বাণী

হংস-মিথুন ওগো যাও ক’য়ে যাও।
বৈশাখী তৃষ্ণার জল কোথা পাও।।
কোন মানস-সরোবর জলে
পদ্মপাতার ছায়া-তলে,
পাখায় বাঁধিয়া পাখা দু’জনে প্রখর বিরহ দাহন জুড়াও।।
অলস দুপুর মোর কাটে না একা,
ঝ’রে যায় চন্দন-পত্রলেখা।
কখন আসিবে মেঘ নভে
মিটিবে আমার তৃষ্ণা কবে,
তৃষায় মূর্ছিতা চাতকী কোথায় তাহার ঘনশ্যাম, ব’লে দাও।।

বাণী

হেমন্তিকা এসো এসো হিমেল শীতল বন-তলে
শুভ্র পূজারিণী বেশে কুন্দ-করবী-মালা গলে।।
	প্রভাত শিশির নীরে নাহি'
	এসো বলাকার তরণী বাহি'
সারস মরাল সাথে গাহি' চরণ রাখি' শতদলে।।
ভরা নদীর কূলে কূলে চাহিছে সচকিতা চখি —
মানস-সরোবর হ'তে-অলক -লক্ষ্মী এলো কি?
	আমন ধানের ক্ষেতে জাগে
	হিল্লোল তব অনুরাগে,
তব চরণের রঙ লাগে কুমুদে রাঙা কমলে।।

বাণী

হে পাষাণ দেবতা!
মন্দির দুয়ার খোল কও কথা।।
দুয়ারে দাঁড়ায়ে শ্রান্তি-হীন দীর্ঘ দিন,
অঞ্চলের পূষ্পাঞ্জলি শুকায়ে যায় উষ্ণ বায়;
আঁখি দীপ নিভিছে হায়, কাঁপিছে তনুলতা।
শুভ্রবাসে পূজারিণী, দিন শেষে —
গোধুলির গেরুয়া রঙ হের প্রিয় লাগে এসে;
খোল দ্বার শরণ দাও, সহে না আর নীরবতা।।

বাণী

হোরির রঙ লাগে আজি গোপিনীর তনু মনে।
অনুরাগে-রাঙা গোরীর বিধু-বদনে॥
ফাগের লালী আনিল কে,
কাজল-কালো চোখে
কামনা-আবির ঝরে রাঙা নয়নে॥
অশোক রঙন ফুলের আভা জাগে ডালিম-ফুলী গালে,
নাচিছে হৃদয় আজি রসিয়ার নাচের তালে।
তাম্বুলীরাঙা ঠোঁটে ফাগুনের ভাষা ফোটে,
(তার) প্রাণের খুশির রং লেগেছে রাঙা বসনে॥

বাণী

হে পার্থসারথি! বাজাও বাজাও পাঞ্চজন্য শঙ্খ
চিত্তের অবসাদ দূর কর কর দূর
	ভয়–ভীত জনে কর হে নিঃশঙ্ক।।
ধনুকে টঙ্কার হানো হানো,
গীতার মন্ত্রে জীবন দানো;
	ভোলাও ভোলাও মৃত্যু–আতঙ্ক।।
মৃত্যু জীবনের শেষ নহে নহে —
শোনাও শোনাও — অনন্ত কাল ধরি’
অনন্ত জীবন প্রবাহ বহে।
দুর্মদ দুরন্ত যৌবন–চঞ্চল
ছাড়িয়া আসুক মা’র স্নেহ–অঞ্চল;
বীর সন্তানদল করুক সুশোভিত মাতৃ–অঙ্ক।।

বাণী

হারানো হিয়ার নিকুঞ্জপথে কুড়াই ঝরা ফুল একেলা আমি।
তুমি কেন হায় আসিলে হেথায় সুখের স্বরগ হইতে নামি।।
	চারিপাশে মোর উড়িছে কেবল
	শুকনো পাতা মলিন ফুল–দল,
বৃথাই কেন হায় তব আঁখিজল ছিটাও অবিরল দিবস–যামী।।
	এলে অবেলায় পথিক বেভুল
	বিঁধিছে কাঁটা নাহি যবে ফুল,
কি দিয়ে বরণ করি ও চরণ নিভিছে জীবন, জীবন–স্বামী।।