কাহার্‌বা

  • তব গানের ভাষায় সুরে

    বাণী

    তব গানের ভাষায় সুরে বুঝেছি বুঝেছি বুঝেছি
    এত দিনে পেয়েছি তারে আমি যারে খুঁজেছি।।
    ছিল পাষাণ হয়ে গভীর অভিমান
    সহসা, এলো সহসা আনন্দ-অশ্রুর বান।
    বিরহ-সুন্দর হয়ে সেই এলো
    দেবতা বলে যাঁরে পুজেছি
    			বুঝেছি বুঝেছি বুঝেছি।।
    তোমার দেওয়া বিদায়ের মালা পুন প্রাণ পেল প্রিয়
    হ’য়ে শুভদৃষ্টি মিলন-মালিকা বুকে ফিরে এলো — এলো প্রিয়।
    	যাহারে নিষ্ঠুর বলেছি
    	নিশীথে গোপনে কেঁদেছি
    নয়নের বারি হাসি দিয়ে মুছেছি
    			বুঝেছি বুঝেছি বুঝেছি।।
    
  • তব চঞ্চল আঁখি কেন ছলছল হে

    বাণী

    তব	চঞ্চল আঁখি কেন ছলছল হে।
    	হেরি মোরা অবিরল জলে ভাসে কমল
    	হেরি আজি কমলে উথলে জল হে।।
    	চিরদিন কাঁদায়েছে যে জল নিঠুর
    আজি	অশ্রু করেছে তারে একি সুমধুর
    বঁধু	সাধ যায় ধরি তব সমুখে মুকুর
    যেন	বরষিছে চাঁদ মুকুতাদল হে।
    কোন	অকরুণা ভাঙিল হে পাষাণের বাঁধ
    তব	কলঙ্ক লেখা গেল ধুয়ে যে হে চাঁদ।
    	কাঁদ কাঁদ হে বঁধু তবে বুঝিবে মনে
    কত	বেদনা পেলে জল ঝরে নয়নে
    আজি	কাঁদিয়া শ্যামল হ'লে নির্মল হে।।
    

  • তব মাধবী-লীলায় কর মোরে সঙ্গী

    বাণী

    তব মাধবী-লীলায় কর মোরে সঙ্গী (হে বন-লক্ষ্মী)।
    তব অপাঙ্গে হইব ভ্রুভঙ্গি।।
    মোরে জ্বালায়ে জ্বালো
    তব বাসরে আলো,
    মোরে নূপুর করি’ বাঁধ চরণে তারি —
    	নাচে তোমার সভায় যে কুরঙ্গী।।
    তব রূপের দেশে
    এনু বাউল বেশে,
    যেন ফিরে নাহি যাই
    আঁখি-প্রসাদ পাই —
    	হব কেশে তব বেণীর ভুজঙ্গী।।
    
  • তরুণ প্রেমিক প্রণয় বেদন জানাও

    বাণী

    তরুণ প্রেমিক প্রণয় বেদন জানাও জানাও বেদিল প্রিয়ায়।
    ওগো বিজয়ী নিখিল হৃদয় কর কর জয় মোহন মায়ায়।।
    নহে ঐ এক হিয়ার সমান হাজার কাবা হাজার মস্‌জিদ;
    কি হবে তোর কাবার খোঁজে, আশয় খোঁজ তোর হৃদয় ছায়ায়।।
    প্রেমের আলোয় যে দিল্‌ রোশন, যেথায় থাকুক সমান তাহার —
    খোদার মস্‌জিদ মুরত–মন্দির ঈসাই–দেউল ইহুদ–খানায়।।
    অমর তার নাম প্রেমের খাতায় জ্যোতির্লেখায় রবে লেখা,
    দোজখের ভয় করে না সে, থাকে না সে বেহেশ্‌ত্‌ আশায়।।
    
  • তিমির বিদারী অলখ-বিহারী কৃষ্ণ মুরারি

    বাণী

    তিমির বিদারী অলখ-বিহারী কৃষ্ণ মুরারি আগত ঐ
    টুটিল আগল নিখিল পাগল সর্বসহা আজি সর্বজয়ী।।
    বহিছে উজান অশ্রু-যমুনায়
    হৃদি-বৃন্দাবনে আনন্দ ডাকে, (ওরে) ‌‘আয়’,
    বসুধা যশোদার স্নেহধার উথলায়
    (ওগো) কাল্‌-রাখাল নাচে থৈ-তা-থৈ।।
    বিশ্ব ভরি' ওঠে স্তব নমো নমঃ
    অরির পুরী-মাঝে এলো অরিন্দম।
    ঘিরিয়া দ্বার বৃথা জাগে প্রহরী জন
    বন্ধ কারায় এলো বন্ধ-বিমোচন,
    ধরি' অজানা পথ আসিল অনাগত
    জাগিয়া ব্যথাহত ডাকে, মাভৈঃ।।
    
