মালকোষ

  • আমার মা যে গোপাল-সুন্দরী

    বাণী

    	আমার মা যে গোপাল-সুন্দরী। 
    যেন	এক বৃন্তে কৃষ্ণ-কলি অপরাজিতার মঞ্জরি।।
    মা	আধেক পুরুষ অর্ধ অঙ্গে নারী
    	আধেক কালি আধেক বংশীধারী,
    	অর্ধ অঙ্গে পীতাম্বর আর অর্ধ অঙ্গে দিগম্বরী।।
    মা	সেই পায়ে প্রেম-কুসুম ফোটায় নূপুর-পরা যে চরণ,
    মা'র	সেই পায়ে রয় সর্প-বলয় যে পায়ে প্রলয়- মরণ। 
    	মার আধ-ললাটে অগ্নি-তিলক জ্বলে
    	চন্দ্রলেখা আধেক ললাট তলে,
    	শক্তিতে আর ভক্তিতে মা আছেন যুগল রূপ ধরি'।।
    
  • কোন্ মহাব্যোমে ধ্বনি ওঠে ওম্

    বাণী

    কোন্ মহাব্যোমে ধ্বনি ওঠে ওম্, আদি আকাশ বাণী।
    কোন্ মহামৌনীর ধ্যান ভাঙে কোন্ বিরহের বীণাপাণি —
    			নাহি জানি নাহি জানি।।
    	নিথর শূন্য অসীমে কোথায়
    	কে সে প্রণব-শঙ্খ বাজায়,
    সেই ধ্বনি বুঝি জ্যোতির্জ্জগতে বাহিরে আনিছে টানি।।
    কোন্ অজানার অলখ-জটায় কথার গঙ্গা কাঁদে
    কোন্ মায়াতীত সুন্দর হ’ল পড়িয়া মায়ার ফাঁদে।
    	কার সাথে এত কথা কহিবার
    	এত সে-গোপন সাধ ছিল তার,
    তাহারি বাঁশরি-ধ্বনির কথা কি ব্রজে হয় কানাকানি।।
    
  • গরজে গম্ভীর গগনে কম্বু

    বাণী

    গরজে গম্ভীর গগনে কম্বু।
    নাচিছে সুন্দর নাচে স্বয়ম্ভূ।।
    সে-নাচে-হিল্লোলে জটা-আবর্তনে
    সাগর ছুটে আসে গগন-প্রাঙ্গণে।
    		আকাশে শূল হানি’
    		শোনাও নব বাণী,
    		তরাসে কাঁপে প্রাণী
    			প্রসীদ-শম্ভু।
    ললাট-শশী টলি’ জটায় পড়ে ঢলি’,
    সে-শশী-চমকে গো বিজুলি ওঠে ঝলি’।
    ঝাঁপে নীলাঞ্চলে মুখ দিগঙ্গনা,
    মূরছে ভয়-ভীতা নিশি নিরঞ্জনা।
    		আঁধারে পথহারা
    		চাতকী কেঁদে সারা,
    		যাচিছে বারিধারা
    			ধরা নিরম্বু।।
    
  • তুই জগত-জননী শ্যামা

    বাণী

    তুই জগত-জননী শ্যামা আমি কি মা জগত ছাড়া,
    কোন দোষে মা তুই থাকিতে আমি চির মাতৃহারা।।
    পুত্র অপরাধী ব'লে মা কি তারে নেয় না কোলে,
    মা শাসন করে মারে-ধরে তবু কাছ ছাড়া করে না তারা।
    কোন দোষে মা তুই থঅকিতে আমি চির মাতৃহারা।।
    ছেলের চোখে ঠুলি দিয়ে কি মা নিজেরে লুকিয়ে রাখে
    ছেলের দুঃখে মা উদাসীন দেখিনি তো এমন মাকে।
    মাতৃস্নেহ পেলে শ্যামা এমন মন্দমতি হতেম না মা
    তুই যাহারে হানিস হেলা তার কে মোছাবে নয়ন-ধারা
    কোন দোষে মা তুই থাকিতে আমি চির মাতৃহারা।।
    
  • মাতল গগন-অঙ্গনে ঐ

    বাণী

    মাতল গগন-অঙ্গনে ঐ আমার রণ-রঙ্গিণী মা।
    সেই মাতনে উঠল দুলে ভূলোক দ্যুলোক গগন-সীমা।।
    	আঁধার-অসুর-বক্ষপানে
    	অরুণ-আলোর খড়গ হানে,
    মহাকালের ডম্বরূতে উঠল বেজে মা’র মহিমা।।
    সৃষ্টি-প্রলয় যুগল নূপুর বাজে শ্যামার যুগল পায়ে,
    গড়িয়ে পড়ে তারার মালা উল্কা হয়ে গগন-গায়ে।
    লক্ষ গ্রহের মুন্ডমালা দোলে গলে দোলে ঐ
    বজ্র-ভেরীর ছন্দ-তালে নাচে শ্যামা তাথৈ থৈ,
    অগ্নি-শিখায় ঝলকে ওঠে খড়গ-ঝরা লাল শোণিমা।।
    
  • মানবতাহীন ভারত শ্মশানে

    বাণী

    মানবতাহীন ভারত শ্মশানে দাও মানবতা হে পরমেশ।
    কি হবে লইয়া মানবতাহীন ত্রিশ কোটি মানুষ মেষ।।
    		কলের পুতুল এরা প্রাণহীন
    		পাষাণ আত্মা বিশ্বাসহীন,
    নিজেরে ইহারা চিনে না জানে না, কেমনে চিনিবে নিজের দেশ।।
    		ভারত শ্মশানে ফেরে প্রেতপাল,
    		নর নাই, শুধু নর-কঙ্কাল;
    এই চির অভিশপ্তের মাঝে জাগাও হে প্রভু প্রাণের রেশ।।
    		ভায়ে ভায়ে হেথা নাহি প্রেমবোধ,
    		কেবলি কলহ, কেবলি বিরোধ;
    হে দেশ-বিধাতা, দূর কর এই লজ্জা ও গ্লানি, এ দীন বেশ।।
    
  • শোনো লো বাঁশিতে ডাকে

    বাণী

    শোনো লো বাঁশিতে ডাকে আমারে শ্যাম।
    গুমরিয়া কাঁদে বাঁশি ল’য়ে ‘রাধা রাধা’ নাম।।
    	পিঞ্জরে পাখি যেন
    	লুটাইয়া কাঁদে মন,
    আশে পাশে গুরুজন বাম।।