দুলে চরাচর হিন্দোল-দোলে
বাণী
দুলে চরাচর হিন্দোল-দোলে বিশ্বরমা দোলে বিশ্বপতি-কোলে।। গগনে রবি-শশী গ্রহ-তারা দুলে, তড়িত-দোলনাতে মেঘ ঝুলন ঝুলে। বরিষা-শত-নরী দুলিছে মরি মরি, দুলে বাদল-পরী কেতকী-বেণী খোলে।। নদী-মেঘলা দোলে, দোলে নটিনী ধরা, দুলে আলোক নভ-চন্দ্রাতপ ভরা। করিয়া জড়াজড়ি দোলে দিবস-নিশা, দোলে বিরহ-বারি, দোলে মিলন-তৃষা। উমারে লয়ে বু’কে শিব দুলিছে সুখে, দোলে অপরূপ রূপ-লহর তোলে।।
দোলে নিতি নব রূপের টেউ-পাথার
বাণী
দোলে নিতি নব রূপের টেউ-পাথার ঘনশ্যাম তোমারি নয়নে। আমি হেরি যে নিখিল বিশ্বরূপ-সম্ভার তোমারি নয়নে॥ তুমি পলকে ধর নাথ সংহার-বেশ হও পলকে করুণা-নিধান পরমেশ। নাথ ভরা যেন বিষ অমৃতের ভান্ডার তোমার দুই নয়নে॥ ওগো মহা-শিশু, তব খেলা-ঘরে একি বিরাট সৃষ্টি বিহার করে, সংসার চক্ষে তুমিই হে নাথ, সংসার তোমারি নয়নে॥ তুমি নিমেষে রচি নব বিশ্বছবি ফেল নিমেষে মুছিয়া হে মহাকবি, করে কোটি কোটি ব্রহ্মান্ড ভুবন-সঞ্চার তোমারি নয়নে॥ তুমি ব্যাপক ব্রহ্ম চরাচরে জড় জীবজন্তু নারী-নরে, কর কমল-লোচন, তোমার রূপ বিস্তার হে আমারি নয়নে॥
দুর্গম গিরি কান্তার মরু
বাণী
দুর্গম গিরি, কান্তার–মরু, দুস্তর পারাবার হে! লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে, যাত্রীরা হুঁশিয়ার।। দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ — ছিঁড়িয়াছে পাল কে ধরিবে হাল, কার আছে হিম্মত। কে আছো জোয়ান, হও আগুয়ান, হাঁকিছে ভবিষ্যত, এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার।। তিমির রাত্রি, মাতৃ–মন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান! যুগ-যুগান্ত সঞ্চিত ব্যথা ঘোষিয়াছে অভিযান। ফেনাইয়া ওঠে বঞ্চিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান, ইহাদেরে পথে নিতে হবে সাথে, দিতে হবে অধিকার।। অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানে না সন্তরণ, কান্ডারী, আজি দেখিব তোমার মাতৃ–মুক্তি–পণ। ’হিন্দু না ওরা মুসলিম’– ওই জিজ্ঞাসে কোন্ জন, কান্ডারী, বল, ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা’র।। গিরি–সংকট, ভীরু যাত্রীরা, গরজায় গুরু বাজ — পশ্চাৎ পথ যাত্রীর মনে সন্দেহ জাগে আজ। কান্ডারী, তুমি ভুলিবে কি পথ? ত্যজিবে কি পথ মাঝ? করে হানাহানি, তবু চল টানি’– নিয়েছ যে মহাভার।। ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান — আসি’ অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন্ বলিদান! আজি পরীক্ষা জাতির অথবা জাতেরে করিবে ত্রাণ, দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, কান্ডারী হুঁশিয়ার।।
দয়া ক’রে দয়াময়ী ফাঁসিয়ে দে এই ভুঁড়ি
বাণী
[ওমা — ভুঁড়ি নিয়ে গেলাম মা — ওমা — মা-মা-মা] দয়া ক’রে দয়াময়ী ফাঁসিয়ে দে এই ভুঁড়ি এ ভুঁড়ি তো নয় ভূধর যেন উদর প্রদেশ জুড়ি॥ ক্রমেই ভুঁড়ির পরিধি মা যাচ্ছে ছেড়ে দেহের সীমা আমার হাত পা রইল বাঙালি ওমা পেট হল ভোজপুরী॥ উপুড় হতে নারি মাগো সর্বদা চিৎপাৎ ভয় লাগে কাৎ হলেই বুঝি হব কুপোকাৎ শালীরা কয় হায় রে বিধি রোলার বিয়ে করলেন দিদি গুঁড়ি ভেবে ঠেস দেয় কেউ কেউ দেয় সুড়সুড়ি॥ (আর) ভুঁড়ি চলে আগে আগে আমি চলি পিছে কুমড়ো গড়ান গড়িয়ে পড়ি নামতে সিঁড়ির নীচে। পেট কি ক্রমে ফুলে ফেঁপে উঠবে মাগো মাথা ছেপে (ওগো) কেউ নাদা কয় কেউ গম্বুজ (বলে) কেউবা গোবর ঝুড়ি। গাড়িতে মা যেই উঠেছি ভুঁড়ি লাগায় লম্ফ ভুমিকম্পের চেয়েও ভীষণ আমার ভুঁড়ি কম্প। সার্ট ক্রমে পেটে এঁটে গেঞ্জি হয়ে গেল সেঁটে দে ভুঁড়ির ময়দা ফেটে হাত পা গুলো ছুড়ি হালকা হয়ে মনের সুখে হাত পা গুলো ছুড়ি এই ভুঁড়ির ময়দা ফেটে দে ফায়দা কি আর এই ভুঁড়িতে ময়দা ফেটে দে হালকা হয়ে মনের সুখে ওমা, হাত-পাগুলো ছুড়ি॥
দিন গেল মোর মায়ায় ভুলে মাটির পৃথিবীতে
বাণী
দিন গেল মোর মায়ায় ভুলে মাটির পৃথিবীতে। কে জানে কখন নিয়ে যাবে গোরে মাটি দিতে রে।। পাঁচ ভূতে আর চোরে মিলে রোজগার মোর কেড়ে নিলে; এখন কেউ নাই রে পারে যাবার দুটো কড়ি দিতে রে।। রাত্রি শুয়ে আবার যে ভাই উঠব সকাল বেলা, বলতে কি কেউ পারি তবু খেলি মোহের খেলা। বাদ্শা আমির ফকির কত এলো আবার হল গত রে; দেখেও বারেক আল্লার নাম জাগে নাকো চিতে। এবার বসবি কবে ও ভোলা মন আল্লার তস্বিতে রে।।