ফের্‌তা

  • বাজিয়ে বাঁশি মনের বনে

    বাণী

    বাজিয়ে বাঁশি মনের বনে এসো কিশোর বংশীধারী।
    চূড়ায় আঁধার ময়ূর-পাখা বামে লয়ে রাধাপ্যারী।।
    	আমার আঁধার প্রাণের মাঝে
    	এসো অভিসারের সাজে,
    নয়ন-জলের যমুনাতে উজান বেয়ে ছুটুক বারি।।
    এমনি চোখে তোমায় আমি দেখতে যদি না পাই হরি,
    দেখাও পদ্মপলাশ আঁখি, তোমার প্রেমে অন্ধ করি’।
    হরি হে, ঘুচাও এবার মায়ার বেড়ী,
    	পরাও তিলক কলঙ্কেরি,
    শ্যাম রাখি কি কুল রাখি’ ভাব শ্যাম হে আর সইতে নারি।।
    
  • বাজে মঞ্জুল মঞ্জির রিনিকি ঝিনি

    বাণী

    বাজে মঞ্জুল মঞ্জির রিনিকি ঝিনি
    নীর ভরণে চলে রাধা বিনোদিনী
    তার চঞ্চল নয়ন টলে টলমল
    যেন দু'টি ঝিনুকে ভরা সাগর জল।।
    ও সে আঁখি না পাখি গো
    রাই ইতি-উতি চায়
    কভু তমাল-বনে কভু কদম-তলায়।
    রাই শত ছলে ধীরে পথ চলে কভু কন্টক বেঁধে চরণে
    তবু যে কাঁটা-লতায় আঁচল জড়ায় বেণী খুলে যায় অকারণে।
    গিয়ে যমুনার তীরে চায় ফিরে ফিরে আনমনে ব'সে গণে ঢেউ
    চকিতে কলসি ভরি’লয় তার যেই মনে হয় আসে কেউ।
    হায় হায় কেউ আসে না
    “ভোলো অভিমান রাধারানী” বলি’ শ্যাম এসে সম্ভাষে না।
    রাই চলিতে পারে না পথ আর,
    বিরস বদন অলস চরণ শূন্য-কলসি লাগে ভার।
    বলি,কালা নাহি এলো যমুনা তো ছিল লইয়া শীতল কালো জল।
    কেন ডুবিয়া সে-কলে উঠিলি আবার কাঁদায়ে ভাসাতে ধরাতল।।
    

  • বাঁধিয়া দুইজনে দুঁহু ভুজ

    বাণী

    বাঁধিয়া দুইজনে দুঁহু ভুজ বন্ধনে কাঁদিছে শ্যাম রাই।
    মিলনের মাঝে এত বেদনা যে বাজে গো – দেখি নাই, শুনি নাই।।
    সাগরে মিশে নদী, তবু কাঁদে নিরবধি, বুঝি না কেন গো –
    বুকে যত পায়, তত তৃষ্ণা বেড়ে যায়, সাধ মেটে না যেন গো।।
    সাধ কি মেটে গো চাঁদকে হেরে চকোরিণীর সাধ কি মেটে গো –
    মেঘ দেখে চাতকিনীর সাধ কি মেটে গো।
    হের, নব নাগরি নব নাগর মাতিল প্রেম-রসে,
    নব প্রভাত-কমলে যেন বন ভ্রমর বসে।
    নব সোনার শতদলে যেন নব মেঘের ছায়া
    কনকমালা ঘিরিল যেন বন নীল গিরি কায়া।
    গিরিধারীরে ধরিল, ধিরিধিরি রাধা গিরিধারীরে ধরিল।।
    আধ অধরে ধরে নাক’ হাসি, আধ-অধরে বাঁশি,
    হেরি’ আধ অঙ্গ দাস হতে চায়, আধ অঙ্গ দাসী;
    শ্রীচরণ ঘিরিয়া মন মধুকর গাহে, চরণাম্বুজ-রজ মাধুকরী চাহে।।
    বলে, ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও –
    ওই চরণ কমল-মধু ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও,
    ঐ যুগল-রূপ রাধা-শ্যাম দেখি যেন অবিরাম (ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও)
    আমি আনন্দ-যমুনা হয়ে, চরণ ধুয়ে যাব বয়ে, (ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও)
    আমি নিত্য হৃদি-ব্রজধামে
    হেরিব মোর রাধা-শ্যামে, (ভিক্ষা দাও, ভিক্ষা দাও)।।
    

