তেওড়া

  • অম্বরে মেঘ-মৃদঙ বাজে

    বাণী

    অম্বরে মেঘ-মৃদঙ বাজে জলদ-তালে
    লাগিল মাতন ঝড়ের নাচন ডালে ডালে।।
    	দিগন্তের ঐ দুর্গ-মূলে
    	ধূলি-গৈরিক কেতন দুলে
    কে দুরন্ত আগল খুলে ঘুম ভাঙালে।।
    থির সাগরের নীল তরঙ্গে আনন্দেরি
    সেই নাচনের তালে তালে বাজিল ভেরি।
    	মাভৈঃ মাভৈঃ ডাক শুনি যার
    	পথ ছেড়ে দে রথ এল তাঁর।
    দুর্দিনে সে বজ্র-শিখার আগুন জ্বালে।।
    
  • আদি পরম বাণী ঊর বীণাপাণি

    বাণী

    আদি পরম বাণী, ঊর বীণাপাণি।
    আরতি করে তব কোটি কোবিদ জ্ঞানী।।
    হিমেল শীত গত, ফাগুন মুঞ্জরে,
    কানন-বীণা বাজে সমীরে মর্মরে।
    গাহিছে মুহু মুহু আগমনী কুহু,
    প্রকৃতি বন্দিছে নব কুসুম আনি’।।
    মূক ধরণী করে বেদনা-আরতি,
    বীণা-মুখর তারে কর মা ভারতী!
    বক্ষে নব আশা, কণ্ঠে নব ভাষা
    দাও মা, আশিস যাচে নিখিল প্রাণী।।
    শুচি রুচির আলো-মরাল বাহিনী
    আনিলে আদি জ্যোতি, সৃজিলে কাহিনী।
    কণ্ঠে নাহি গীতি, বক্ষে ত্রাস-ভীতি,
    কর প্রবুদ্ধ মা বর অভয় দানি’।।
    ব্রহ্মবাদিনী আদিম বেদ-মাতা,
    এসো মা, কোটি-দল হৃদি আসন পাতা।
    অশ্রুমতী মা গো, নব বাণীতে জাগো,
    রুদ্ধ দ্বার খোলো সাজিয়া রুদ্রাণী।।
    
  • আমায় যারা দেয় মা ব্যথা

    বাণী

    আমায় যারা দেয় মা ব্যথা আমায় যারা আঘাত করে,
    	তোরই ইচ্ছায় ইচ্ছাময়ী!
    আমায় যারা ভালবাসে বন্ধু ব’লে বক্ষে ধরে, -
    	তোরই ইচ্ছায় ইচ্ছাময়ী!!
    	আমার আপমান করে যে
    	মাগো তোরই ইচ্ছা সে যে
    আমায় যারা যায় মা ত্যেজে যারা আমার আসে ঘরে,
    	তোরই ইচ্ছায় ইচ্ছাময়ী॥
    আমার ক্ষতি করতে পারে অন্য লোকের সাধ্য কি মা;
    দুঃখ যা পাই তোরই সে দান, মাগো সবই তোর মহিমা!
    	তাই পায়ে কেহ দলে যবে
    	হেসে সয়ে যাই নীরবে,
    কে কারে দুখ্ দেয় মা কবে তোর আদেশ না পেলে পরে
    তোরই ইচ্ছায় ইচ্ছাময়ী!!
    
  • আমার মা যে গোপাল-সুন্দরী

    বাণী

    	আমার মা যে গোপাল-সুন্দরী। 
    যেন	এক বৃন্তে কৃষ্ণ-কলি অপরাজিতার মঞ্জরি।।
    মা	আধেক পুরুষ অর্ধ অঙ্গে নারী
    	আধেক কালি আধেক বংশীধারী,
    	অর্ধ অঙ্গে পীতাম্বর আর অর্ধ অঙ্গে দিগম্বরী।।
    মা	সেই পায়ে প্রেম-কুসুম ফোটায় নূপুর-পরা যে চরণ,
    মা'র	সেই পায়ে রয় সর্প-বলয় যে পায়ে প্রলয়- মরণ। 
    	মার আধ-ললাটে অগ্নি-তিলক জ্বলে
    	চন্দ্রলেখা আধেক ললাট তলে,
    	শক্তিতে আর ভক্তিতে মা আছেন যুগল রূপ ধরি'।।
    
