মাঢ়

  • ঝলমল জরীণ বেণী দুলায়ে

    বাণী

    ঝলমল জরীণ বেণী দুলায়ে প্রিয়া কি এলে 
    সজল শাওন-মেঘে কাজল নয়ন মেলে।।
    কেয়া ফুলের পরিমল, ঝুরে মরে তব পথে,
    হেরি দীঘল তব তনু তাল পিয়াল তরু পড়ে হেলে’।।
    পরিবে বলিয়া খোঁপায় ঝরিছে বকুল চাঁপা
    তোমায় খুঁজিছে আকাশ তারার প্রদীপ জ্বেলে।।
    তোমারি লাবনি প্রিয়া ঝরিছে শ্যামল মেঘে,
    ফুটালে ফুল মরুভূমে চঞ্চল চরণ ফেলে।।
    
  • ঢল ঢল তব নয়ন-কমল

    বাণী

    ঢল ঢল তব নয়ন-কমল কাজল তোমারেই সাজে।
    শোভে তোমারেই চাঁদের হাসি হিঙুল অধর-মাঝে।।
    	ফিরোজা-রঙ শাড়ি চাঁপা রঙে তব
    	সেজেছে প্রিয়া কি অভিনব,
    সুনীল গগনে গোধূলি রঙ যেন মিশেছে আসিয়া ঊষা ও সাঁঝে।।
    কোমলে কড়িতে বাজে কাঁকন চুড়ি
    শিথিল আঁচল ল’য়ে খেলে হাওয়া লুকোচুরি,
    উষ্ণ কপোল ছুঁয়ে থল্-কমলী আঁউ’রে গেল যে লাজে।।
    
  • পরদেশী বঁধু ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি

    বাণী

    পরদেশী বঁধু! ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি
    যদি গো নিশীথে গো ঘুমাইয়া থাকি।
    	আমি ঘুমাইয়া থাকি
    	ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি।।
    যদি দীপ নেভে গো কুটিরে
    বাতায়ন-পানে চাহি' যেয়ো না গো ফিরে',
    নিভেছে আঁখি শিখা প্রাণ আছে বাকি
    	আজো প্রাণ আছে বাকি
    	ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি।।
    
  • বকুল চাঁপার বনে কে মোর

    বাণী

    বকুল চাঁপার বনে কে মোর চাঁদের স্বপন জাগালে —
    অনুরাগের সোনার রঙে হৃদয়-গগন রাঙালে।।
    ঘুমিয়ে ছিলাম কুমুদ-কুঁড়ি বিজন ঝিলের নীল জলে
    পূর্ণ শশী তুমি আসি’ আমার সে ঘুম ভাঙালে।।
    হে মায়াবী তোমার ছোঁয়ায় সুন্দর আজ আমার তনু
    তোমার মায়া রচিল মোর বাদল মেঘে ইন্দ্র ধনু।
    		তোমার টানে হে দরদি
    		দোল খেয়ে যায় কাঁদন-নদী
    কূল হারা মোর ভালোবাসা আজকে কূলে লাগালে।।
    
  • যুগ যুগ ধরি লোকে-লোকে মোর

    বাণী

    যুগ যুগ ধরি লোকে-লোকে মোর
    		প্রভুরে খুঁজিয়া বেড়াই;
    সংসারে গেহে , প্রীতি ও স্নেহে
    	আমার স্বামী বিনে নাই সুখ নাই।।
    তার	চরণ পাবার আশা ল'য়ে মনে
    	ফুটিলাম ফুল হয়ে কত বার বনে,
    		পাখি হয়ে তার নাম
    		শত বার গাহিলাম
    	তবু হায় কভু তার দেখা নাহি পাই।।
    	গ্রহ তারা হয়ে খুঁজেছি আকাশে,
    	দিকে দিকে ছুটেছি মিশিয়া বাতাসে,
    		পর্বত হয়ে নাম
    	কোটি যুগ ধিয়ালাম,
    	নদী হয়ে কাঁদিলাম খুঁজিয়া বৃথাই।।
    

  • লক্ষ্মী মা তুই ওঠ্ গো আবার

    বাণী

    লক্ষ্মী মা তুই ওঠ্ গো আবার সাগর জলে সিনান করি’।
    হাতে ল’য়ে সোনার ঝাঁপি, সুধার পাত্রে সুধা ভরি’।।
    আন্ মা আবার আঁচলে তোর নবীন ধানের মঞ্জরি সে,
    টুনটুনিতে ধান খেয়েছে, খাজনা মাগো দিব কিসে।
    ডুবে গেছে সপ্ত-ডিঙা, রত্ন বোঝাই সোনার তরী।।
    ক্ষীরোদ-সাগর-কন্যা যে তুই, খেতে দে ক্ষীর সর মা আবার,
    পান্তা লবণ পায় না ছেলে, জননী তোর এ কোন বিচার?
    কার কাছে মা নালিশ করি, অনন্ত শয়নে হরি।।
    তোরও কি মা ধর্‌ল ঘুমে নারায়ণের ছোঁয়াচ লেগে,
    বর্গী এল দেশে মাগো, খোকারা তোর কাঁদে জেগে।
    এসে এবার ঘুম পাড়া মা, মাগো ভয়ে ক্ষিদেয় মরি।।
    কোন্‌ দুখে তুই রইলি ভুলে বাপের বাড়ি অতল-তুলে,
    ব্যথার সিন্ধু মন্থন শেষ, ভ’রল যে দেশ হলাহলে।
    অমৃত এনে সন্তানে তোর, বাঁচা মা, তোর পায়ে ধরি।।
    
  • সখি লো তায় আন ডেকে

    বাণী

    সখি লো তায় আন ডেকে যে গান গেয়ে যায় পথ দিয়ে।
    সই দিব তারে কণ্ঠহার, তার কণ্ঠেরি ঐ সুর নিয়ে॥
    		কারুর পানে নাহি চায়
    	সে 	আপন মনে গেয়ে যায়
    প্রাণ কাঁপে সুরের নেশায় নয়ন আসে ঝিমিয়ে॥
    		সখি লো শুধিয়ে আয়
    		সে শিখিল এ গান কোথায়
    এত মধু তার গলায় কার অধর-সুধা পিয়ে॥
    		যার গানে এত প্রাণ মাতায়
    		না জানি কি হয় দেখ্‌লে তায়
    তার সুর শুনে কেউ প্রাণ পায় কেউ ফেলে প্রাণ হারিয়ে॥