লোকাঙ্গিক

  • ওরে রাখাল ছেলে বল্ কি রতন পেলে

    বাণী

    ওরে রাখাল ছেলে বল্ কি রতন পেলে
    দিবি হাতের বাঁশি, তোর ঐ হাতের বাঁশি।
    বাঁধা দিয়ে খাড়ু আনব ক্ষীরের নাড়ু
    অম্‌নি হেলেদুলে এক্‌বার নাচ্ রে আসি॥
    দেখ মাখাতে তোর গায়ে ফাগের গুড়া,
    আমার আঙ্গিনাতে ঝরা কৃষ্ণচূড়া।
    আমার গলার হার খুলে পরাব আয় কিশোর
    		তোর পায়ে ফাঁসি॥
    যেন কালিদহের জলে সাপের মানিক জ্বলে,
    চোখের হাসি, তোর ঐ চোখের হাসি,
    ও তুই কি চাস্ চপল মোরে বল্
    আমি মরেছি যে তোরে ভালোবাসি॥
    আসিস্ আমার বাড়ি রাখাল দিন ফুরালে
    আমার চুড়ির তালে দুলবি কদম ডালে।
    ছেড়ে গৃহ-সংসার ওর বাঁশুরিয়া,
    		হব চরণ দাসী।
    
  • নিশির নিশুতি যেন হিয়ার ভিতরে গো

    বাণী

    নিশির নিশুতি যেন হিয়ার ভিতরে গো,
    সে বলেও না টলেও না থমথম করে গো॥
    যেন নতুন পিঞ্জরের পাখি, ঘেরা টোপে ঢাকা থাকি
    জটিলা-কুটিলার ভয়ে আছি আমি ম’রে গো॥
    যেন চোরের বউ কান্‌তে নারি ভয়ে ফুকারিয়া গো,
    আমি রান্না ঘরে কান্না লুকাই লঙ্কা-ফোড়ন দিয়া গো।
    ব্যথার ব্যথী পাইরে কোথা, জানাই যা’রে মনের ব্যথা
    বুকে ধিকি ধিকি তুষের আগুন জ্ব’লবে চিরতরে
    বুঝি জ্ব’লবে জনম ভ’রে গো॥
    
  • বন্ধু আজো মনে রে পড়ে আম কুড়ানো খেলা

    বাণী

    		বন্ধু, আজো মনে রে পড়ে আম কুড়ানো খেলা।
    		আম কুড়াইবার যাইতাম দুইজন নিশি-ভোরের বেলা।।
    		জোষ্ঠি মাসের গুমোঁট রে বন্ধু আস্‌ত নাকো নিদ
    					রাত্রে আস্‌ত নাকো নিদ্
    		আম-তলায় এক চোর আইস্যা কাঁট্ত প্রাণে সিঁদ্
    (আর)	নিদ্রা গেলে ফেল্‌ত সে চোর আঙিনাতে ঢেলা।।
    		আমরা দুইজন আম কুড়াইতাম, ডাক্‌ত কোকিল গাছে,
    		ভোলো যদি — বিহান বেলার সূয্যি সাক্ষী আছে,
    (তুমি)	পায়ের কাছে আম ফেইল্যা গায়ে দিতে ঠেলা।।
    		আমার বুকের আঁচল থাইক্যা কাইড়া নিতে আম,
    		বন্ধু, আজও পাই নাই দাসী সেই না আমের দাম,
    (আজ)	দাম চাইবার গিয়া দেখি তুমি দিছ মেলা।।
    		নিশি জাইগ্যা বইস্যা আছি, জোষ্ঠি মাসের ঝড়ে
    		সেই না গাছের তলায় বন্ধু এখনো আম পড়ে
    		তুমি কোথায় আমি কোথায় দুইজনে একেলা।।
    