  • আমি ছন্দ ভুল চির-সুন্দরের

    বাণী

    আমি	ছন্দ ভুল চির-সুন্দরের নট-নৃত্যে গো।
    আমি	অপ্সরা-মায়া ধ্যানভঙ্গের
    		যোগী মহেন্দ্রের চিত্তে গো।।
    আমি	পঞ্চশর-তৃণে রক্তমাখা শর,
    	অমৃত-পাত্রে গো স্মর-গরল খর
    আমি	উর্বশীর খল-চরণ-নূপুর
    		উদাসিনী দেব-চিত্তে গো।।
    
  • উত্তরীয় লুটায় আমার ধানের ক্ষেতে

    বাণী

    		উত্তরীয় লুটায় আমার
    		ধানের ক্ষেতে, হিমেল্ হাওয়ায়।
    আমার চাওয়া জড়িয়ে আছে নীল আকাশের সুনীল চাওয়ায়॥
    		ভাটির শীর্ণা নদীর কূলে
    		আমার রবি-ফসল দুলে,
    নবান্নেরই সুঘ্রাণে মোর চাষির মুখে টপ্পা গাওয়ায়॥
    

    হৈমন্তী

  • এসো আনন্দিতা ত্রিলোক-বন্দিতা

    বাণী

    এসো আনন্দিতা ত্রিলোক-বন্দিতা কর দীপান্বিতা আঁধার অবনি মা।
    ব্যাপিয়া চরাচর শারদ অম্বর ছড়াও অভয় হাসির লাবনি মা।।
    	সারাটি বরষ নিখিল ব্যথিত
    	চাহিয়া আছে মা তব আসা-পথ,
    ধরার সন্তানে ধর তব কোলে ভুলাও দুঃখ-শোক চির-করুণাময়ী মা।।
    	অটুট স্বাস্থ্য দীর্ঘ পরমায়ু
    	দাও আরো আলো নির্মল বায়ু,
    দশ হাতে তব আনো মা কল্যাণ পীড়িত-চিত গাহে অকাল জাগরণী মা।।
    
  • কে দুরন্ত বাজাও ঝড়ের ব্যাকুল বাঁশি

    বাণী

    কে দুরন্ত বাজাও ঝড়ের ব্যাকুল বাঁশি
    আকাশ কাঁপে সে সুর শুনে সর্বনাশী।।
    	বন ঢেলে দেয় উজাড় ক'রে
    	ফুলের ডালা চরণ' পরে,
    নীল গগনে ছুটে আসে মেঘের রাশি।।
    বিপুল ঢেউয়ের নাগর-দোলায় সাগর দুলে
    বান ডেকে যায় শীর্ণা নদীর কুলে কূলে
    	তোমার প্রলয় মহোৎসবে
    	বন্ধু ওগো, ডাকবে কবে?
    ভাঙবে আমার ঘরের বাঁধন কাঁদন হাসি।।
    
  • কে বলে মোর মাকে কালো

    বাণী

    কে বলে মোর মাকে কালো, মা যে আমার জ্যোতির্মতী।
    কোটি চন্দ্র সূর্য তারা নিত্য করে যার আরতি।।
    	কালো রূপের মায়া দিয়ে
    	মহামায়া রয় লুকিয়ে,
    মায়ের শুভ্ররূপ দেখেছে শুভ্র শুচি যার ভকতি।।
    যোগীন্দ্র যাঁর চরণ-তলে ধ্যান করে রে যাঁর মহিমা,
    দু’টি নয়ন-প্রদীপ জ্বেলে খুঁজি সেই অসীমার সীমা।
    	সাজিয়ে কালী গৌরী মাকে
    	পূজা করি তমসাকে,
    মায়ের শুভ্ররূপ দেখেছে শুভ্র শুচি যার ভকতি।।
    
  • গরজে গম্ভীর গগনে কম্বু

    বাণী

    গরজে গম্ভীর গগনে কম্বু।
    নাচিছে সুন্দর নাচে স্বয়ম্ভূ।।
    সে-নাচে-হিল্লোলে জটা-আবর্তনে
    সাগর ছুটে আসে গগন-প্রাঙ্গণে।
    		আকাশে শূল হানি’
    		শোনাও নব বাণী,
    		তরাসে কাঁপে প্রাণী
    			প্রসীদ-শম্ভু।
    ললাট-শশী টলি’ জটায় পড়ে ঢলি’,
    সে-শশী-চমকে গো বিজুলি ওঠে ঝলি’।
    ঝাঁপে নীলাঞ্চলে মুখ দিগঙ্গনা,
    মূরছে ভয়-ভীতা নিশি নিরঞ্জনা।
    		আঁধারে পথহারা
    		চাতকী কেঁদে সারা,
    		যাচিছে বারিধারা
    			ধরা নিরম্বু।।
    