    বেতার গীতিচিত্রঃ ‌‘যুগল মিলন’

  • বাঁশিতে সুর শুনিয়ে নূপুর রুনঝনিয়ে

    বাণী

    বাঁশিতে সুর শুনিয়ে নূপুর রুনঝনিয়ে
    	এলে আজি বাদলপ্রাতে।
    কদম কেশর ঝুরে পুলকে তোমার পায়ে,
    তমাল বিছায়ে ছায়া শ্যামল আদুল গায়ে।
    অলকা পথ বাহি আসিলে মেঘের নায়ে,
    নাচের তালে বাজিয়া ওঠে চুড়ি কাঁকন হাতে।।
    ধানি রঙের শাড়ি ফিরোজা রঙ উত্তরীয়
    প'রেছি এ শ্রাবণ দোলাতে দুলিতে প্রিয়।
    কেশের কমল-কলি, বনমালী, তুলিয়া আদরে
    চাঁচর চিকুরে আপনি পরিও
    তোমার রূপের কাজল পরায়ো আমার আঁখি পাতে।।
    
  • বিদেশি অতিথি সিন্ধু পারে

    বাণী

    পুরুষ 	: 	বিদেশি অতিথি সিন্ধু পারে পথহারা ফিরি দ্বারে দ্বারে।
    স্ত্রী 		: 	বাইরে হিম ঝরে ঝিম্ ঝিম্ ঝিম্ বন্ধু এসো এপারে।।
    পুরুষ 	: 	তোমারে বুঝি না বুঝি বা আধেক
    স্ত্রী 		: 	নয়নের ভাষা বঁধু সব দেশে এক,
    পুরুষ 	: 	তুমি ঊষা, ল’য়ে তুষার কর খেলা — ভোরবেলা।
    স্ত্রী 		: 	পুবের তপন সম রাঙাও জীবন মম তোমার কিরণধারে।।
    পুরুষ 	: 	তব কণ্ঠে সুর শুনি হায় সকরুণ স্মৃতি জাগায়,
    স্ত্রী 		: 	বিদেশি চেরী-কুসুমের মালিকা লহ গলায়।
    উভয়ে	:	চল যাই যেথা নাই দেশের বন্ধন
    			নাহি গো ক্রন্দন,
    			নিরুদ্দেশের পথে প্রেম অভিসারে।।
    
  • বিদেশিনী বিদেশিনী চিনি চিনি

    বাণী

    বিদেশিনী বিদেশিনী চিনি চিনি
    ঐ চরণের নূপুর রিনিঝিনি॥
    দীপ জেগে ওঠে পাথার জলে তোমার চরণ-ছন্দে,
    নাচে গাঙচিল সিন্ধু-কপোত তোমারি সুরে আনন্দে।
    মুকুতা কাঁদিছে হার্‌ হ’তে ওগো তোমার বেণীর বন্ধে।
    মলয়ে শুনেছি তোমার বলয় চুড়ির রিনিঠিনি॥
    সাগর-সলিল হয়েছে সুনীল তোমার তনুর বর্ণে,
    তোমার আঁখির আলো ঝলমল দেবদারু তরু-পর্ণে।
    অস্ত-তপন হয়েছে রঙিন তোমার হাসির স্বর্ণে
    শঙ্খ-ধবল বেলাভূমে খেল সাগর-নটিনী॥
    
  • ব্রজের দুলাল ব্রজে আবার

    বাণী

    ব্রজের দুলাল ব্রজে আবার আসবে ফিরে কবে?
    জাগবে কি আর ব্রজবাসী ব্যাকুল বেণুর রবে?
    	বাজবে নূপুর তমাল-ছায়ায়
    	বইবে উজান হৃদ্‌-যমুনায়,
    অভাগিনী রাধার কি আর তেমন সুদিন হবে? সখী গো!
    গোঠে নাহি যায় রাখালেরা আর লুটায়ে কাঁদে পথের ধূলায়,
    ধেনু ছুটে যায় মথুরা পানে না হেরি গোঠে রাখাল-রাজায়।
    উড়িয়া গিয়াছে শুক-সারি পাখি শুনি না কৃষ্ণ-কথা (আর),
    শ্যাম-সহকার তরুরে না-হেরি শুকালো মাধবী-লতা।
    শ্যাম বিনে নাই সে শ্যাম-কান্তি, শুকায়েছে সব।
    কদম তমাল তরু পল্লব হাসি উৎসব শুকায়েছে সব। সখি গো —
    চির-বসন্ত ছিল যথা আজ সেথা শূন্যতা হাহাকার রবে কাঁদে শ্যাম (হে)
    ললিতা বিশাখা নাই, নাই চন্দ্রাবলী নাই ব্রজে শ্রীদাম সুদাম। (সখী গো)
    
