বাণী

দূর বেণুকুঞ্জে বাজে মুরলী মুহু মুহু
	যেন বারে বারে
	ডাকে আমারে
বাঁশুরিয়ার মধুর সুরের কুহু।।

বাণী

দেখা দাও, দাও দেখা, ওগো দেবতা।
মন্দিরে পূজারিণী আশাহতা॥
ধূপ পুড়িয়া গেছে, শুকায়েছে মালা,
বন্ধ হ’ল বা দ্বার, একা কুলবালা।
প্রভাতে জাগিবে সবে, রটিবে বারতা॥
জাগো জাগো দেবতা শূন্য দেউলে,
আরতি উঠিছে মোর বেদনার ফুলে।
বাণীহীন মন্দির, কহ কহ কথা॥

বাণী

দিন গেল মোর মায়ায় ভুলে মাটির পৃথিবীতে।
কে জানে কখন নিয়ে যাবে গোরে মাটি দিতে রে।।
	পাঁচ ভূতে আর চোরে মিলে
	রোজগার মোর কেড়ে নিলে;
এখন কেউ নাই রে পারে যাবার দুটো কড়ি দিতে রে।।
রাত্রি শুয়ে আবার যে ভাই উঠব সকাল বেলা,
বলতে কি কেউ পারি তবু খেলি মোহের খেলা।
	বাদ্‌শা আমির ফকির কত
	এলো আবার হল গত রে;
দেখেও বারেক আল্লার নাম জাগে নাকো চিতে।
এবার বসবি কবে ও ভোলা মন আল্লার তস্‌বিতে রে।।

বাণী

দেশে দেশে গেয়ে বেড়াই তোমার নামের গান
হে খোদা, এ যে তোমারই হুকুম, তোমারই ফরমান।।
এমনি তোমার নামের আছর –
নামাজ রোজার নাই অবসর,
তোমার নামের নেশায় সদা মশগুল মোর প্রাণ।।
তকদিরে মোর এই লিখেছ হাজার গানের সুরে
নিত্য দিব তোমার আজান আঁধার মিনার-চূড়ে।
কাজের মাঝে হাটের পথে
রণ-ভূমে এবাদতে
আমি তোমার নাম শোনাব, করব শক্তি দান।।

বাণী

		দাঁড়ালে দুয়ারে মোর		কে তুমি ভিখারিনী।
		গাহিয়া সজল চোখে		বেলা-শেষের রাগিণী॥
		মিনতি-ভরা আঁখি			ওগো কে তুমি ঝড়ের পাখি
(ওগো)	কি দিয়ে জুড়াই ব্যথা		কেমনে কোথায় রাখি
		কোন্ প্রিয় নামে ডাকি’		মান ভাঙাব মানিনী॥
		বুকে তোমায় রাখতে প্রিয়	চোখে আমার বারি ঝরে,
(ওগো)	চোখে যদি রাখিতে চাই		বুকে উঠে ব্যথা ভ’রে।
		যত দেখি তত হায়,		ওগো পিপাসা বাড়িয়া যায়
		কে তুমি যাদুকরী			স্বপন-মরু-চারিণী॥

বাণী

	দারুণ পিপাসায়
	মায়া-মরীচিকায়
চাহিতে এলি জল বনের হরিণী।
	দগ্ধ মরুতল
	কে তোরে দেবে জল
ঝরিবে আঁখি-নীর তোরই নিশিদিনই।।
নিবায়ে গৃহ-দীপ আপন-নিশাসে
আলেয়ার পিছে এলি সুখ-আশে,
	সে-সুখ অবসান
	সুমুখেতে শ্মশান —
পিছনে অন্ধকার চির-নিশীথিনী।।
কেন তুই বনফুল বিলাস-কাননে
করিয়া পথ ভুল এলি অকারণে।
	ছিঁড়ে সাঁঝে তোরে
	মালা গাঁথি’ ভোরে
দ’লিল বিলাসী পথ-ধূলি সনে।
সন্ধ্যা-গোধূলির রাঙা রূপে ভুলে’
আসিলি এ কোথায় তমসার কূলে।
	শ্রাবণ-মেঘ হায়
	ভাবিয়া কুয়াশায়
হারালি পথ তোর রে হতভাগিনী।।