বাণী

ঝরে বারি গগনে ঝুরু ঝুরু।
জাগি একা ভয়ে নিদ্‌ নাহি আসে,
ভীরু হিয়া কাঁপে দুরু দুরু।।
দামিনী ঝলকে, ঝনকে ঘোর পবন
ঝরে ঝর ঝর নীল ঘন।
রহি’ রহি’ দূরে কে যেন কৃষ্ণা মেয়ে
মেঘ পানে ঘন হানে ভুরু।।
অতল তিমিরে বাদলের বায়ে
জীর্ণ কুটীরে জাগি দীপ নিভায়ে,
দূরে দেয়া ডাকে গুরু গুরু।।

বাণী

ঝড়ের বাঁশিতে কে গেলে ডেকে হে তরুণ অশান্ত।
গুরু গুরু বাজিল মেঘ-মৃদঙ্গ দুলিয়া উঠিল বন-বনান্ত।।
		সাগর তরঙ্গ মাঝে
		তব মণি-মঞ্জির বাজে,
অম্বর ব্যাপিয়া দোলে ধূলি-গৈরিক তব বসন-প্রান্ত।।
		শাওন-ঘন তব লাবনি
		বিন্দু বিন্দু ঝরি’ ভরিল অবনী,
কৃষ্ণ-চূড়ার রাঙা অঞ্জলি ঝরে চঞ্চল তব চরণে হে কান্ত।।

বাণী

ঝরে ঝরঝর কোন্ গভীর গোপন ধারা এ শাঙনে।
আজি রহিয়া রহিয়া গুমরায় হিয়া একা এ আঙনে
ঘনিমা ঘনায় ঝাউ-বীথিকায় বেণু-বন-ছায় রে —
ডাহুকীরে খুঁজি’ ডাহুক কাঁদে আঁধার-গহনে।।
কেয়া-বনে দেয়া তুণীর বাঁধিয়া,
গগনে গগনে ফেরে গো কাঁদিয়া।
বেতস-বিতানে নীপ-তরুতলে
শিখী নাচ ভোলে পুছ-পাখা টলে,
মালতী-লতায় এলাইয়া বেণী কাঁদে বিষাদিনী রে —
কাজল-আঁখি কে নয়ন মোছে তমাল-কাননে।।

নাটক : ‘ঝিলিমিলি’

বাণী

ঝলমল জরীণ বেণী দুলায়ে প্রিয়া কি এলে 
সজল শাওন-মেঘে কাজল নয়ন মেলে।।
কেয়া ফুলের পরিমল, ঝুরে মরে তব পথে,
হেরি দীঘল তব তনু তাল পিয়াল তরু পড়ে হেলে’।।
পরিবে বলিয়া খোঁপায় ঝরিছে বকুল চাঁপা
তোমায় খুঁজিছে আকাশ তারার প্রদীপ জ্বেলে।।
তোমারি লাবনি প্রিয়া ঝরিছে শ্যামল মেঘে,
ফুটালে ফুল মরুভূমে চঞ্চল চরণ ফেলে।।

বাণী

ঝুমঝুম ঝুমরা নাচ নেচে কে এলো গো সই লো দেখে আয়।
বৈঁচি বনে বিরহে বাউরি বাতাস বহে এলোমেলো গো।।
আঁড়বাঁশি বাজায় আড়চোখে তাকায়
তীর হানার ভঙ্গিতে ধনুক বাঁকায়
নন্দন পাহাড়ে তাহারে দেখে চাঁদ আঁউরে গেল গো।।
ঝাঁকড়া চুলের পাশে টুলটুলে চোখ হাসে কতই ছলে
মোরলা মাছ যেন খেলে বেড়ায় গো কালো জলে।
মৌটুসির মো ফেলে ভোমরা রয় তাকিয়ে
গুরুজনের মত বটের তরু দাঁড়িয়ে জট পাকিয়ে
আমলকি গাছের আড়ালে লুকিয়ে দেখি, দেখতে কি তা পেল গো (সে)।।

নাটিকাঃ‘অর্জুন বিজয়’

বাণী

ঝঞ্ঝার ঝাঁঝর বাজে ঝনঝন
বনানী-কুন্তল এলাইয়া ধরণী
কাঁদিছে পড়ি চরণে শনশন শনশন।।
দোলে ধূলি-গৈরিক পতাকা গগনে,
ঝামর কেশে নাচে ধূর্জটি সঘনে।
হর-তপোভঙ্গের ভুজঙ্গ নয়নে,
সিন্ধুর মঞ্জীর চরণে বাজে রনরন রনরন।।