  • জয় বিবেকানন্দ সন্ন্যাসী বীর

    বাণী

    জয় বিবেকানন্দ সন্ন্যাসী বীর চির গৈরিকধারী।
    জয় তরুণ যোগী, শ্রীরামকৃষ্ণ-ব্রত-সহায়কারী।।
    	যজ্ঞাহুতির হোমশিখা সম,
    	তুমি তেজস্বী তাপস পরম
    ভারত-অরিন্দম নমো নমঃ বিশ্বমঠ বিহারী।।
    (মদ) গর্বিত বল-দর্পীর দেশে মহাভারতের বাণী
    শুনায়ে বিজয়ী ঘুচাইলে স্বদেশের অপযশ গ্লানি।
    (নব)	ভারতে আনিলে তুমি নব বেদ
    	মুছে দিলে জাতি ধর্মের ভেদ
    জীবে ঈশ্বরে অভেদ আত্মা জানাইলে হুঙ্কারি১।।
    

    ১. উচ্চারি

  • তওফিক দাও খোদা ইসলামে

    বাণী

    তওফিক দাও খোদা ইসলামে মুসলিম-জাঁহা পুনঃ হোক আবাদ।
    দাও সেই হারানো সালতানাত দাও সেই বাহু সেই দিল আজাদ।।
    দাও সেই হামজা সেই বীর ওলীদ
    দাও সেই উমর হারুন অল রশীদ
    দাও সেই সালাহউদ্দীন আবার পাপ দুনিয়াতে চলুক জেহাদ।।
    দাও সে রুমী সাদী হাফিজ
    সেই জামী খৈয়াম সে তবরিজ
    দাও সে আকবর সেই শাহজাহান দাও তাজমহলের স্বপ্ন সাধ।।
    দাও ভা'য়ে ভা'য়ে সেই মিলন
    সেই স্বার্থত্যাগ সেই দৃপ্ত মন,
    হোক বিশ্ব-মুসলিম এক জামাত উড়ুক নিশান ফের যুক্ত চাঁদ।।
    

  • তুই জগত-জননী শ্যামা

    বাণী

    তুই জগত-জননী শ্যামা আমি কি মা জগত ছাড়া,
    কোন দোষে মা তুই থাকিতে আমি চির মাতৃহারা।।
    পুত্র অপরাধী ব'লে মা কি তারে নেয় না কোলে,
    মা শাসন করে মারে-ধরে তবু কাছ ছাড়া করে না তারা।
    কোন দোষে মা তুই থঅকিতে আমি চির মাতৃহারা।।
    ছেলের চোখে ঠুলি দিয়ে কি মা নিজেরে লুকিয়ে রাখে
    ছেলের দুঃখে মা উদাসীন দেখিনি তো এমন মাকে।
    মাতৃস্নেহ পেলে শ্যামা এমন মন্দমতি হতেম না মা
    তুই যাহারে হানিস হেলা তার কে মোছাবে নয়ন-ধারা
    কোন দোষে মা তুই থাকিতে আমি চির মাতৃহারা।।
    
  • দেশ গৌড়-বিজয়ে দেবরাজ গগনে

    বাণী

    দেশ গৌড়-বিজয়ে দেবরাজ গগনে এলো বুঝি সমর-সাজে।
    তাহারি মেঘ-মৃদঙ্গ গুরু গুরু আষাঢ়-প্রভাতে সহসা বাজে।।
    	গহন কৃষ্ণ ঐরাবত-দল
    	রবিরে আবরি’ ঘিরিল নভতল,
    হানে খরশর বৃষ্টি ধারা জল — পবন-বেগে প্রতি ভবন-মাঝে।।
    	বনের এলোকেশ বিজলি-পাশে
    	বাঁধিয়া দেব্-সেনা অট্রহাসে।
    	শ্যামল গৌড়ের অমল হাসি
    	শস্যে-কুসুমে ওঠে প্রকাশি’,
    অঙ্গে তাহার আঘাত-রাশি — দেব-আশীর্বাদ হয়ে বিরাজে।।
    
  • প্রভাত বীণা তব বাজে হে

    বাণী

    প্রভাত বীণা তব বাজে হে
    উদার অম্বর মাঝে হে।।
    তুষার কান্তি তব প্রশান্তি
    শুভ্র আলোকে রাজে হে।।
    তব আনন্দিত গভীর বাণী
    শোনে ত্রিভুবন যুক্ত পাণি
    মন্ত্রমুগ্ধ ভাব গঙ্গা নিস্তরঙ্গা লাজে হে।।
    
