পিলু মিশ্র

  • এ জনমে মোদের মিলন হবে না

    বাণী

    এ জনমে মোদের মিলন হবে না আর, জানি জানি।
    মাঝে সাগর, এপার ওপার করি মোরা কানাকানি।।
    	দুজনে দুকূলে থাকি’
    	কাঁদি মোরা চখা-চখি,
    বিরহের রাত পোহায় না আর বুকে শুকায় বুকের বাণী।।
    	মোদের পূজা আরতি হায়
    	চোখের জলে, গহন ব্যথায়,
    মোদের বুকে বাজায় বীণা বেদনারি বীণাপাণি।।
    	হেথায় মিলন-রাতের মালা
    	ম্লান হয়ে যায় প্রভাত বেলা,
    সকালে যার তরে কাঁদি, বিকালে তায় হেলাফেলা।
    	মোদের এ প্রেম-ফুল না শুকায়
    	নিঠুর হাতে কঠোর ছোঁওয়ায়,
    ব্যথার মাঝে চির-অমর মোদের মিলন-কুসুমদানি।।
    
  • গত রজনীর কথা পড়ে মনে

    বাণী

    গত রজনীর কথা পড়ে মনে রজনীগন্ধার মদির গন্ধে।
    এই সে ফুলেরই মোহন-মালিকা জড়ায়ে ছিল সে কবরী-বন্ধে।।
    বাহুর বল্লরী জড়ায়ে তার গলে
    আধেক আঁচলে বসেছি তরুতলে,
    		দুলেছে হৃদয় ব্যাকুল ছন্দে।।
    মুখরা ‘বউ কথা কও’ ডেকেছে বকুল-ডালে,
    লাজে ফুটেছে লালী গোলাপ-কুঁড়ির গালে।
    কপোলের কলঙ্ক মোর মেটেনি আজো যে সই
    জাগিছে তা’রি স্মৃতি চাঁদের কপোলে ঐ,
    		কাঁদিছে নন্দন আজি নিরানন্দে।।

    ১. হাসিছে নন্দন আমি পরমানন্দে।।

  • গলে টগর মালা কাদের ডাগর মেয়ে

    বাণী

    গলে টগর মালা কাদের ডাগর মেয়ে
    যেন রূপের সাগর চলে উজান বেয়ে॥
    তার সুডোল তনু নিটোল বাহুর পরে
    চাঁদের আলো যেন পিছ্‌লে পড়ে
    ও কি বিজলি পরী এলো মেঘ পাসরি’
    চাঁদ ভুলে যায় লোকে তার নয়নে চেয়ে॥
    যেন রূপকথার দেশের সে রাজকুমারী
    রামধনুর রঙ ঝরে অঙ্গে তারি
    মদন রতি করে তার আরতি
    তার রূপের মায়া দুলে ভুবন ছেয়ে॥
    
  • গোলাপ ফুলের কাঁটা আছে সে গোলাব শাখায়

    বাণী

    গোলাপ ফুলের কাঁটা আছে সে গোলাব শাখায়,
    এনছি ছিঁড়ে তায় রাতুল পরাতে তোমায় খোঁপায়।
    কি হবে জানিয়া গোলাব কাঁদিল কি না;
    হৃদয় ছিঁড়েছি যাহার, বুঝিবে না গো সে বিনা।
    ভুল ভাঙায়ো না আর সাকি, ঢালো শারাব-পিয়ালা।
    মতলব কহিব পিছে, নেশা ধরুক চোখে বালা।।
    জানি আমি জানে বুলবুল কেন দলিয়া চলি ফুল,
    ভালোবাসি যারে যতই, তারে ততই হানি জ্বালা।।
    তিক্ত নহে এ শারাব বিফল মোর জীবনের চেয়ে,
    শোনায়ো না নীতি-কথা, শোনাও খুশির গজল গেয়ে;
    টুটিয়া আসিবে নেশা, ঢালো শারাব-পিয়ালা।।
    
  • নিরালা কানন-পথে কে তুমি চল একেলা

    বাণী

    নিরালা কানন-পথে কে তুমি চল একেলা।
    দু'ধারে চরণ-পাতে ফুটায়ে ফুলের মেলা।।
    তোমার ওই কেশের সুবাস ফুলবন করিছে উদাস
    কুসুম ভুলিয়া মলয় ও কেশে করিছে খেলা।।
    লুটায়ে পড়ে ফুল-দল পরিবে বলিয়া খোঁপায়
    ওগো চলিবে বলি' বনতল ফুলেরা পরাগে রাঙায়,
    ও-পায়ে আলতা হ'তে চায় রঙিন গোধূলি-বেলা।।
    'চলিয়া যেয়ো না, যেয়ো না' বলি' লতারা চরণে জড়ায়,
    রোধিতে কন্টক-তরু, আঁচল ছাড়িতে না চায়;
    আকাশে ইশারায় ডাকে দ্বিতীয়া চাঁদের ভেলা।।
    
  • নেহি তোড়ো ইয়ে ফুলোঁ কি

    বাণী

    নেহি তোড়ো ইয়ে ফুলোঁ কি ডালি রে হা।
    মালি ভোমরা বুলবুল তেরি গালি রে হা।।
    যাও সওতন কে পাশ শুনো ভিগা ভিগা বাত
    ম্যায়তো হোনেকা চাহতি হুঁ প্রীত বিমার —
    আভি চাহ ফেকা যায়েগা কালীরে হা।।
    হায়রে হায় বান্দা আব দালা যৌবন আভি
    আভি ফুলো মে নেহি আয়ি হ্যায় সৌগন্ধ,
    আভি গালো পে আয়ি নেহি লালীরে হা।।
    নেহি আও আভি নাজানে পাও নেহি বাত
    আভি ছোটি হ্যায় ফুল কলি কাচ্চা আনার
    যৌবন সে ম্যায় অব তক আনজানে হা।।
    
