দরবারী কানাড়া

  • আজি ঘুম নহে নিশি জাগরণ

    বাণী

    আজি	ঘুম নহে, নিশি জাগরণ।
    	চাঁদেরে ঘিরি’ নাচে ধীরি ধীরি তারা অগণন।।
    	প্রখর-দাহন দিবস-আলো,
    	নলিনী-দলে ঘুম তখনি ভালো।
    	চাঁদ চন্দন চোখে বুলালো
    		খোলো গো নিঁদ-মহল-আবরণ।।
    	ঘুরে ঘুরে গ্রহ, তারা, বিশ্ব, আনন্দে
    	নাচিছে নাচুনি ঘূর্ণির ছন্দে।
    	লুকোচুরি-নাচ মেঘ তারা মাঝে
    	নাচিছে ধরণী আলোছায়া-সাজে,
    	ঝিল্লির ঘুমুর ঝুমুঝুমু বাজে
    		খুলি’ খুলি’ পড়ে ফুল-আভরণ।।
    
  • আমায় যারা দেয় মা ব্যথা

    বাণী

    আমায় যারা দেয় মা ব্যথা আমায় যারা আঘাত করে,
    	তোরই ইচ্ছায় ইচ্ছাময়ী!
    আমায় যারা ভালবাসে বন্ধু ব’লে বক্ষে ধরে, -
    	তোরই ইচ্ছায় ইচ্ছাময়ী!!
    	আমার আপমান করে যে
    	মাগো তোরই ইচ্ছা সে যে
    আমায় যারা যায় মা ত্যেজে যারা আমার আসে ঘরে,
    	তোরই ইচ্ছায় ইচ্ছাময়ী॥
    আমার ক্ষতি করতে পারে অন্য লোকের সাধ্য কি মা;
    দুঃখ যা পাই তোরই সে দান, মাগো সবই তোর মহিমা!
    	তাই পায়ে কেহ দলে যবে
    	হেসে সয়ে যাই নীরবে,
    কে কারে দুখ্ দেয় মা কবে তোর আদেশ না পেলে পরে
    তোরই ইচ্ছায় ইচ্ছাময়ী!!
    
  • ওমা ত্রিনয়নী! সেই চোখ দে

    বাণী

    	ওমা ত্রিনয়নী! সেই চোখ দে যে-চোখ তোরে দেখতে পায়।
    	সে নয়ন-তারায় কাজ কি তারা যে-তারা লুকায় মা তারায়।।
    আমি 	চাইনে সে-চোখ যে-চোখ দেখে মায়া
    	অনিত্য এই সংসারেরই ছায়া,
    	যে-দৃষ্টি দেখে নিত্য তোরে সেই দৃষ্টি দে আমায়।।
    ওমা 	নিবিয়ে দে এই নয়ন-প্রদীপ দেখায় যাহা দুঃখ শোক,
    	এই আলেয়া পথ ভুলিয়ে যায় মা নিয়ে নরক-লোক।
    	তোর সৃষ্টি চির-আনন্দময় নাকি
    	দেখব সে-লোক, দে মোরে সেই আঁখি,
    	দেখে না রোগ-মৃত্যু-জ্বরা তোর সন্তান সেই দৃষ্টি চায়।।
    
  • ওর নিশীথ-সমাধি ভাঙিও না

    বাণী

    ওর নিশীথ-সমাধি ভাঙিও না।
    মরা ফুলের সাথে ঝরিল যে ধূলি-পথে —
    সে আর জাগিবে না, তারে ডাকিও না।।
    তাপসিনী-সম তোমারি ধ্যানে
    সে চেয়েছিল তব পথের পানে,
    জীবনে যাহার মুছিলে না আঁখি ধার আজি তাহার পাশে কাঁদিও না।।
    মরণের কোলে সে গভীর শান্তিতে পড়েছে ঘুমায়ে,
    তোমারি তরে গাঁথা শুকানো মালিকা বক্ষে জড়ায়ে
    যে মরিয়া জুড়ায়েছে, ঘুমাইতে দাও তারে জাগিও না।।
    

  • কেন মেঘের ছায়া আজি চাঁদের চোখে

    বাণী

    কেন মেঘের ছায়া আজি চাঁদের চোখে?
    মোর বুকে মুখ রাখি ঝড়ের পাখি সম কাঁদে ওকে?
    গভীর নিশীথের কন্ঠ জড়ায়ে
    শ্রান্ত কেশভার গগনে ছড়ায়ে,
    হারানো প্রিয়া মোর এলো কি লুকায়ে
    		আমার একা ঘরে ম্লান আলোকে॥
    গঙ্গায় তারি চিতা নিভেছে কবে,
    মোর বুকে সেই চিতা আজো জ্বলে নীরবে;
    স্মৃতির চিতা তার নিভিবে না বুঝি আর
    		কোন সে জনমে কোন সে লোকে॥
    
  • ভুল ক'রে যদি ভালোবেসে থাকি

    বাণী

    ভুল ক'রে যদি ভালোবেসে থাকি ক্ষমিও সে অপরাধ।
    অসহায় মনে কেন জেগেছিল ভালবাসিবার সাধ।।
    	কত জন আসে তব ফুলবন
    	মলয়, ভ্রমর, চাঁদের কিরণ, —
    তেমনি আমিও আসি অকারণ অপরূপ উন্মাদ।।
    তোমার হৃদয়-শূন্যে জ্বলিছে কত রবি শশী তারা,
    তারি মাঝে আমি ধূমকেতু সম এসেছিনু পথহারা।
    	তবু জানি প্রিয় একদা নিশীথে
    	মনে পড়ে যাবে আমারে চকিতে,
    সহসা জাগিবে উৎসব-গীতে সকরুণ অবসাদ।।
    
  • স্মরণ-পারের ওগো প্রিয়

    বাণী

    স্বরণ-পারের ওগো প্রিয়, তোমায় আমি চিনি যেন
    তোমায় চাঁদে চিনি আমি, তুমি আমায় তারায় চেন॥
    	নূতন পরিচয়ের লাগি’
    	তারায় তারায় থাকি জাগি’
    বারে বারে মিলন মাগি, বারে বারে হারাই হেন॥
    নূতন চোখের প্রদীপ জ্বালি’ চেয়ে আছি নিরিবিলি,
    খোলো প্রিয় তোমার ধরার বাতায়নের ঝিলি-মিলি।
    	নিবাও নিবু-নিবু বাতি,
    	ডাকে নূতন তারার ভাতি,
    ওগো আমার দিবস রাতি কাঁদে বিদায়-কাঁদন কেন॥
    

    নাটিকাঃ ‌‘ঝিলিমিলি’