বাণী

দেশে দেশে গেয়ে বেড়াই তোমার নামের গান
হে খোদা, এ যে তোমারই হুকুম, তোমারই ফরমান।।
এমনি তোমার নামের আছর –
নামাজ রোজার নাই অবসর,
তোমার নামের নেশায় সদা মশগুল মোর প্রাণ।।
তকদিরে মোর এই লিখেছ হাজার গানের সুরে
নিত্য দিব তোমার আজান আঁধার মিনার-চূড়ে।
কাজের মাঝে হাটের পথে
রণ-ভূমে এবাদতে
আমি তোমার নাম শোনাব, করব শক্তি দান।।

বাণী

দিনগুলি মোর পদ্মেরই দল যায় ভেসে যায় কালের স্রোতে
ওগো সুদূর ওগো বিধুর তোমার সাগর-তীর্থ -পথে।।
	বিফল দিনের কমলগুলি
	পড়লো ঝ'রে পাপড়ি খুলি'
নিও প্রিয় তদের তুলি দিন শেষের ম্লান আলোতে।।
সঞ্চিত মোর দিনগুলি হায় ছড়িয়ে গেল অযতনে;
তোমার বরণ-মালা গাঁথা হলো না আর এ জীবনে।
	অন্য মনে কখন বেভুল
	ভাসিয়ে দিলাম দলি সে ফুল
বঞ্চিত তাই হবে কি হায় তোমার চরণ-ছোওয়া হ'তে।।

বাণী

দাও দাও দরশন পদ্ম-পলাশ লোচন,
	কেঁদে দু’ নয়ন হ’ল অন্ধ।
আকাশ বাতাস ঘেরা, তব ও মন্দির বেড়া
	আর কতকাল রবে বন্ধ॥
পাখি যেমন সন্ধ্যাকালে, বন্ধু-স্বজন পালে পালে
উড়ে এসে ব’সেছিল ডালে হে।
রাত পোহালে একে এক, উড়ে গেল দিগ্বিদিকে,
	প’ড়ে আছি একা নিরানন্দ।
টুটিল বাঁধন মায়ার, কবে শুনিব এবার
	ও রাঙা চরণ নূপুর ছন্দ॥
দুখ-শোক রৌদ্রজলে, ফেলে মোরে পলে পলে
	ছলিতেছ হরি কত ছল হে
জীবনের বোঝা প্রভু, বহিতে কি হবে তবু
	সহিতে পারি না আর দ্বন্দ্ব।
মরণের সোনার ছোঁওয়ায়, ডেকে লও ও রাঙা পায়
	দেখাও এবার মুখ-চন্দ॥

বাণী

দুঃখ-ক্লেশ-শোক-পাপ-তাপ শত
শ্রান্তি মাঝে হরি শান্তি দাও দাও॥
কান্ডারি হে আমার, পার কর কর পার,
উত্তাল তরঙ্গ অশান্তি পারাবার,
অভাব দৈন্য শত হৃদি-ব্যথা-ক্ষত,
যাতনা সহিব কত প্রভু কোলে তুলে নাও।।
হে দীনবন্ধু করুণাসিন্ধু,
অম্বর ব্যাপি’ ঝরে তব কৃপা-বিন্দু,
মরুর্‌ মতন চেয়ে আছি নব ঘনশ্যাম —
আকুল তৃষ্ণা ল’য়ে প্রভু পিপাসা মিটাও॥

বাণী

দেশ গৌড়-বিজয়ে দেবরাজ গগনে এলো বুঝি সমর-সাজে।
তাহারি মেঘ-মৃদঙ্গ গুরু গুরু আষাঢ়-প্রভাতে সহসা বাজে।।
	গহন কৃষ্ণ ঐরাবত-দল
	রবিরে আবরি’ ঘিরিল নভতল,
হানে খরশর বৃষ্টি ধারা জল — পবন-বেগে প্রতি ভবন-মাঝে।।
	বনের এলোকেশ বিজলি-পাশে
	বাঁধিয়া দেব্-সেনা অট্রহাসে।
	শ্যামল গৌড়ের অমল হাসি
	শস্যে-কুসুমে ওঠে প্রকাশি’,
অঙ্গে তাহার আঘাত-রাশি — দেব-আশীর্বাদ হয়ে বিরাজে।।

বাণী

দেবযানীর মনে প্রথম প্রীতির কলি জাগে।
কাঁপে অধর-আঁখি অরুণ অনুরাগে।।
	নব-ঘন-পরশে
	কদম শিহরে যেন হরষে,
ভীরু বুকে তা’র তেমনি শিহরণ লাগে।।
দেব-গুরু-কুমার ভোলে সঞ্জীবনী-মন্ত্র,
তপোবনে তার জাগে ব্যাকুল বসন্ত।
	নব-সুর-ছন্দ
	আনিল অজানা আনন্দ,
পূজা-বেদী তার রাঙিল চন্দন-ফাগে।।
১. হরষণ