কাজরী

  • আজি এ বাদল দিনে

    বাণী

    আজি এ বাদল দিনে কত কথা মনে পড়ে।
    হারাইয়া গেছে পিয়া এমনি বাদল-ঝড়ে।।
    	আমারি এ বুকে থাকি’
    	ঘুমাত সে ভীরু পাখি,
    জলদ উঠিলে ডাকি’ লুকাত বুকের ’পরে।।
    মোর বুকে মুখ রাখি নিবিড় তিমির কাঁদে,
    আমার প্রিয়ার মত বাঁধিয়া বাহুর বাঁধে।
    	কোথায় কাহার বুকে
    	আজি সে ঘুমায় সুখে,
    প্রদীপ নিভায়ে কাঁদি একা ঘরে তারি তরে।।
    
  • এ ঘোর শ্রাবণ-নিশি কাটে কেমনে

    বাণী

    এ ঘোর শ্রাবণ-নিশি কাটে কেমনে।
    রহি’ রহি’ সেই মুখ পড়িছে মনে।।
    	বিজলিতে সেই আঁখি
    	চমকিছে থাকি’ থাকি’
    শিহরিত এমনি সে বাহু-বাঁধনে।।
    শন শন বহে বায় সে কোথায় সে কোথায়
    নাহি নাহি ধ্বনি শুনি উতল পবনে হায়
    চরাচর দুলিছে অসীম রোদনে।।
    

  • এলো শ্যামল কিশোর তমাল-ডালে

    বাণী

    এলো শ্যামল কিশোর তমাল-ডালে বাঁধে ঝুলনা।
    সুনীল শাড়ি পরো ব্রজনারী পরো নব নীপ-মালা অতুলনা।।
    	ডাগর চোখে কাজল দিও,
    	আকাশী রং প'রো উত্তরীয়,
    নব-ঘন-শ্যামের বসিয়া বামে দুলে দুলে ব'রলা, 'বঁধু, ভুলো না'।।
    	নৃত্য-মুখর আজি মেঘলা দুপুর,
    	বৃষ্ট্রির নূপুর বাজে টুপুর টুপুর।
    	বাদল-মেঘের তালে বাজিছে বেণু,
    	পান্ডুর হ'ল শ্যাম মাখি' কেয়া-রেণু,
    বাহুতে দোলনায় বাঁধিবে শ্যামরায় ব'লো, 'হে শ্যাম, এ বাঁধন খুলো না'।।
    
  • ওগো এলে কি শ্যামল পিয়া কাজল মেঘে

    বাণী

    ওগো	এলে কি শ্যামল পিয়া কাজল মেঘে
    	চাঁচর চিকুর ওড়ে পবন বেগে॥
    	তোমার লাবনি ঝ’রে পড়িছে অবনি-পরে
    	কদম শিহরে কর-পরশ লেগে॥
    	তড়িৎ ত্বরিত পায়ে বিরহী-আঁখিরে ছায়ে তরাসে লুকায়।
    	চলিতে পথের মাঝে ঝুমুর ঝুমুর বাজে নূপুর দু’পায়।
    	অশনি হানার ছলে প্রিয়ারে ধরাও গলে,
    ওগো	রাতের মুকুল কাঁদে কুসুম জেগে॥
    
  • কাজরি গাহিয়া এসো গোপ-ললনা

    বাণী

    কাজরি গাহিয়া এসো গোপ-ললনা।
    শ্রাবণ-গগনে দোলে মেঘ-দোলনা।।
    পর সবুজ-ঘাগরি চোলি নীল ওড়না,
    মাখো অধরে মধুর হাসি, চোখে ছলনা।।
    কদম-চন্দ্রহার প’রে এসো চন্দ্রাবলী
    তমাল-শাখা-বরণা এসো বিশাখা-শ্যামলী,
    বাজায় করতাল দূরে তাল-বনা।।
    লাবনি-বিগলিতা এসো সকরুণ ললিতা
    যমুনা-কূলে এসো ব্রজবধূ কুল-ভীতা,
    অলকে মাখিয়া নব জল-কণা।।
    
