বাণী

কাজরি গাহিয়া এসো গোপ-ললনা।
শ্রাবণ-গগনে দোলে মেঘ-দোলনা।।
পর সবুজ-ঘাগরি চোলি নীল ওড়না,
মাখো অধরে মধুর হাসি, চোখে ছলনা।।
কদম-চন্দ্রহার প’রে এসো চন্দ্রাবলী
তমাল-শাখা-বরণা এসো বিশাখা-শ্যামলী,
বাজায় করতাল দূরে তাল-বনা।।
লাবনি-বিগলিতা এসো সকরুণ ললিতা
যমুনা-কূলে এসো ব্রজবধূ কুল-ভীতা,
অলকে মাখিয়া নব জল-কণা।।

বাণী

কা’বার জিয়ারতে তুমি কে যাও মদিনায়।
আমার সালাম পৌঁছে দিও নবীজীর রওজায়।।
	হাজিদের ঐ যাত্রা-পথে
	দাঁড়িয়ে আছি সকাল হ’তে,
কেঁদে’ বলি, কেউ যদি মোর সালাম নিয়ে যায়।।
পঙ্গু আমি, আরব সাগর লঙ্ঘি কেমন ক’রে,
তাই নিশিদিন কাবা যাওয়ার পথে থাকি প’ড়ে।
	বলি, ওরে দরিয়ার ঢেউ
	মোর সালাম নিয়ে গেল না কেউ,
তুই দিস্ মোর সালামখানি মরুর ‘লু’-হাওয়ায়।।

বাণী

কও কথা কও কথা, কথা কও হে দেবতা।
তুমি তো জানো স্বামী আমার প্রাণে কত ব্যথা।।
		মোর তরে আজি সকল দুয়ার
		হইল বন্ধ হে প্রভু আমার
তুমি খোলো দ্বার! সহে না যে আর সহে না এ নীরবতা।।
		শুনি অসহায় মোর ক্রন্দন
		গলিবে না পাষাণের নারায়ণ
ভোলো অভিমান চরণে লুটায় পূজারিণী আশাহতা।।

নাটিকাঃ ‍‌'মীরাবাঈ'

বাণী

কোন্ মহাব্যোমে ধ্বনি ওঠে ওম্, আদি আকাশ বাণী।
কোন্ মহামৌনীর ধ্যান ভাঙে কোন্ বিরহের বীণাপাণি —
			নাহি জানি নাহি জানি।।
	নিথর শূন্য অসীমে কোথায়
	কে সে প্রণব-শঙ্খ বাজায়,
সেই ধ্বনি বুঝি জ্যোতির্জ্জগতে বাহিরে আনিছে টানি।।
কোন্ অজানার অলখ-জটায় কথার গঙ্গা কাঁদে
কোন্ মায়াতীত সুন্দর হ’ল পড়িয়া মায়ার ফাঁদে।
	কার সাথে এত কথা কহিবার
	এত সে-গোপন সাধ ছিল তার,
তাহারি বাঁশরি-ধ্বনির কথা কি ব্রজে হয় কানাকানি।।

বাণী

কেন নিশি কাটালি অভিমানে।
ডুবে গেল চাঁদ দূর বিমানে।।
মান-ভরে চাতকী এ বাদলে
মিটালি না পিয়াসা মেঘ-জলে,
কোথা রবে এ মেঘে কেবা জানে।।
রহে চাঁদ দূরে অমা নিশীথে
তবু ফোটে কুমুদী সরসীতে,
রহে চাহি’ কলঙ্কী শশী-পানে।।
যে ফাগুনে ফুল ফুটিল রাতে
রবে না সে-ফাগুন কালি প্রাতে,
যে ফুটিল না, সে শুকাবে বাগানে।।

বাণী

কত কথা ছিল তোমায় বলিতে
ভুলে যাই হয় না বলা পথ চলিতে।।
ভ্রমরা আসে যবে বনেরই পথে
না-বলা সেই কথা কয় ফুল-কলিতে।।
পুড়ে মরে পতঙ্গ, দীপ তবু
পারে না বলিতে, থাকে জ্বলিতে।।
সে কথা কইতে গিয়ে গুণীর বীণা
কাঁদে কভু সারঙ কভু ললিতে।।
যত বলিতে চাই লুকাই তত
গেল মোর এ জনম হায় মন ছলিতে।।