  • তুম আনন্দ ঘনশ্যাম ম্যয় হুঁ

    বাণী

    তুম আনন্দ ঘনশ্যাম ম্যয় হুঁ প্রেম-দিওয়ানী রাধা।
    বাঁশরি শুনকে তোরি আয়ি মধুবনমে না মানু কলঙ্ককি বাধা।।
    যুগ যুগান্ত অনন্তকাল সে হৃদয়-বৃন্দাবনে মে,
    তুমহারে হামরে এহি লীলা নাথ চলত রহি মনমে।
    	মেরে সঙ্গ রোয়ে প্রেম বিগলিতা
    	ভক্তি বিশাখা প্রীতি ললিতা,
    তুমকো যো চাহে মেরি তরহেসে রোয়ত জীব সমাধা।।
    
  • তুমি অনেক দিলে খোদা

    বাণী

    তুমি অনেক দিলে খোদা, দিলে অশেষ নিয়ামত —
    আমি লোভী, তাইতো আমার মেটে না হসরত।।
    কেবলই পাপ করি আমি — মাফ করিতে তাই, হে স্বামী,
    দয়া করে শ্রেষ্ঠ নবীর করিলে উম্মত।
    তুমি নানান ছলে করছ পূরণ ক্ষতির খেসারত।।
    মায়ের বুকে স্তন্য দিলে, পিতার বুকে স্মেহ;
    মাঠে শস্য ফসল দিলে আরাম লাগি' গেহ।  
    ঈদের চাঁদের রং মশালে রঙীন বেহেশ্‌ত পথ দেখালে
    আখেরেরই সহায় দিলে আখেরী হজরত।
    তুমি আজান দিলে না ভুলিতে মসজিদেরই পথ।।
    
  • তুমি আঘাত দিয়ে মন ফেরাবে

    বাণী

    তুমি আঘাত দিয়ে মন ফেরাবে এই কি তোমার আশা?
    আমার যে নাথ অনন্ত সাধ, অনন্ত পিপাসা॥
    	দাহন তুমি করবে যত
    	প্রেমের শিখা জ্বলবে তত
    সে যে আমার মন্ত্র পূজার তোমার কঠিন ভাষা॥
    ফুলমালী! ফুলের শাখা কাটো যত পার,
    আহত সেই ফুল-শাখাতে ধরবে কুসুম আরো।
    	হানলে আঘাত নিথর জলে,
    	অধীর বেগে ঢেউ উথলে,
    তোমার অবহেলায় বিপুল হ’ল ভীরু ভালোবাসা।
    		আমার ভীরু ভালোবাসা॥
    

  • তুমি আনন্দ ঘনশ্যাম আমি প্রেম-পাগলিনী রাধা

    বাণী

    তুমি আনন্দ ঘনশ্যাম আমি প্রেম-পাগলিনী রাধা।
    তব ডাক শুনে ছুটে যাই বনে আমি না মানি কুলের বাধা।।
    	শূন্য প্রাণের গাগরি ঘিরে
    	নিতি আসি রস-যমুনার তীরে
    অঙ্গ ভাসায়ে তরঙ্গ-নীরে শুনি তব বাঁশি সাধা।।
    যুগ-যুগান্ত অনন্ত কাল হৃদয়-বৃন্দাবনে
    তোমাতে আমাতে এই লীলা, নাথ! চলেছে, সঙ্গোপনে।
    	মোর সাথে কাঁদে প্রেম-বিগলিতা
    	ভক্তি ও প্রীতি বিশাখা-ললিতা।
    তোমারে যে চায়, মোর মতো, হায়! সার শুধু তার কাঁদা।।
    

  • তুমি আশা পুরাও খোদা

    বাণী

    তুমি আশা পুরাও খোদা, সবাই যখন নিরাশ করে।
    সবাই যখন পায়ে ঠেলে, সান্ত্বনা পাই তোমায় ধ'রে।।
    দ্বারে দ্বারে হাত পাতিয়া ফিরি যখন শূন্য হাতে,
    তোমার দানের শির্‌নি তখন আসে আমায় পথ দেখাতে,
    দেখি হঠাৎ শূন্য তোমার দানে গেছে ভ'রে।।
    খোদা, তোমায় ভরসা করি' নামি যখন কোন কাজে,
    সে কাজ হাসিল হয় সহজে শত বিপদ বাধার মাঝে
    (খোদা) তোমায় ছেড়ে অন্য জনে শরণ নিলে যায় সে সরে।।
    মাঝ দরিয়ায় ডুবলে জাহাজ তোমায় যদি ডাকি
    তোমার রহম কোলে করি তীরেতে যায় রাখি
    দুখের অনল কুসুম হয়ে ফুটে ওঠে থরে থরে।।
    