  • ভুলি কেমনে আজো যে মনে

    বাণী

    ভুলি কেমনে	আজো যে মনে
    বেদনা-সনে	রহিল আঁকা।
    আজ সজনী	দিন রজনী
    সে বিনে গনি	সকলি ফাঁকা।।
    আগে মন		করলে চুরি
    মর্মে শেষে		হানলে ছুরি
    এত শঠতা		এত যে ব্যথা
    তবু যেন তা	মধুতে মাখা।।
    চকোরী		দেখলে চাঁদে
    দূর থেকে সই	আজো কাঁদে
    আজো বাদলে	ঝুলন ঝুলে
    তেমনি জলে	চলে বলাকা।।
    বকুলের		তলায় দোদুল
    কাজলা মেয়ে	কুড়োয় লো ফুল
    চলে নাগরী	কাঁখে গাগরি
    চরণ ভারি		কোমর বাঁকা।।
    ডালে তোর	করলে আঘাত
    দিস্ রে কবি	ফুল সওগাত
    ব্যথা-মুকুলে	অলি না ছুঁলে
    বনে কি দুলে	ফুল-পতাকা।।
    
  • মণি-মঞ্জির বাজে অরুণিত চরণে

    বাণী

    মণি-মঞ্জির বাজে অরুণিত চরণে সখি
    রুনু ঝুনু রুনু ঝুনু মণি-মঞ্জির বাজে।
    হের গুঞ্জা-মালা গলে বনমালী চলিছে কুঞ্জ মাঝে।।
    চলে নওল কিশোর,
    হেলে দুলে চলে নওল কিশোর।
    হেরি সে লাবনি কৌস্তুভমণি নিষ্প্রভ হ’ল লাজে।
    চরণ-নখরে শ্যামের আমার চাঁদের মালা বিরাজে।। সখি গো —
    বঁধূর চলার পথে পরান পাতিয়া র’ব চলিতে দলিয়া যাবে শ্যাম;
    আমি হইয়া পথের ধূলি বক্ষে লইব তুলি’ চরণ-চিহ্ন অভিরাম।
    ভুলে যা তোরা রাধারে কৃষ্ণ-নিশির আঁধারে
    হারায়ে সে গেছে চিরতরে,
    কালো যমুনার জলে ডুবেছে সে অতল তলে
    ভেসে গেছে সে শ্যাম-সাগরে।।
    ঐ বাঁশি বাজিছে শোন রাধা ব’লে,
    তরুণ তমাল চলে, অঙ্গ-ভঙ্গে শিখি-পাখা টলে।
    তা’র হাসিতে বিজলি, কাজল-মেঘে যেন উঠিছে উছলি’।
    রূপ দেখে যা দেখে যা,
    কোটি চাঁদের জোছনা-চন্দন মেখে যা, মোর শ্যামলে দেখে যা।।
    
  • মদির আবেশে কে চলে ঢুলুঢুলু আঁখি

    বাণী

    মদির আবেশে কে চলে ঢুলুঢুলু আঁখি।
    			মদির কার আঁখি
    হেরিয়া পাপিয়া উঠিছে পিউ পিউ ডাকি’।।
    আল্‌তা-রাঙা পায়ে আল্পনা আঁকে,
    পথের যত ধূলি তাই বুক পেতে থাকে,
    দু’ধারে তরুলতা দেয় চরণ ফুলে ফুলে ঢাকি’।।
    তা’রি চোখের চাওয়ায় গো দেলা লাগে হাওয়ায়,
    তালীবন তাল দিয়ে যায় তাল-ফের্‌তায় দোলা লাগে হাওয়ায়।
    আকুল তানে গাহে বকুল-বনের পাখি।।
    তারি মুখ-মদের ছিটে যোগায় ফুলে মধু মিঠে
    চাঁদের জৌলুসে তাহারি রওশন্‌ মাখি’।।
    
