বাণী

ঝড়-ঝঞ্ঝার ওড়ে নিশান, ঘন-বজ্রে বিষাণ বাজে।
জাগো জাগো তন্দ্রা-অলস রে, সাজো সাজো রণ-সাজে।।
দিকে দিকে ওঠে গান, অভিযান অভিযান!
আগুয়ান আগুয়ান হও ওরে আগুয়ান
ফুটায়ে মরুতে ফুল-ফসল।
জড়ের মতন বেঁচে কি ফল? কে র’বি প’ড়ে লাজে।।
বহে স্রোত জীবন-নদীর, চল চঞ্চল অধীর,
তাহে ভাসিবি কে আয়, দূর সাগর ডেকে যায়।
হ’বি মৃত্যু-পাথার পার, সেথা অনন্ত প্রাণ বিরাজে।।
	পাঁওদল্‌ রণে চল্‌, চল্‌ রণে চল্‌
	পাঁওদল আগে চল্‌, চল্‌ রণে চল্‌
মরুতে ফোটাতে পারে ওই পদতল প্রাণ-শতদল।
	বিঘ্ন-বিপদে করি’ সহায়
	না-জানা পথের যাত্রী আয়,
স্থান দিতে হবে আজি সবায়, বিশ্ব-সভা-মাঝে।।

বাণী

ঝুমঝুম ঝুমরা নাচ নেচে কে এলো গো সই লো দেখে আয়।
বৈঁচি বনে বিরহে বাউরি বাতাস বহে এলোমেলো গো।।
আঁড়বাঁশি বাজায় আড়চোখে তাকায়
তীর হানার ভঙ্গিতে ধনুক বাঁকায়
নন্দন পাহাড়ে তাহারে দেখে চাঁদ আঁউরে গেল গো।।
ঝাঁকড়া চুলের পাশে টুলটুলে চোখ হাসে কতই ছলে
মোরলা মাছ যেন খেলে বেড়ায় গো কালো জলে।
মৌটুসির মো ফেলে ভোমরা রয় তাকিয়ে
গুরুজনের মত বটের তরু দাঁড়িয়ে জট পাকিয়ে
আমলকি গাছের আড়ালে লুকিয়ে দেখি, দেখতে কি তা পেল গো (সে)।।

নাটিকাঃ‘অর্জুন বিজয়’

বাণী

দ্বৈত	:	ঝুমুর নাচে ডুমুর গাছে ঘুঙুর বেঁধে গায় (লো)।
		নাচন দুজন মাদল, বাঁশি, নূপুর নিয়ে আয় (লো)।।
স্ত্রী	:	আর জনমে চোরকাঁটা তুই ছিলি (রে)
		এই জনমে আঁচল ছিঁড়ে হৃদয়ে বিঁধিলি।
পুরুষ	:	চোরকাঁটা নয় ছিলাম পানের খিলি লো
		গয়না ছিলাম গায় (লো)।।
স্ত্রী	:	ঝিলমিলয়ে ঝিলের জল নাচায় শালুক ফুল —
পুরুষ	:	শালুক যেন মুখাখানি তোর লো ঝিলের ঢেউ যেন এলোচুল।
স্ত্রী	:	কুহু কুহু ডেকে কোকিল কাহার কথা কহে
পুরুষ	:	সেই কথা কয় কোয়েলা আর জনমে করেছি যা তোরই বিরহে।
দ্বৈত	:	সে জনমের দু’টি হৃদয় এ জনমে হায়
		এক হতে যে চায় লো এক হতে যে চায়।।

বাণী

ঝরে ঝরঝর কোন্ গভীর গোপন ধারা এ শাঙনে।
আজি রহিয়া রহিয়া গুমরায় হিয়া একা এ আঙনে
ঘনিমা ঘনায় ঝাউ-বীথিকায় বেণু-বন-ছায় রে —
ডাহুকীরে খুঁজি’ ডাহুক কাঁদে আঁধার-গহনে।।
কেয়া-বনে দেয়া তুণীর বাঁধিয়া,
গগনে গগনে ফেরে গো কাঁদিয়া।
বেতস-বিতানে নীপ-তরুতলে
শিখী নাচ ভোলে পুছ-পাখা টলে,
মালতী-লতায় এলাইয়া বেণী কাঁদে বিষাদিনী রে —
কাজল-আঁখি কে নয়ন মোছে তমাল-কাননে।।

নাটক : ‘ঝিলিমিলি’

বাণী

ঝর ঝর ঝরে শাওন ধারা।
ভবনে এলো মোর কে পথহারা।।
বিরহ রজনী একেলা যাপি
সঘনে বহে ঝড় সভয়ে কাঁপি,
উথলি’ উঠে ঢেউ কুটীরে নাহি কেউ —
গগনে নাহি মোর চন্দ্রতারা।।
নিভেছে গৃহদীপ নয়নে বারি,
আঁধারে তব মুখ নাহি নেহারি।
তোমার আকুল কুন্তল বাসে
চেনা দিনের স্মৃতি স্মরণে আসে,
আজি কি এলে মোর প্রলয়-সুন্দর —
	ঝলকে বিদ্যুতে আঁখি-ইশারা।।

বাণী

ঝলমল জরীণ বেণী দুলায়ে প্রিয়া কি এলে 
সজল শাওন-মেঘে কাজল নয়ন মেলে।।
কেয়া ফুলের পরিমল, ঝুরে মরে তব পথে,
হেরি দীঘল তব তনু তাল পিয়াল তরু পড়ে হেলে’।।
পরিবে বলিয়া খোঁপায় ঝরিছে বকুল চাঁপা
তোমায় খুঁজিছে আকাশ তারার প্রদীপ জ্বেলে।।
তোমারি লাবনি প্রিয়া ঝরিছে শ্যামল মেঘে,
ফুটালে ফুল মরুভূমে চঞ্চল চরণ ফেলে।।