বাণী

কে এলো ওরে কে এলো শুকানো মানস-মাধবী-কুঞ্জে।
জানাইতে মোরে কার আগমনী চরণে নূপুর-মুঞ্জে।।
	তারি সাথে জাগে নব কিশলয়
	ধীরি ধীরি ধীরি বহিল মলয়,
ফোটা ফুলে ফুলে সুখে দুলে দুলে অলিকুল মধুগুঞ্জে।।
	গেছে কত যুগ-যুগান্ত,
	এলো ফিরে ফিরে হৃদয়প্রান্ত।
	পিক সুকণ্ঠে গায় আবাহন
	বন-শোভা-গণ করিছে বরণ,
মিলনের তরে খুঁজিছে পিয়ারে ফুটিল কুসুম কুঞ্জে কুঞ্জে।।

বাণী

কৃষ্ণ কৃষ্ণ বল্ রসনা রাধা রাধা বল্,
রাধাকৃষ্ণ রাধাকৃষ্ণ রাধাকৃষ্ণ বল্।।
যোগে খোঁজেন শিব কৃষ্ণ-গোবিন্দে
ব্রহ্মা পূজেন রাধা-চরণারবিন্দে,
অধরা যুগল চাঁদে ধরিল প্রেমের ফাঁদে গোপ গোপীদল।।
(মোর) শ্রীকৃষ্ণে থাকে যেন অটল মতি
সেই মতি দেন্ মোর রাধা শ্রীমতী,
মন-বৃন্দাবনে ফোটে কৃষ্ণ নামের ফুল —
ঝরায়ে সে-ফুল রাই দেন সবে প্রেম-ফল।।
রাধাকৃষ্ণ বল্ ওরে নর-নারী
সংসার বনে তোরা যেন শুক-শারি,
তার, পরানে নিত্য রাস-রসের উল্লাস —
যাহার হৃদয়ে দোলে মূরতি যুগল।।

বাণী

কত যুগ যেন দেখিনি তোমারে দেখি নাই কতদিন।
তুমি যে জীবন, তোমারে না হেরি’, হয়েছিনু প্রাণহীন।।
তুমি যেন বায়ু, বায়ু যবে নাহি বয়
আমি ঢুলে পড়ি আয়ু মোর নাহি রয়,
তুমি যেন জল, বাঁচিতে পারিনা জল বিনা আমি মীন।।
তুমি জানো নাগো তব আশ্রয় বিনা আমি কত অসহায়,
তুমি না ধরিলে আমার এ তনু বাতাসে মিশায়ে যায়।
তাই মোর দেহ পাগলের প্রায়
তোমার অঙ্গ জড়াইতে চায়,
তাই উপবাসী তনু মোর হের দিনে দিনে হয় ক্ষীণ।।

বাণী

	কেঁদো না কেঁদো না মাগো কে বলেছে কালো?
	ইষৎ হাসিতে তোর ত্রিভুবন আলো, কে বলেছে কালো।।
		কে দিয়েছে গালি তোরে, মন্দ সে মন্দ!
		যে বলেছে কালি তোরে, অনধ সে অন্ধ!
মোর	তারায় সে দেখে নাই তার নয়ন-তারা য়নাই আলো!
		তাই তারায় সে দেখে নাই।।
রাখে	লুকিয়ে মা তোর নয়ন-কমল (মাগো)
		কোটি আলোর সহস্র দল
তোর	রূপ দেখে মা লজ্জায় শিব অঙ্গে ছাই মাখালো।।
তোর	নীল -কপোলে কোটি তারা, চন্দনেরি ফোটার পারা
		ঝিকিমিকি করে গো —
মা	তোর দেহলতায় অতুল কোটি রবি -শশীর মুকুল
		ফোটে আবার ঝরে গো —
তুমি	হোমের শিখা বহ্নি- জ্যোতি, তুমি স্বাহা দীপ্তিমতী
	আঁধার ভুবন ভবনে মা কল্যাণ-দীপ জ্বালো
		তুমি কল্যাণ-দীপ জ্বালা।।

বাণী

কালা		এত ভাল কি হে কদম্ব গাছের তলা।
আমি		দেখ্‌ছি কত দেখ্‌ব কত তোমার ছলাকলা;
আমি		নিতুই নিতুই সবই কত, (কালা) তিন সতিনের জ্বালা॥
আমি		জল নিতে যাই যমুনাতে তুমি বাজাও বাঁশি হে,
		মনের ভুলে কলস ফেলে তোমার কাছে আসি হে,
শ্যাম		দিন-দুপুরে গোকুলপুরে (আমার) দায় হল পথ চলা॥
আমার	চারদিকেতে ননদ-সতীন দু’কূল রাখা ভার,
		আমি সইব কত আর বাঁকা শ্যাম।
ওরা		বুঝছে সবই নিত্যি-নতুন, (নিতি) মিথ্যে কথা বলা॥

বাণী

কৃষ্ণা নিশীথ নাচে ঝিল্লির নূপুর বাজে।
রিমিঝিমি রিমিঝিমি মৃদু আওয়াজে।।
আঁধারের চাঁচর চিকুর খুলিয়া
আপন মনে নাচে হেলিয়া দুলিয়া,
মুঠি মুঠি হিম-কণা তারা-ফুল তুলিয়া
ছুঁড়ে ফেলে ধরণী মাঝে।।
তার	মণি-হার খুলে পড়ে উল্কা-মানিক,
তার	নাচের নেশায় ঝিমায় দশ্‌দিক।
	আধো-রাতে আমি শুনি স্বপনে
তার	গুঞ্জন-গীত কানে-কথা গোপনে,
	কালো-রূপের শিখা, ওকি শ্যামা বালিকা
	নাচে নাচে জাগাইতে নটরাজে।।