পাহাড়ী

  • এলো ফুলের মরশুম

    বাণী

    এলো ফুলের মরশুম শরাব ঢালো সাকি
    বকুল শাখে কোকিল ওঠে ডাকি’।।
    গেয়ে ওঠে বুলবুল আঙ্গুর-বাগে
    নীল আঁখি লাল হলো রাঙ্-অনুরাগে
    আজি ফুল-বাসরে শিরাজির জল্‌সা
    		বরবাদ্‌ হবে না-কি।।
    চাঁপার গেলাস ভরি’ ভোমরা মধু পিয়ে
    মহুয়া ফুলের বাসে আঁখি আসে ঝিমিয়ে।
    পাপিয়া পিয়া পিয়া ডাকে বন-মাঝে
    গোলাপ-কপোল রাঙে গোলাপী লাজে
    হৃদয়-ব্যথার সুধা আছে তব কাছে
    		রেখো না তারে ঢাকি’।।
    

  • ও কালো বউ জল আনিতে যেয়ো না

    বাণী

    ও কালো বউ! জল আনিতে যেয়ো না আর বাজিয়ে মল।
    তোমায় দেখে শিউরে ওঠে কাজ্‌লা দীঘির কালো জল।
    		ওগো কাজ্‌লা দীঘির কালো জল।।
    	দেখে তোমার কালো আঁখি
    	কালো কোকিল ওঠে ডাকি’
    তোমার চোখের কাজল মাখি’ হয় সজল ঐ মেঘ-দল
    		ওগো হয় সজল ঐ মেঘ-দল।।
    	তোমার কালো রূপের মায়া
    	দুপুর রোদে শীতল ছায়া
    কচি অশথ্‌ পাতায় টলে ঐ কালো রূপ টলমল।।
    	ভাদর মাসের ভরা ঝিলে
    	তোমার রূপের আদর মিলে গো —
    তোমার তনুর নিবিড় নীলে আকাশ করে টলমল।
    		ঐ আকাশ করে টলমল।।
    
  • ও কে উদাসী আমায় হায়

    বাণী

    ও কে উদাসী আমায় হায়
    ডাকে আয় আয়
    	গোধূলি-বেলায় বাজায়ে বাঁশরি।
    তা’র পাহাড়ি সুরে
    মোর নয়ন ঝুরে
    	মম কুল-লাজ গৃহ-কাজ যাই পাশরি’।।
    তা’র সুরের মায়ায় আকাশ ঝিমায়,
    	চাঁদের চোখে তিমির ঘনায় —
    তা’র বিরহে মধুর মোহে জীবন মরণ পলকে বিসরি।।
    
  • কোথায় তুই খুঁজিস ভগবান্

    বাণী

    কোথায় তুই খুঁজিস ভগবান্, সে যে রে তোরই মাঝে রয়,
    			চেয়ে দেখ সে তোরই মাঝে রয়।
    সাজিয়া যোগী ও দরবেশ খুঁজিস্ যায় পাহাড় জঙ্গলময়।।
    আঁখি খোল্ ইচ্ছা-অন্ধের দল নিজেরে দেখ্ রে আয়নাতে,
    দেখিবি তোরই এই দেহে নিরাকার তাঁহার পরিচয়।।
    ভাবিস্ তুই ক্ষুদ্র কলেবর, ইহাতেই অসীম নীলাম্বর,
    এ দেহের আধারে গোপন রহে সে বিশ্ব-চরাচর।
    প্রাণে তোর প্রাণের ঠাকুর বেহেশ্‌তে স্বর্গে কোথাও নয়।।
    এই তোর মন্দির-মসজিদ এই তোর কাশী-বৃন্দাবন,
    আপনার পানে ফিরে চল কোথা তুই তীর্থে যাবি, মন!
    এই তোর মক্কা-মদিনা, জগন্নাথ-ক্ষেত্র এই হৃদয়।।
    
  • ধীরে যায় ফিরে ফিরে চায়

    বাণী

    ধীরে যায় ফিরে ফিরে চায়।
    চলে নব অভিসারে, ভীরু কিশোরী,
    ওঠে পাতাটি নড়লে সে চম্‌কে।।
    হরিণ নয়নে সভয় চাহনি,
    আসিছে কে যেন দেখিবে এখনি
    পথে সে দেয় ফেলে মুখর নূপুর খুলে,
    আপন ছায়া হেরি ওঠে গা ছম্‌কে॥
    ‘চোখ গেল চোখ গেল’ ডাকে পাপিয়া
    শুনিয়া শরমে ওঠে কাঁপিয়া;
    হায়, যার লাগি এত, কোথায় সে
    ঝিল্লি-রবে ভাবে কেউ হবে
    বনে ফুল ঝরার আওয়াজে দাঁড়ায় সে থম্‌কে॥
    
  • ব্যথার উপরে বঁধু ব্যথা দিও না

    বাণী

    ব্যথার উপরে বঁধু ব্যথা দিও না
    দলিত এ হৃদি মম দ’লে যেয়ো না ॥
    		ল’য়ে কত সাধ আশা
    		তোমার দুয়ারে আসা
    (বঁধু) দিলে যদি আলোবাসা ফিরে নিয়ো না॥
    স্রোতের কুসুম প্রায় ভাসিতাম অসহায়
    তুলে নিয়ে বুকে তারে ফেলে দিলে পুনরায়।
    		নিরদয় এ কি খেলা
    		প্রাণ নিয়ে হেলাফেলা
    খেলার লাগিয়া ভালবাসিও না॥
    
  • স্বপনে দেখেছি ভারত-জননী

    বাণী

    স্বপনে দেখেছি ভারত-জননী
    			তুই যেন রাজরাজেশ্বরী।
    নবীন ভারত! নবীন ভারত!
    			স্তব-গান ওঠে ভুবন ভরি’।।
    শস্যে ফসলে ডেকেছে মা বান
    মাঠে ও খামারে ধরে নাকো ধান
    মুখভরা হাসি, হসিভরা প্রাণ
    			নদী ভরা যেন পণ্যতরী।।
    পড়ুয়ারা পড়ে বকুল-ছায়ে
    সুস্থ সবল আদুল গায়ে
    মেয়েরা ফিরিছে মুক্ত বায়ে
    			কল-গীতে দিক মুখর করি’।
    ভুলিয়া ঈর্ষা ভোগ আসক্তি
    ধরার ক্লান্ত অসুর-শক্তি
    এসেছে শিখিতে প্রেম ও ভক্তি
    			নব-ভারতের চরণ ধরি’।।