  • তুমি কি দখিনা পবন

    বাণী

    তুমি কি দখিনা পবন
    দুলে ওঠে দেহলতা
    ফুলে ফুলে ফুল্ল হয়ে ওঠে মন।।
    	অন্তর সৌরভে শিহরে
    	কথার কোয়েলিয়া কুহরে
    তনু অনুরঞ্জিত করে গো প্রীতির পলাশ রঙন।।
    কী যেন মধু জাগে হিয়াতে
    চাহি’ যেন সেই মধু কোন্‌ চাঁদে পিয়াতে।
    	ফুটাইয়া ফুল কোথা চলে যাও
    	হুতাস নিশাসে কী ব’লে যাও
    মধু পান করি না কো র’চে যাই শুধু মধু-বন।।
    

  • তুমি নন্দন-পথ ভোলা

    বাণী

    তুমি নন্দন-পথ ভোলা।।
    তুমি মন্দাকিনী-ধারা উতরোলা।।
    তোমার প্রাণের পরশ লেগে
    কুঁড়ির বুকে মধু উঠ্‌ল জেগে,
    দোলন-চাঁপায় লাগে দোলা।।
    তোমারে হেরিয়া পুলকে ওঠে ডাকি’
    বকুল বনের ঘুমহারা পাখি,
    ধরার চাঁদ তুমি চির-উতলা।।
    
  • তুমি প্রভাতের সকরুণ ভৈরবী

    বাণী

    তুমি প্রভাতের সকরুণ ভৈরবী।
    শিশির-সজল ভোরের আকাশে ভাসে তোমারি উদাস ছবি।।
    	বিষাদ গভীর কার কল্পনা
    	রূপ ধ’রে তুমি ফের আনমনা,
    তোমারি মূরতি ধেয়ায় স্বপনে বিরহী সুরের কবি।।
    তুমি ধরা দিতে যেন আস নাই ধরণীতে,
    একা-একা খেলা খেল সারাবেলা সাথিহীন তরণীতে।
    	আঘাত হানিয়া সে-কোন্ নিঠুর
    	জাগাবে তোমাতে আশাবরি সুর,
    পাষাণ টুটিয়া গলিয়া পড়িবে অশ্রুর জাহ্নবী।।
    
  • তুমি ফুল আমি সুতো গাঁথিব মালা

    বাণী

    পুরুষ	:	তুমি ফুল আমি সুতো গাঁথিব মালা
    স্ত্রী	:	সহিতে হবে মোরে সুচির জ্বালা॥
    পুরুষ	:	দুলিবে গলে মোর বুকের’ পরে
    স্ত্রী	:	ফেলে দিবে বাসি হলে নিশি-ভোরে
    		বন-কুসুম ঝরি বনে নিরালা॥
    পুরুষ	:	তব কুঞ্জ-গলি আসে দখিন-হাওয়া আসে চপল অলি
    স্ত্রী	:	তা’রা রূপ-পিয়াসি তা’রা ছিঁড়ে না কলি।
    		তা’রা বনের বাহিরে মোরে নেবে না কালা।
    পুরুষ	:	তবে চলিয়া যাই আমি নিরাশা ল’য়ে
    স্ত্রী	:	না, না, যেয়ো না যেয়ো না, থাক গো বুকে শিশির হয়ে।
    পুরুষ	:	এসো নব প্রেমে করি বন উজালা।
    দ্বৈত	:	এসো নব প্রেমে করি বন উজালা।
    
  • তুমি বিরাজ কোথা হে উৎসব দেবতা

    বাণী

    তুমি বিরাজ কোথা হে উৎসব দেবতা
    মম গৃহ অঙ্গনে এসো সঙ্গী হয়ে আনো আনন্দ বারতা॥
    		পূজা সম্ভারে প্রসন্ন দৃষ্টি হানো
    		শুভ শঙ্খ বাজাও দশদিক জাগানো
    হে মঙ্গলময়! আসি’ অভয় দানো আনো প্রভাত আকাশ সম নির্মলতা॥
    		লহ বিহগের গীতি অভিনন্দন
    		চাঁদের থালিকা হতে গোপীচন্দন
    আনন্দ অমরার নন্দন হে প্রণত কর চরণে কহ কথা কহ কথা॥
    