  • মা এলো রে মা এলো রে

    বাণী

    মা এলো রে, মা এলো রে, বরষ পরে আপন ছেলের ঘরে
    সাত কোটি ভাই বোন মিলিয়া আজি ডাকি আকুল স্বরে (মাগো আনন্দময়ী)
    মা এসেছে! মা এসেছে! আকাশ-পাতাল ‘পরে
    আনন্দ তাই ধরে না যে আজকে থরে থরে
    শিউলি ফুলের মত আজ আনন্দ গান করে।।
    কমল-মুকুল-শাপ্‌লা বনে ভ্রমর শোনায় গীতি —
    জাগো জাগো, আজকে মোদের আগমনীর তিথি;
    জল-তরঙ্গ বেজে ওঠে নদীর বালুচরে।।
    বুকের মাঝে বাঁশি বাজে অঝোর কলরোলে,
    দূর-প্রবাসী কাজ ভুলে আয় আপন মায়ের কোলে;
    আজকে পেলাম মাকে যেন কত যুগের পরে।।
    
  • মাকে আদর করে কালী বলি

    বাণী

    মাকে আদর করে কালী বলি সে সত্যি কালো নয় রে।
    তার ঈষৎ হাসির এক ঝলকে জগৎ আলো হয় রে,
    			ত্রি-জগৎ আলো হয় রে।।
    (কালো নয় কালো নয়, চরণে যার মহাকাল
    পায়ের নখে চাঁদের মালা, কালো নয় কালো নয়)
    			সত্যি কালো নয় রে।।
    (আমরা) আপনভোলা পাগলী গিরিবালা
    মুন্ডামালায় মনে করে কুন্দফুলের মালা;
    (রয়) মরা-ছেলে বুকের ধ’রে শ্মশানে তন্ময় রে,
    রয় শ্মশানে তন্ময় রে।
    শ্মশানে সে থাকে ব’লে ভয়ঙ্করী নয় রে!
    (ভবের) খেলা-শেষে সকলেরে দেয় সে বরাভয় রে।।
    (সে) মারে যাকে, মালা করে তারেও পরে রয় রে!
    (সেই) তামসিকও যায়রে তরে (মাকে) তামসী যে কয় রে।।
    
  • মার্‌হাবা সৈয়দে মক্কী-মদনী

    বাণী

    মার্‌হাবা সৈয়দে মক্কী-মদনী আল্-আরবি।
    বাদ্‌শারও বাদশাহ্ নবীদের রাজা নবী।।
    ছিলে মিশে আহাদে, আসিলে আহমদ হয়ে
    বাঁচাতে সৃষ্টি খোদার, এলে খোদার সনদ ল’য়ে,
    মানুষে উদ্ধারিলে মানুষের আঘাত সয়ে —
    মলিন দুনিয়ায় আনিলে তুমি যে বেহেশ্‌তী ছবি।।
    পাপের জেহাদ-রণে দাঁড়াইলে তুমি একা
    নিশান ছিল হাতে ‘লা-শরীক আল্লাহ্’ লেখা,
    গেল দুনিয়া হতে ধুয়ে মুছে পাপের রেখা —
    বহিল খুশির তুফান উদিল পুণ্যের রবি।।
    
  • মুরলী শিখিব ব'লে এসেছি কদম্ব তলে

    বাণী

    মুরলী শিখিব ব'লে এসেছি কদম্ব তলে
    মুরলীধারী মুরলী শিখাও হে
    কোন সুরে মধু-মাধবী ফোটে
    কোন সুরে রাধা নাম ওঠে
    মাধব হে! বাঁশির কোন সুরে
    উদাসী করে প্রাণ দাসী করে, মাধব হে —
    দেহ ময়ুর নাচে কোন সুর শুনিয়া
    মন-পাপিয়া গেয়ে ওঠে পিয়া পিয়া
    মোরে শিখাও সে সুর হে —
    যে সুরে তুমি নাচিবে, পিয়া ব'লে ডাকিবে
    মোরে শিখাও সে সুর হে বঁধু
    যে সুরে কেবল তব সাথে ভাব হয় অভাব রয় না
    আমি সেই সুর শিখিব
    যে সুর কৃষ্ণ ছাড়া কোন কথা কয় না
    কেন ছলছল চোখে চাও
    মুরলী শিখাও কেন হাত কাপে রসময়।
    যে সুর তোমার অধর পরশ লাগে
    সেই বেনু যেন চিরদিন রাধারই রয় বেনু শিখাও হে
    মোর দেহ মন ধায় যেন ধেনু সম তব পানে বেণু শিখাও হে।।
    
