বাণী

		কারো ভরসা করিসনে তুই (ও মন) এক আল্লার ভরসা কর।
		আল্লা যদি সহায় থাকেন (ও তোর) ভাবনা কিসের, কিসের ডর।।
		রোগে শোকে দুঃখে ঋণে নাই ভরসা আল্লা বিনে রে
তুই		মানুষের সহায় মাগিস (তাই) পাস্‌নে খোদার নেক্‌-নজর।।
		রাজার রাজা বাদশাহ্‌ যিনি গোলাম হ তুই সেই খোদার,
		বড় লোকের দুয়ারে তুই বৃথাই হাত পাতিস্‌নে আর।
		তোর দুখের বোঝা ভারি হ’লে ফেলে প্রিয়জনও যায় রে চ’লে
সেদিন	ডাক্‌লে খোদায় তাঁহার রহম (ওরে) ঝরবে রে তোর মাথার ’পর।।

বাণী

	কেন আমায় আন্‌লি মাগো মহাবাণীর সিন্ধু কূলে।
মোর	ক্ষুদ্র ঘটে এ সিন্ধু-জল কেমন ক’রে নেবো তুলে।।
	চতুর্বেদে এই সিন্ধুর জল
	ক্ষুদ্র চারিবিন্দু হয়ে করছে টলমল,
	এই বাণীরই বিন্দু যে মা গ্রহ তারা গগন মূলে।
	ইহারই বেগ ধরতে শিরে, শিবের জটা পড়ে খুলে।।
	অনন্তকাল রবি-শশী এই সে-মহাসাগর হ’তে,
	সোনার ঘটে রসের ধারা নিয়ে ছড়ায় ত্রিজগতে।
	বাঁশিতে মোর স্বল্প এ আধারে
	অনন্ত সে-বাণীর ধারা ধরতে কি মা পারে?
	শুনেছি মা হয় সীমাহীন ক্ষুদ্রও তোর চরণ ছুঁলে।।

বাণী

কোথায় তুই খুঁজিস ভগবান্, সে যে রে তোরই মাঝে রয়,
			চেয়ে দেখ সে তোরই মাঝে রয়।
সাজিয়া যোগী ও দরবেশ খুঁজিস্ যায় পাহাড় জঙ্গলময়।।
আঁখি খোল্ ইচ্ছা-অন্ধের দল নিজেরে দেখ্ রে আয়নাতে,
দেখিবি তোরই এই দেহে নিরাকার তাঁহার পরিচয়।।
ভাবিস্ তুই ক্ষুদ্র কলেবর, ইহাতেই অসীম নীলাম্বর,
এ দেহের আধারে গোপন রহে সে বিশ্ব-চরাচর।
প্রাণে তোর প্রাণের ঠাকুর বেহেশ্‌তে স্বর্গে কোথাও নয়।।
এই তোর মন্দির-মসজিদ এই তোর কাশী-বৃন্দাবন,
আপনার পানে ফিরে চল কোথা তুই তীর্থে যাবি, মন!
এই তোর মক্কা-মদিনা, জগন্নাথ-ক্ষেত্র এই হৃদয়।।

বাণী

		করুণা তোর জানি মাগো আসবে শুভদিন।
		হোক না আমার চরম ক্ষতি থাক না অভাব ঋণ।।
			আমায় ব্যথা দেওয়ার ছলে
			টানিস্ মা তোর অভয় কোলে,
		সন্তানে মা দুঃখ দিয়ে রয় কি উদাসীন।।
(তোর)	কঠোরতার চেয়ে বেশি দয়া জানি ব’লে,
		ভয় যত মা দেখাস্ তত লুকাই তোরই কোলে।
			সন্তানে ক্লেশ দিস্ যে এমন
			হয়ত মা তার আছে কারণ,
তুই		কাঁদাস্ ব’লে বল্‌ব কি মা হ’লাম মাতৃহীন।।

বাণী

কার নিকুঞ্জে রাত কাটায়ে আস্‌লে প্রাতে পুষ্প-চোর।
ডাকছে পাখি, ‘বৌ গো জাগো’ আর ঘুমায়ো না, রাত্রি ভোর।।
যুঁই-কুঁড়িরা চোখ মেলে চায় চুম্‌কুড়ি দেয় মৌমাছি
শাপলা-বনে চাঁদ ডুবে যায় ম্লান চোখে হায় চায় চকোর।।
ঘোম্‌টা ঠেলি’ কয় চামেলি গোল ক’রো না গুল্‌-ডাকাত,
ঢুলছে নয়ন, দুলছে গলায় বেল-টগরের ছিন্ন ডোর।।
গুন্‌গুনিয়ে মোর আঙিনায় কোন্‌ সতীনের গাইছ গুন্‌
কার মালঞ্চে ফুল ফোটায়ে হুল ফোটালে বক্ষে মোর।।

বাণী

কে তুমি দূরের সাথি
		এলে ফুল ঝরার বেলায়।
বিদায়ের বংশী বাজে
		ভাঙা মোর প্রাণের মেলায়॥
গোধূলির মায়ায় ভুলে
এলে হায় সন্ধ্যা-কূলে,
দীপহীন মোর দেউলে
		এলে কোন্‌ আলোর খেলায়॥
সেদিনো প্রভাতে মোর 
		বেজেছে আশাবরি,
পূরবীর কান্না শুনি
		আজি মোর শূন্য ভরি।
অবেলায় কুঞ্জবীথি
এলে মোর শেষ অতিথি,
ঝরা ফুল শেষের গীতি
		দিনু দান তোমার গলায়॥