রে)
    বাতাস কাঁদে বাইরে, সে সুগন্ধ নাই রে
    মোর রূপের সরসীতে আনন্দ–মৌমাছি নাহি ঝঙ্কারে রে।।
    ও পদ্মারে —
    ঢেউয়ে তোর ঢেউ ওঠায় যেমন চাঁদের আলো
    মোর বঁধুয়ার রূপ তেমনি ঝিল্‌মিল করে কৃষ্ণ–কালো।
    সে প্রেমের ঘাটে ঘাটে বাঁশি বাজায়
    যদি দেখিস্‌ তারে, দিস্‌ এই পদ্ম তার পায়
    বলিস্‌, কেন বুকে আশার দেয়ালি জ্বালিয়ে
    ফেলে গেল চির–অন্ধকারে।
    
  • পরদেশি বঁধুয়া এলে কি এতদিনে

    বাণী

    পরদেশি বঁধুয়া, এলে কি এতদিনে
    আসিলে এতদিন কেমনে পথ চিনে।।
    তোমারে খুঁজিয়া কত রবি-শশী
    অন্ধ হইল প্রিয় নিভিল তিমিরে
    তব আশে আকাশ-তারা দ্বীপ জ্বালি'
    জাগিয়াছে নিশি ঝুরিয়া শিশিরে।
    শুকায়েছে স্বরগ দেবতা তোমা বিনে।।
    কত জনম ধরি' ছিলে বল পাসরি'
    এতদিনে বাঁশরি বাজিল কি বিপিনে।।
    
  • পরমাত্মা নহ তুমি মোর

    বাণী

    পরমাত্মা নহ তুমি মোর (তুমি) পরমাত্মীয় মোর।
    হে বিপুল বিরাট! মোর কাছে তুমি, প্রিয়তম চিতচোর॥
    তোমারে যে ভয় করে হে বিশ্বত্রাতা
    তার কাছে তুমি রুদ্র দন্ডদাতা,
    প্রেমময় বলে তোমারে যে বাসে ভালো
    তার কাছে তুমি মধুর লীলা কিশোর॥
    দ্যাখে ভীরু চোখ আষাঢ়ের মেঘে বজ্র তব বিপুল,
    মোর মালঞ্চে সেই মেঘে হেরি, ফোটায় নবমুকুল।
    আকাশের নীল অসীম পদ্ম পরে
    চরণ রেখেছ, হে মহান লীলা ভরে
    সেই অনন্ত জানি না কেমন ক’রে
    আমার হৃদয়ে খেল দিবানিশি ভোর॥
    
  • পরান-প্রিয় কেন এলে অবেলায়

    বাণী

    পরান-প্রিয়! কেন এলে অবেলায়
    শীতল হিমেল বায়ে ফুল ঝ’রে যায়।।
    	সেদিনও সকাল বেলা
    	খেলেছি কুসুম–খেলা,
    আজি যে কাঁদি একেলা ভাঙ্গা এ মেলায়।।
    
  • পলাশ ফুলের মউ পিয়ে ঐ

    বাণী

    পলাশ ফুলের মউ পিয়ে ঐ বউ-কথা-কও উঠ্ল ডেকে।
    শিশ্ দিয়ে যায় উদাস হাওয়া নেবু-ফুলের আতর মেখে।।
    	এমন পূর্ণ চাঁদের রাতি
    	নেই গো আমার জাগার সাথী,
    ফুল-হারা মোর কুঞ্জ-বীথি — কাঁটার স্মৃতি গেছে রেখে।।
    	শূন্য মনে এক্‌লা গুণি
    	কান্না-হাসির পান্না-চুণী,
    বিদায়-বেলার বাঁশি শুনি — আস্‌ছে ভেসে ওপার থেকে।।
    

    ১. শঙ্করা মিশ্র — দাদ্‌রা, ২. সাথে।

  • পান্‌সে জোছ্‌নাতে কে চল গো

    বাণী

    পান্‌সে জোছ্‌নাতে কে			চল গো পানসি বেয়ে’।
    ঢেউ-এর তালে তালে			বাঁশিতে গজল গেয়ে’।।
    মেঘের ফাঁকে ফোটে			বাঁকা শশীর চিকন হাসি,
    উজান বেয়ে চল			তুমি কি তার চোখে চেয়ে।।
    ও-পারে লুকায়ে আঁধার		গভীর ঘন বন-ছায়,
    আকাশে হেলান দিয়ে			আলসে পাহাড় ঘুমায়।
    ঘুমায়ে দূরে সে কোন গ্রাম		বাসরে পল্লী-বধূর প্রায়
    এ-পারে ধূ-ধূ বালুচর			যেন নদীর আঁচল লুটায়।
    ছাড়ি’ এ সুখ-বাস			চলেছ কোথায় গো নেয়ে।।
    নদীর দু’তীরে টানে			বেতস-লতা উত্তরীয়,
    চমকি’ উঠি’ চখি			ডাকে মুহু মুহু ‘কিও!’
    চকোরী চাঁদে ভুলি’			চাহে তব মুখপানে,
    কেঁদে পাপিয়া শুধায়,			‘পিউ কাঁহা, কাঁহা পিও।’
    তুমি যাও আপন-বিভোল		স্বপনে নয়ন ছেয়ে’।।
    