  • মোর মন ছুটে যায় দ্বাপর যুগে

    বাণী

    উভয়		:	মোর মন ছুটে যায় দ্বাপর যুগে দূর দ্বারকায় বৃন্দাবনে।
    স্ত্রী+উভয়ে	:	মোর মন হ’তে চায় ব্রজের রাখাল খেলতে রাখাল-রাজার সনে॥
    স্ত্রী		:	রূপ ধরে না বিশ্বে যাহার
    			দেখতে সাধ যায় কিশোর-রূপ তার
    পুরুষ		:	কেমন মানায় নরের রূপে অনন্ত সেই নারায়ণে॥
    স্ত্রী		:	সাজ্‌ত কেমন শিখী-পাখা বাজ্‌ত কেমন নূপুর পায়ে,
    পুরুষ		:	থির কেমনে থাক্‌ত ধরা নাচ্‌ত যখন তমাল-ছায়ে।
    উভয়		:	মা যশোদা বাঁধ্‌ত যখন কাঁদ্‌ত ভগবান কেমনে॥
    স্ত্রী		:	সাজ্‌ত কেমন বন-মালায় বিশ্ব যাহার অর্ঘ্য সাজায়;
    পুরুষ		:	যোগী-ঋষি পায় না ধ্যানে গোপ-বালা কেমনে পায়।
    উভয়		:	তেম্‌নি ক’রে কালার প্রেমে সব খোয়াব এই জীবনে॥
    
  • যদি শালের বন হ’ত শালার বোন

    বাণী

    যদি	শালের বন হ’ত শালার বোন,
    	ক’নে বউ হ’ত ঐ গৃহেরই কোণ,
    ছেড়ে	যেতাম না গো শালার বোন,
    আমি	থাকতাম পড়ে সদা, খেতাম না গো, শালার বোনথ —
    	বনে হারিয়ে যেতাম,
    	শালার বোন ঐ বৃন্দাবনে না হয় চারিয়ে যেতাম —
    	দাদা গো, ওগো দাদা —
    আর	মাকুন্দ হত যদি কুন্দবালা,
    হ’ত	দাড়িম্ব সুন্দরী দাড়িওয়ালা,
    আমি	ঝুলে যে পড়তাম দাড়ি ধ’রে তার —
    	জয়নাথ তরকনাথ বলে আমি ঝুলে যে পড়তাম দাড়ি ধ’রে,
    বাবা	দুগ্‌গা ব’লে আমি ঝুলে যে পড়তাম দাড়ি ধ’রে তার —
    	দাদা গো, ওগো দাদা —
    আহা	বাচ্চা হইত যদি চৌবাচ্চায়
    নিতি	পানকৌড়ি হ’য়ে ডুবে থাকিতাম তায়,
    যদি	দামড়ার ল্যাজ হ’ত কুন্তল দাম
    	বেণী রূপে ল্যাজ ধ’রে মাঠে দাঁড়াতাম — ঘুরে যে বেড়াতাম, তার
    	আমি ল্যাজ ধ’রে ঘুরে যে বেড়াতাম, দাদা গো —
    যদি	ভাগ্যগুণে এক মিলিল শালী —
    বাবা	বিশাল বপু তার সে যে বিশালী,
    ওযে	শালী নয় শালী নয়, শাল্মলী তরু সম
    	সে যে বিশালী গো, শাল্মলী তরু সম সে যে বিশালী গো —
    আহা	চিম্‌টি শালীর হ’ত বাবলা কাঁটা,
    হ’ত	শর-বন তার খ্যাংড়া ঝ্যাঁটা
    	খ্যাংড়া মেরে বিষ ঝেড়ে যে দিত গো —
    
