বাণী

কাঁদিতে এসেছি আপনার ল’য়ে কাঁদাতে আসিনি হে প্রিয়, তোমারে।
এ মম আঁখি-জল আমরি নয়নের, ঝরিবে না এ জল তোমার দুয়ারে।।
	ভালো যদি বাসি একাকী বাসিব
	বিরহ-পাথারে একাকী ভাসিব,
কভু যদি ভুলে আসি তব কূলে, চমকি’ চলিয়া যাব দূর পারে।।
	কাঁটার বনে মোর ক্ষণেকের তরে
	ফুটেছে রাঙা ফুল শুধু লীলা-ভরে,
	মালা হয়ে কবে দুলিবে গলে কা’র।
	জাগিব একাকী ল’য়ে স্মৃতি কাঁটার
	কেহ জানিবে না, শুকাল কে কোথা
	কা’র ফুলে কা’রে সাজালে দেবতা,
নিশীথ-অশ্রু মোর ঝরিবে বিরলে তব সুখ-দিনে হসির মাঝারে।।

১. মম আঁখি-বারি, ২. থাকুক আমারি, ৩. গলে

বাণী

কেন মরিতে আসিলাম যমুনায়, ললিতা কেন বিপরীত হেরিলাম।
কৃষ্ণ-যমুনা-জলে কারে ল’য়ে কুতুহলে জল-খেলা করে ঘনশ্যাম।।
কালো মেঘের যেন খেলে বিজলি
সোনার-প্রতিমার প্রতিবিম্ব কালো জলে
কালো মেঘে যেন খেলে বিজলি।
হিরন্ময়ী জ্যোতির্ময়ী সতিনীর রূপ আমি যত দেখি গো তত মজি সখি গো!
অতি জ্যোতি গর্বিতা যেন পতি সোহাগিনী সতীসম কে এ সতিনী, ললিতে,
মোর শ্যাম অঙ্গে অপরূপ ভঙ্গে আমারই সমুখে করে খেলা, মোরে ছলিতে।
ও কি কায়া না ছায়া!
ও কি কৃষ্ণ রূপের চঞ্চল জল-তরঙ্গ মায়া?
সখি মান ভাঙাতে মোর এসেছিল গোপনে শ্যাম আজি প্রভাতে (সখি),
শ্যাম-তনুমুকুরে হেরিলাম বিরাজে গৌর-বর্ণা নারী অপরূপ শোভাতে।
এলো অভিমান মনে, তাই
মনে হলে যমুনায় ডুবিয়া ললিতা শান্তি যদি পাই।
এখানেও দেখি সেই গৌরী কিশোরী আছে শ্যামে জড়ায়ে।
(ও কি কায়া না মায়া ও কি কৃষ্ণেরই রঙ্গ না আমারই ছায়া কায়া না মায়া।)
কোন্ দেশে যাব সখি কোন্ খানে পাব শ্যামে একাকী।
আন-নারীরে ছেড়ে কেবল রাধার হয়ে দেবে না দেখা কি (সখী গো)।।

গীতিচিত্র : ‘অভিমানিনী’

বাণী

	কে সাজালো মাকে আমার বিসর্জনের বিদায় সাজে
	আজ সারাদিন কেন এমন করুণ সুরে বাঁশি বাজে॥
	আনন্দেরি প্রতিমাকে হায়, বিদায় দিতে পরান নাহি চায়
	মা-কে ভাসিয়ে জলে কেমন করে রইব আঁধার ভবন মাঝে॥
মা’র	আগমনে বেজেছিল প্রাণে নূতন আশার বাঁশি
	দুঃখ শোক ভয় ভুলেছিলাম দেখে মা অভয়ার মুখের হাসি।
	মা দশ হাতে আনন্দ এনেছিল, বিশ হাতে আজ দুঃখ ব্যথা দিল
মা	মৃন্ময়ীকে ভাসিয়ে জলে, পাব চিন্ময়ীকে বুকের মাঝে॥

বাণী

কে দুয়ারে এলে মোর তরুণ ভিখারি
কি যাচে ও আঁখি বুঝিতে যে নারি॥
হৃদি প্রাণ মন বিভব রতন
ডারিনু চরণে লহ পথচারী॥
দুয়ারে মোর নিতি গেয়ে যায় যে গীতি
নিশিদিন বুকে বেঁধে তারি স্মুতি।
কি দিয়ে এ ব্যথা নিবারিতে পারি॥
মিলন বিরহ যা চাও প্রিয় লহ
দাও ভিখারিনী বেশ দাও ব্যথা অসহ
মোর নয়নে দাও তব নয়ন বারি॥

নাটকঃ ‘আলেয়া’

বাণী

কিশোর গোপ-বেশ মুরলিধারী শ্রীকৃষ্ণ গোবিন্দ।
দ্বিভুজ শ্যাম সুন্দর মূরতি অপরূপ অনিন্দ্য।।
	পরমাত্মারূপী পরম মনোহর
	গোলকবিহারী চিন্ময় নটবর,
ময়ূর পাখাধারী চিকুর চাঁচর মণি-মঞ্জীর শোভিত শ্রীচরণারবিন্দ।।
গলে দোলে নব বিকশিত কদম ফুলের মালা
খেলে ঘিরে যাঁরে প্রেমময়ী গোপবালা,
	শোভিত স্বর্ণবর্ণ পীতবাসে
	ওঙ্কার বিজড়িত শ্রীরাধার পাশে,
পদ্মপলাশ আঁখি মৃদু-হাসে — যেরূপ ধেয়ায় মুনি ঋষি দেববৃন্দ।।

বাণী

কত ফুল তুমি পথে ফেলে দাও (প্রিয়) মালা গাঁথ অকারনে
আমি চয়েছিনু একটি কুসুম সেই কথা পড়ে মনে।।
	তব ফুলবনে কত ছায়া দোলে
	জুড়াইতে চেয়েছিনু তারি তলে
চাহিলে না ফিরে চলে গেলে ধীরে ছায়া-ঢাকা অঙ্গনে।।
অঞ্জলি পাতি' চেয়েছিনু, তব ভরা ঘটে ছিল বারি
শুষ্ক-কন্ঠে ফিরিয়া আসিনু পিপাসিত পথচারী।
	বহুদিন পরে দাঁড়াইনু এসে
	তোমারি দুয়ারে উদাসীন বেশে
শুকানো মালিকা কেন দিলে তুমি তব ভিক্ষার সনে।।