  • বাঁকা চোখে চাহে ও কে

    বাণী

    ‌	বাঁকা চোখে চাহে ও কে
    	ওকি ভয়ে, না লাজে, না ভালোবাসায়?
    	বটের ঝুরি ধ’রে হেসে তাকায়
    	দীঘির জলে কভু কল্‌সি ভাসায়॥
    (আমার) পাখি শিকার দেখে তাহার আঁখি ছলছল
    যেন	দুটি ঝিনুক ভরা কাজলা দীঘির জল
    তার	আঁজলা ভরা শাপলা কাঁপে টলমল্ গো
    সে	বাঁকিয়ে জোড়া ভুরু মোরে শাসায়॥
    কভু	এলায়ে গা বাঁধে খোঁপা কোমরে জড়ায় আঁচল
    	মট্‌কায় আঙুল, কভু ঘসে সে পা গো
    কভু	জলে ডোবে কভু সাঁতার কাটে
    	নানান ছলে সে দেরি করে জলের ঘাটে
    মোরে	জানায় যেন ও সে আছে ব’সে
    	কাহার আসার আশায়॥
    
  • সাপুড়িয়া রে বাজাও বাজাও

    বাণী

    গানের শুরুতে নীচের কথাগুলি সাপুড়েদের মন্ত্র-পড়ার ঢংয়ে আবৃত্তি করা হয়েছে :-

    [খা খা খা
    তোর বক্ষিলারে খা
    তারি দিব্যি ফণাতে তোর যে ঠাকুরের পা'
    বিষহরি শিবের আজ্ঞ্যে দোহাই মনসা,
    আমায় যদি কামড়াস খাস জরৎ-কারুর হাড়
    নাচ নাগিনী ফণা তুলে, নাচ রে হেলেদুলে
    মারলে ছোবল বিষ-দাঁত তোর অমনি নেব তুলে
    বাজ তুবরী বাজ ডমরু বাজ, নাচ রে নাগ-রাজা।।]
    সাপুড়িয়া রে —
    বাজাও বাজাও সাপ-খেলানোর বাঁশি।
    কালিদহে ঘোর উঠিল তরঙ্গ রে
    কালনাগিনী নাচে বাহিরে আসি।।
    ফণি-মনসার কাঁটা-কুঞ্জতলে
    গোখরা কেউটে এলো দলে দলে রে
    সুর শুনে ছুটে এলো পাতাল-তলের
    বিষধর বিষধরী রাশি রাশি।।
    শন-শন-শন-শন পুব হাওয়াতে
    তোমার বাঁশি বাজে বাদলা-রাতে
    মেঘের ডমরু বাজাও গুরু গুরু বাঁশির সাথে।
    অঙ্গ জর জর বিষে
    বাঁচাও বিষহরি এসে রে
    এ কি বাঁশি বাজালো কালা, সর্বনাশী।।
    
  • সোনার বরণ কন্যা গো এসো আমার সোনার নায়ে

    বাণী

    পুরুষ	:	সোনার বরণ কন্যা গো, এসো আমার সোনার নায়ে
    		চল আমার বাড়ি
    স্ত্রী	:	ওরে অচিন দেশের বন্ধুরে,
    		তুমি ভিন্ গেরামের নাইয়া আমি ভিন্ গেরামের নারী।
    পুরুষ	:	গয়না দিব বৈচী খাড়ু শাড়ি ময়নামতীর।
    স্ত্রী	:	গয়না দিয়ে মন পাওয়া যায় না কুলবতীর।
    পুরুষ	:	শাপলা ফুলের মালা দেব রাঙা রেশমি চুড়ি।
    স্ত্রী	:	ঐ মন-ভুলানো জিনিস নিয়ে (বন্ধু) মন কি দিতে পারি?
    পুরুষ	:	(তুমি) কোন্-সে রতন চাও রে কন্যা, আমি কি তা জানি?
    স্ত্রী	:	তোমার মনের রাজ্যে আমি হ’তে চাই রাজরানী।
    দ্বৈত	:	হইও সাক্ষী তরুলতা পদ্মা নদীর পানি (আরে ও)
    		(আজি) কূল ছাড়িয়া দু’টি প্রাণী অকূলে দিল পাড়ি॥