  • তুমি যখন এসেছিলে তখন আমার ঘুম ভাঙেনি

    বাণী

    তুমি যখন এসেছিলে তখন আমার ঘুম ভাঙেনি
    মালা যখন চেয়েছিলে বনে তখন ফুল জাগেনি।।
    	আমার আকাশ আঁধার কালো
    	তোমার তখন রাত পোহালো
    তুমি এলে তরুণ-আলো তখন আমার মন রাঙেনি।।
    ওগো রুদ্ধ ছিল মোর বাতায়ন পূর্ণ শশী এলে যবে,
    আঁধার-ঘরে একেলা জাগি হে চাঁদ আবার আসবে কবে।
    	আজকে আমার ঘুম টুটেছে
    	বনে আমার ফুল ফুটেছে
    ফেলে যাওয়া তোমারি মালায় বেঁধেছি মোর বিনোদ-বেনী।।
    
  • তুমি যদি রাধা হতে শ্যাম

    বাণী

    তুমি যদি রাধা হতে শ্যাম,
    আমারি মতন দিবস-নিশি জপিতে শ্যাম-নাম।।
    কৃষ্ণ-কলঙ্কেরি জ্বালা, মনে হ’ত মালতীর মালা
    চাহিয়া কৃষ্ণ-প্রেম জনমে জনমে আসিতে ব্রজধাম।।
    কত অকরুণ তব বাঁশরির সুর
    তুমি হইলে শ্রীমতী ব্রজ-কুলবতী বুঝিতে নিঠুর।
    তুমি যে-কাঁদনে কাঁদায়েছ মোরে
    আমি কাঁদাতাম তেমনি ক’রে
    বুঝিতে, কেমন লাগে এই গুরু-গঞ্জনা
    এ প্রাণ-পোড়ানি অবিরাম।।
    

  • তুমি লহ প্রভু আমার সংসারেরি ভার

    বাণী

    তুমি লহ প্রভু আমার সংসারেরি ভার লহ সংসারেরি ভার
    আজকে অতি ক্লান্তআমি বইতে নারি আর
    	এ ভার বইতে নারি আর।।
    	সংসারেরি তরে খেটে
    	জনম আমার গেল কেটে
    (ওরে) তবু অভাব ঘুচল না (আমার) হায় খাটাই হল সার।।
    বিফল যখন হলাম পেতে সবার কাছে হাত
    তখন তোমায় পড়ল মনে হে অনাথের নাথ।
    	অভাবকে আর করি না ভয়
    	তোমার ভাবে মগ্ন হৃদয়
    তোমায় ফিরিয়ে দিলাম হে মায়াময় তোমারি সংসার।।
    
  • তুমি সারাজীবন দুঃখ দিলে

    বাণী

    তুমি	সারাজীবন দুঃখ দিলে, তব দুঃখ দেওয়া কি ফুরাবে না!
    যে	ভালোবাসায় দুঃখে ভাসায় সে কি আশা পূরাবে না॥
    মোর	জনম গেল ঝুরে ঝুরে - লোকে লোকে ঘুরে ঘুরে,
    তব	স্নিগ্ধ পরশ দিয়ে কি, নাথ, দগ্ধ হিয়া জুড়াবে না॥
    তুমি	অশ্রুতে যে-বুক ভাসালে —
    সেই	বক্ষে এসো দিন ফুরালে
    তুমি	আঘাত দিয়ে ফুল ঝরালে, হাত দিয়ে কি কুড়াবে না॥
    

  • তুমি হাতখানি যবে রাখ মোর হাতের পরে

    বাণী

    তুমি		হাতখানি যবে রাখ মোর হাতের পরে
    মোর		কণ্ঠ হ’তে সুরের গঙ্গা ঝরে।।
    তব		কাজল-আঁখির ঘন পল্লব তলে
    		বিরহ মলিন ছায়া মোর যবে দোলে
    তব		নীলাম্বরীর ছোঁয়া লাগে যেন সেদিন নীলাম্বরে।।
    		যেদিন তোমারে পাই না কাছে গো পরশন নাহি পাই,
    		মনে হয় যেন বিশ্ব ভুবনে কেহ নাই, কিছু নাই।
    		অভিমানে কাঁদে বক্ষে সেদিন বীণ
    		আকাশ সেদিন হয়ে যায় বাণী হীন
    যেন		রাধা নাই, আর বৃন্দাবনে গো সব সাধ গেছে ম’রে।।