বাণী

	গগনে খেলায় সাপ বরষা-বেদিনী।
	দূরে দাঁড়ায়ে দেখে ভয়-ভীতা মেদিনী।।
	দেখায় মেঘের ঝাপি তুলিয়া
	ফনা তুলি’ বিদ্যুৎ-ফণি ওঠে দুলিয়া,
	ঝড়ের তুব্‌ড়িতে বাজে তার অশান্ত রাগিণী।।
	মহাসাগরে লুটায় তার সর্পিল অঞ্চল
	দিগন্তে দুলে তার এলোকেশ পিঙ্গল
	ছিটায় মন্ত্রপূত ধারাজল অবিরল তন্বী-মোহিনী।।
	অশনি-ডমরু ওঠে দমকি’
	পাতালে বাসুকি ওঠে চমকি’
তার 	ডাক শুনে ছুটে আসে নদীজল যেন পাহাড়িয়া নাগিনী।।

বাণী

গাহ নাম অবিরাম কৃষ্ণনাম কৃষ্ণনাম।
মহাকাল যে নামের করে প্রাণায়াম।।
যে নামের গুণে কংস কারার খোলে দ্বার।
বসুদেব যে নামে যমুনা হ’ল পার।
যে নাম মায়ায় হল তীর্থ ব্রজধাম।।
দেবকীর বুকের পাষাণ গলে,
যে নাম দোলে যশোদার কোলে।
যে নাম লয়ে কাঁদে রাই রসময়ী,
কুরুক্ষেত্রে যে নামে হল পান্ডব জয়ী।
গোলকে নারায়ণ, ভূলোকে রাধাশ্যাম।।

বাণী

গত রজনীর কথা পড়ে মনে রজনীগন্ধার মদির গন্ধে।
এই সে ফুলেরই মোহন-মালিকা জড়ায়ে ছিল সে কবরী-বন্ধে।।
বাহুর বল্লরী জড়ায়ে তার গলে
আধেক আঁচলে বসেছি তরুতলে,
		দুলেছে হৃদয় ব্যাকুল ছন্দে।।
মুখরা ‘বউ কথা কও’ ডেকেছে বকুল-ডালে,
লাজে ফুটেছে লালী গোলাপ-কুঁড়ির গালে।
কপোলের কলঙ্ক মোর মেটেনি আজো যে সই
জাগিছে তা’রি স্মৃতি চাঁদের কপোলে ঐ,
		কাঁদিছে নন্দন আজি নিরানন্দে।।

১. হাসিছে নন্দন আমি পরমানন্দে।।

বাণী

গহীন রাতে ঘুম কে এলে ভাঙাতে
ফুল-হার পরায়ে গলে দিলে জল নয়ন-পাতে।।
	যে জ্বালা পেনু জীবনে
	ভুলেছি রাতে স্বপনে
কে তুমি এসে গোপনে ছুঁইলে সে বেদনাতে।।
	যবে কেঁদেছি একাকী
	কেন মুছালে না আঁখি
নিশি আর নাহি বাকি, বাসি ফুল ঝরিবে প্রাতে।।

বাণী

গঙ্গা সিন্ধু নর্মদা কারেরী যমুনা ঐ
বাহিয়া চলেছে আগের মতন, কই রে আগের মানুষ কই।।
		মৌনী স্তব্ধ সে হিমালয়
		তেমনি অটল মহিমময়
নাই তার সাথে সেই ধ্যানী ঋষি, আমরাও আর সে জাতি নই।।
		আছে সে আকাশ ইন্দ্র নাই
		কৈলাসে সে যোগীন্দ্র নাই
অন্নদা-সুত ভিক্ষা চাই কি কহিব এরে কপাল বই।।
		সেই আগ্রা সে দিল্লী ভাই
		প’ড়ে আছে, সেই বাদশা নাই
নাই কোহিনুর ময়ূর-তখ্ত নাই সে বাহিনী বিশ্বজয়ী।
		আমরা জানি না, জানে না কেউ
		কূলে ব’সে কত গণিব ঢেউ
দেখিয়াছি কত, দেখিব এও নিঠুর বিধির লীলা কতই।।

বাণী

গ্রামের শেষের মাঠের পথে গান গেয়ে কে যায়
			একা বাউল আনমনা।
তার সুরে সবুজ ধানের ক্ষেত্রে ঢেউ খেলিয়া যায়
			গায় সাথে চপল-ঝরনা।।
	চলে নূপুর মুখর পায়
	সুর বাজিয়ে একতারায়,
তাথৈ তাথৈ হাততালি দেয় সাথে তালবনা।।
শান্ত নদীর কূলে হঠাৎ জোয়ার উঠে দুলে,
বালুচরে চম্‌কে চখা চাহে নয়ন তুলে’।
	ওঠে রেঙে আকাশ কোল্
	লাগে শাখায় শাখায় দোল্ লাগে দোল্,
মনের মাঝে এঁকে সে যায় সুরের আল্‌পনা।।