  • দুলিবি কে আয় মেঘের দোলায়

    বাণী

    দুলিবি কে আয় মেঘের দোলায়।
    কুসুম দোলে পাতার কোলে পুবালি হাওয়ায়।।
    অলকা-পরী অলক খু’লে
    কাজরি নাচে গগন-কূলে,
    বলাকা-মালার ঝুলন ঝুলায়।।
    দাদুরি বোলে, ডাহুকী ডাকে
    ময়ূরী নাচে তমাল শাখে,
    ময়ূর দোলে কদম-তলায়।।
    তটিনী দুলে ঢেউয়ের তালে,
    নিবিড় আঁধার ঝাউয়ের ডালে,
    বেণুর ছায়া ঘনায় মায়া পরান ভোলায়।।
    
  • রিম্‌ ঝিম্‌ রিম্‌ঝিম্ ঝিম্‌ ঘন দেয়া বরষে

    বাণী

    রিম্‌ ঝিম্‌ রিম্‌ঝিম্‌ ঝিম্‌ ঘন দেয়া বরষে।
    কাজরি নাচিয়া চল, পুর-নারী হরষে।।
    কদম তমাল ডালে দোলনা দোলে
    কুহু পাপিয়া ময়ূর বোলে,
    মনের বনের মুকুল খোলে
    নট-শ্যাম সুন্দর মেঘ পরশে।।
    হৃদয়-যমুনা আজ কূল জানে না গো,
    মনের রাধা আজ বাধা মানে না গো।
    ডাকিছে ঘর-ছাড়া ঝড়ের বাঁশি
    অশনি আঘাত হানে দুয়ারে আসি’,
    গরজাক গুরুজন ভবনবাসী —
    আমরা বাহিরে যাব ঘনশ্যাম দরশে।।
    

    নাটকঃ ‌‘অর্জুন বিজয়’

  • শাওন আসিল ফিরে

    বাণী

    শাওন আসিল ফিরে সে ফিরে এল না
    বরষা ফুরায়ে গেল আশা তবু গেল না।
    ধানী রং ঘাগরি, মেঘ–রং ওড়না
    পরিতে আমারে মাগো, অনুরোধ ক’রো না
    কাজরির কাজল মেঘ পথ পেল খুঁজিয়া
    সে কি ফেরার পথ পেল না মা, পেল না।।
    আমার বিদেশিরে খুঁজিতে অনুক্ষণ
    বুনো হাঁসের পাখার মত উড়ু উড়ু করে মন।
    অথৈ জলে মাগো, মাঠ–ঘাট থৈ থৈ
    আমার হিয়ার আগুন নিভিল কই?
    কদম–কেশর বলে, ‘কোথা তোর কিশোর’,
    চম্পাডালে ঝুলে শূন্য দোলনা।।
    

  • সখি বাঁধো লো বাঁধো লো

    বাণী

    সখি বাঁধো লো বাঁধো লো ঝুলনিয়া।।
    নামিল মেঘলা ঘোর বাদরিয়া।।
    চল কদম তমাল তলে গাহি কাজরিয়া
    চল লো গৌরী শ্যামলিয়া।।
    বাদল-পরীরা নাচে গগন-আঙিনায়,
    ঝমাঝম বৃষ্টি-নূপুর পায়।
    শোনো ঝমঝম বৃষ্টি নূপুর পায়
    এ হিয়া মেঘ হেরিয়া ওঠে মাতিয়া।।
    মেঘ-বেণীতে বেঁধে বিজলি-জরীন্‌ ফিতা,
    গাহিব দু’লে দু’লে শাওন-গীতি কবিতা,
    শুনিব বঁধুর বাঁশি বন-হরিণী চকিতা,
    দয়িত-বুকে হব বাদল-রাতে দয়িতা।
    পর মেঘ-নীল শাড়ি ধানী-রঙের চুনরিয়া,
    কাজলে মাজি’ লহ আঁখিয়া।।