  • যা সখি যা তোরা গোকুলে ফিরে

    বাণী

    যা সখি যা তোরা গোকুলে ফিরে।
    যে পথে শ্যামরায় চ’লে গেছে মথুরায়
    কাঁদিতে দে ল’য়ে সেই পথ ধূলিরে॥
    এ তো ধূলি নয়, ধূলি নয়
    হরি-চরণ-চিহ্ন-আঁকা এ যে হরি-চন্দন ধূলি নয়, ধূলি নয়
    এই ধূলি মাখিয়া,
    হ’য়ে পাগলিনী ফিরিব ‘শ্যাম শ্যাম’ ডাকিয়া।
    হব যোগিনী এই ধূলি-তিলক-আঁকিয়া॥ (সখি গো)
    শুনিয়াছি দূতি মুখে, প্রিয়তম আছে সুখে সেই মম পরম প্রসাদ।
    ভুলিয়া এ রাধিকায়, সে যদি সুখ পায় তার সে সুখে সাধিব না বাদ॥
    আমার দীরঘ শ্বাসে উৎসব-বাতি তার যদি নিভে যায়।
    তাই ওলো ললিতা আমি হব ধূলি-দলিতা যাব না লো তার মথুরায়॥
    আমি মথুরায় যাব, না গেলে মথুরাতে মোর শ্যামে আর ফিরে পাব না। (সখি গো)
    হারানো মানিক কভু ফিরে লোকে পায়
    হারানো হৃদয় ফিরে নাহি পাওয়া যায়॥
    
  • যাও যাও তুমি ফিরে

    বাণী

    	যাও যাও তুমি ফিরে এই মুছিনু আঁখি
    	কে বাঁধিবে তোমারে হায় গানের পাখি॥
    মোর	আজ এত প্রেম আশা এত ভালোবাসা
    	সকলি দুরাশা আজ কি দিয়া রাখি॥
    	তোমার বেঁধেছিল নয়ন শুধু এ রূপের জালে
    	তাই দুদিন কাঁদিয়া হায় এ বাঁধন ছাড়ালে।
    	আমার বাঁধিয়াছে হিয়া আমি ছাড়াব কি দিয়া
    	আমার হিয়া তো নয়ন নহে ও সে ছাড়ে না কাঁদিয়া,
    	ওগো দুদিন কাঁদিয়া।
    	এই অভিমান জ্বালা মোর একেলারি কালা
    	ম্লান মিলনেরি মালা দাও ধূলাতে ঢাকি॥
    
  • যায় ঝিলমিল্ ঝিলমিল্ ঢেউ তুলে

    বাণী

    যায়	ঝিল্‌মিল্ ঝিল্‌মিল্ ঢেউ তুলে দেহের কূলে
    	কে চঞ্চলা দিগঞ্চলা মেঘ-ঘন-কুন্তলা।
    	দেয় দোলা পুব-সমীরণে বনে বনে দেয় দোলা।।
    	চলে নাগরি দোলে ঘাগরি
    	কাঁখে বরষা-জলের গাগরি
    	বাজে নূপুর-সুর-লহরি
    	রিমি ঝিম্‌, রিম ঝিম্, রিম ঝিম্‌ চল-চপলা।।
    	দেয়ারই তালে কেয়া কদম নাচে
    	ময়ূর-ময়ূরী নাচে তমাল-গাছে।
    	এলায়ে মেঘ-বেণী কাল-ফণি
    	আসিল কি দেব-কুমারী নন্দন-পথ-ভোলা।।
    

  • রুমু রুমু রুমু ঝুমু ঝুমু বাজে নূপুর

    বাণী

    রুমু রুমু রুমু ঝুমু ঝুমু বাজে নূপুর
    তালে তালে দোদুল দোলে নাচের নেশায় চুর।।
    চঞ্চল বায়ে আঁচল উড়ায়ে
    চপল পায়ে ও কে যায়
    নাটনী কল তটিনীর প্রায়
    চিনি বিদেশিনী চিনি গো তায়
    শুনি’ ছন্দ তারি এ হিয়া ভরপুর।।
    নাচন শিখালে ময়ুর মরালে
    মরিচী-মায়া মরুতে ছড়ালে
    বন-মৃগের মন হেসে ভুলালে
    ডাগর আঁখির নাচে সাগর দুলালে।
    গিরিদরি বনে গো দোল লাগে নাচনের শুনে তারি সুর।।