  • পাপিয়া আজ কেন ডাকে সখি

    বাণী

    পাপিয়া আজ কেন ডাকে সখি, পিয়া পিয়া।
    শুনি’, পিয়া পিয়া বোল্‌ ঝুরিছে আমার হিয়া।।
    এমনি মধুরাতি, ছিল সে মোর সাথি,
    সেদিন পাপিয়া এমনি উঠিত ডাকিয়া
    সে কি আজ এলো তবে, চাঁদের মত নীরবে
    হাসির জোছনাতে তার দশদিশি রাঙাইয়া।।
    

    নাটকঃ ‘সর্বহারা’

  • পায়ে বিঁধেছে কাঁটা সজনী ধীরে চল

    বাণী

    পায়ে বিঁধেছে কাঁটা সজনী ধীরে চল।
    	ধীরে ধীরে ধীরে চল।
    চলিতে ছলকি' যায় ঘটে জল ছল ছল।।
    	একে পথ আঁকাবাঁকা
    	তাহে কন্টক -শাখা
    আঁচল ধ'রে টানে, টলে তনু টলমল।।
    	ভরা যৌবন-তরী,
    	তাহে ভরা গাগরি,
    বুঝি হয় ভরা-ডুবি, ছি ছি বল এ কি হলো।।
    	পথের বাঁকে ও কে
    	হাসে ডাগর চোখে,
    হাসিবে পথের লোকে সখি স'রে যেতে বল।।
    
  • পালিয়ে তুমি বেড়াবে কি এমনিভাবে

    বাণী

    পালিয়ে তুমি বেড়াবে কি এমনিভাবে
    এমনি ক'রে জনম কি মোর কেঁদেই যাবে।।
    	ওগো চপল বনের পাখি
    	ধরা তুমি দেবে না কি,
    অন্তরালে থাকি' শুধু গান শোনাবে।।
    কেন এলে নিঠুর তুমি পথিক হাওয়া
    তোমার স্বভাব ফুল ফুটিয়েই ঝরিয়ে যাওয়া
    	হে বিরহী, লীলা-চত্বর,
    	অশ্রু কি মোর এতই মধুর!
    কবে এসে আমার অভিমান ভাঙাবে।।
    

  • পাষাণের ভাঙালে ঘুম

    বাণী

    	পাষাণের ভাঙালে ঘুম			কে তুমি সোনার ছোঁয়ায়,
    	গলিয়া সুরের তুষার			গীতি –নির্ঝর ব’য়ে যায়।।
    	উদাসী বিবাগী মন			যাচে আজ বাহুর বাঁধন,
    	কত জনমের কাঁদন			ও –পায়ে লুটাতে চায়।।
    ওগো	তোমার চরণ ছন্দে মোর		মুঞ্জরিল গানের মুকুল
    	তোমার বেণীর বন্ধে গো		মরিতে চায় সুরের বকুল
    	চম্‌কে ওঠে মোর গগন		ঐ হরিণ–চোখের চাওয়ায়।।
    
  • পিয়া পাপিয়া পিয়া বোলে

    বাণী

    পিয়া পাপিয়া পিয়া বোলে।
    ‘পিউ পিউ পিউ কাঁহা’ পাপিয়া পিয়া বোলে।।
    সে পিয়া পিয়া সুরে বাদল ঝুরে, নদী-তরঙ্গ দোলে।
    কূলে কূলে কুলু কুলু নদী-তরঙ্গ দোলে।
    ফুটিল দল মেলি’ কেতকী, বেলি, শিখী পেখম খোলে।
    দু’লে দু’লে দু’লে নেচে’ শিখী পেখম খোলে।।
    পিয়ায় যা’রা নাহি পেল হেথায়, তাহারা কি
    এসেছে ধরায় পুন হইয়া পাপিয়া পাখি?
    দেখিয়া ঘরে ঘরে তরুণীর কালো আঁখি
    ‘পিউ কাঁহা পিউ কাঁহা’ আজিও উঠিছে ডাকি’!
    পিয়া পাপিয়া পিয়া বোলে।।