  • পাষাণ-গিরির বাঁধন টুটে

    বাণী

    পাষাণ-গিরির বাঁধন টুটে নির্ঝরিণী আয় নেমে আয়।
    ডাকছে উদার নীল-পারাবার আয় তটিনী আয় নেমে আয়।।
    	বেলাভূমে আছড়ে প’ড়ে
    	কাঁদছে সাগর তোরই তরে,
    তরঙ্গেরি নূপুর প’রে জল-নটিনী আয় নেমে আয়।।
    দুই ধারে তোর জল ছিটিয়ে, ফুল ফুটিয়ে আয় নেমে আয়,
    শ্যামল-তৃণে চঞ্চল-অঞ্চল লুটিয়ে আয় নেমে আয়।।
    	ডাগর তোর চোখের চাওয়ায়
    	সাগর-জলে জোয়ার জাগায়,
    সেই নয়নের স্বপন দিয়ে বন-হরিণী আয় নেমে আয়।।
    

    ১. সজল যে

  • বকুল তলে ব্যাকুল বাঁশি কে বাজায়

    বাণী

    বকুল তলে ব্যাকুল বাঁশি কে বাজায়
    যে বাঁশরি শুনে কিশোরী সহসা যেন গো যৌবন পায়॥
    রয় না মন ঘরে সেই বাঁশির সুরে
    	দূরে ভেসে যেতে চায়
    পরান ঘুরে মরে তাহার রাঙা পায়॥
    তারি নূপুর শুনি নিশিদিনই প্রাণে মোর
    নিশীথ রাতে আসে পাশে বসে মনোচোর।
    তারে কি মালা দিব অশ্রু-মুক্তা গাঁথা
    বিছাবো পথে কি তার মরা ফুল ঝরা পাতা
    	প্রাণের দীপালি জ্বালি তারি আশায়॥
    
  • বিঁধে গেল তীর তেরছ তার চাহনি

    বাণী

    বিঁধে গেল তীর তেরছ তার চাহনি।
    বিঁধিল মরম-মূলে চাহিল যেমনি।।
    হৃদয় বনের নিষাদ সে নিঠুর
    তনু তার ফুলবন আঁখি তাহে ফণি।
    এলো যখন স্বপন-পরী উড়ায়ে আঁচল সোনালি,
    মোর ধেয়ান-লোক হতে যেন এলো রূপ ধরে রূপওয়ালী।
    দেহে তার চাঁদিনী-চন্দন মাখা, হায় চাহিল সে যেই
    তার চোখের ঐ তীর খেয়ে কেঁদে কহিল হৃদি;
    ওগো হেনে গেল তীর।।
    
  • মদির আবেশে কে চলে ঢুলুঢুলু আঁখি

    বাণী

    মদির আবেশে কে চলে ঢুলুঢুলু আঁখি।
    			মদির কার আঁখি
    হেরিয়া পাপিয়া উঠিছে পিউ পিউ ডাকি’।।
    আল্‌তা-রাঙা পায়ে আল্পনা আঁকে,
    পথের যত ধূলি তাই বুক পেতে থাকে,
    দু’ধারে তরুলতা দেয় চরণ ফুলে ফুলে ঢাকি’।।
    তা’রি চোখের চাওয়ায় গো দেলা লাগে হাওয়ায়,
    তালীবন তাল দিয়ে যায় তাল-ফের্‌তায় দোলা লাগে হাওয়ায়।
    আকুল তানে গাহে বকুল-বনের পাখি।।
    তারি মুখ-মদের ছিটে যোগায় ফুলে মধু মিঠে
    চাঁদের জৌলুসে তাহারি রওশন্‌ মাখি’।।
    
  • মহুয়া ফুলের মদির ঘন সুবাসে

    বাণী

    মহুয়া ফুলের মদির ঘন সুবাসে,
    নয়ন ঝিমিয়ে আসে।।
    মাতাল পাপিয়া ‘পিয়া পিয়া’ ডাকে
    দোলন-চাঁপার ঝুলন শাখে,
    ঝিরিঝিরি হাওয়ায় মন উদাসে।।
    নিদাঁলি ছাওয়া চৈতালি হাওয়া,
    স্বপনের ঘোর লাগে আকাশে
    মৌমাছির পাখা জড়িয়ে আসে।।
    
  • সোনার মেয়ে! সোনার মেয়ে

    বাণী

    সোনার মেয়ে! সোনার মেয়ে!
    তোমার রূপের মায়ায় আমার নয়ন- ভুবন গেল ছেয়ে'।।
    	ঝরে তোমার রূপের ধারা—
    	চন্দ্র জাগে তন্দ্রাহারা,
    আকাশ-ভরা হাজার তারা তোমার মুখে আছে চেয়ে'।।
    	কোন গ্রহ-লোক ব্যথায় ভ'রে
    	কোন অমরা শূন্য ক'রে
    (ওগো) রাখলে চরণ ধরার পরে রঙ-সায়রের রঙের নেয়ে।
    	শিল্পী আকেঁ তোমার ছবি
    	তোমারি গান গাহে কবি
    নিশীথিনী হারিয়ে রবি চাঁদ হাতে পায় তোমায় পেয়ে।।