  • বাজে মৃদঙ্গ বরষার ওই দিকে দিকে দিগন্তরে

    বাণী

    বাজে মৃদঙ্গ বরষার ওই দিকে দিকে দিগন্তরে
    নীরস ধরা সরস হলো কাহার যাদু-মন্তরে।।
    বন-ময়ুর আনন্দে নাচে ধারা-প্রপাত ছন্দে
    ঝরঝর গিরি-নির্ঝর স্রোতে অন্তর সুখে সন্তরে।।
    শ্যামল প্রিয়-দরশা হলো ধূসর পথ-প্রান্তর
    বন্ধু-মিলন হরষা গাহে দাদুরি অবান্তর।
    	শ্রাবন প্লাবন বন্যাতে
    	আজি পুষ্পে পল্লবে বন মাতে
    এলো শ্যাম শোভন সুন্দর প্রাণ-চঞ্চল ক'রে মন্থরে।।
    
  • ভারতের দুই নয়ন তারা হিন্দু-মুসলমান

    বাণী

    ভারতের দুই নয়ন তারা হিন্দু-মুসলমান
    দেশ জননীর সমান প্রিয় যুগল সন্তান।।
    তাইতো মায়ের কোল নিয়ে ভাই
    ভা’য়ে ভা’য়ে বাধে লড়াই
    এই কলহের হবেই হবে মধুর অবসান
    এক দেশেরই অন্নজলে এক দেহ এক প্রাণ।।
    আল্লা বলে কোরান তোমায়, এলা বলে বেদ,
    যেমন পানি, জলে রে ভাই শুধু নামের ভেদ।
    মোদের মাঝে দেয়াল তুলতে যে চায়
    জানবে মোদের শত্রু তাহায় (জানবে রে)
    বিবাদ ক’রে এনেছি হায় অনেক অকল্যাণ
    মিলনে আজ উঠুক জেগে নব-হিন্দুস্থান।
    		জেগে উঠুক হিন্দুস্থান।।
    
  • মধুর ছন্দে নাচে আনন্দে নওল কিশোর মদনমোহন

    বাণী

    মধুর ছন্দে নাচে আনন্দে নওল কিশোর মদনমোহন!
    চারু ত্রিভঙ্গিম ঠাম বঙ্কিম, বন্দে পদ কোটি চন্দ্র তপন॥
    	বৃষ্টিধারা সম নব নবতম,
    	সৃষ্টি পড়ে ঝরি সে নাচে নিরূপম
    রতন মঞ্জির বাজে রমঝম, ঘোরে গ্রহতারা ঘিরি শ্রীচরণ॥
    

    চলচ্চিত্রঃ ‘ধ্রুব’

  • মরণ ডাকে আয় রে চ’লে

    বাণী

    মরণ ডাকে — ‘আয় রে চ’লে!’ জীবন বলে — ‘যাই গো যাই।’
    জীবনে হায় পায়নি ব’লে (আমার) মরণে তাই চাই গো চাই।।
    	জীবন শুধু কাঁটায় ভরা
    	তাই বুঝি সে দেয়নি ধরা,
    ফুল-বিছানো কবরে তার মধুর পরশ পাই গো পাই।
    মরণ-বঁধূর ডাক শুনে আর জীবনে সাধ নাই গো নাই।।
    

    নাটকঃ ‘কাফন চোরা’

  • মহাকালের কোলে এসে

    বাণী

    	মহাকালের কোলে এসে গৌরী হ’ল মহাকালী,
    	শ্মশান–চিতার ভস্ম মেখে ম্লান হ’ল মার রূপের ডালি।।
    		তবু মায়ের রূপ কি হারায়
    	সে যেছড়িয়ে আছে চন্দ্র তারায়,
    	মায়ের রূপের আরতি হয় নিত্য সূর্য–প্রদীপ জ্বালি’ ।।
    	উমা হ’ল ভৈরবী হায় বরণ ক’রে ভৈরবেরে,
    হেরি’	শিবের শিরে জাহ্নবী রে শ্মশানে মশানে ফেরে।
    		অন্ন দিয়ে ত্রি–জগতে
    		অন্নদা মোর বেড়ায় পথে,
    	ভিক্ষু শিবের অনুরাগে ভিক্ষা মাগে রাজদুলালী।।