বাণী

কত সে-জনম কত সে-লোক পার হয়ে এলে, হে প্রিয় মোর।
নিভে গেছে কত তপন-চাঁদ তোমারে খুঁজিয়া, হে মন চোর।।
	কত গ্রহে, প্রিয়, কত তারায়
	তোমারে খুঁজিয়া ফিরেছি, হায়!
চাহ এ নয়নে হেরিবে তায়, সে-দূর স্মৃতির স্বপন-ঘোর।।
	আজো অপূর্ণ কত সে-সাধ
	অভিমানী তাহে সেধো না বাদ!
না মিটিতে সাধ, স্বপন-চাঁদ, মিলনের নিশি ক’রো না ভোর।।

বাণী

	কে সাজালো মাকে আমার বিসর্জনের বিদায় সাজে
	আজ সারাদিন কেন এমন করুণ সুরে বাঁশি বাজে॥
	আনন্দেরি প্রতিমাকে হায়, বিদায় দিতে পরান নাহি চায়
	মা-কে ভাসিয়ে জলে কেমন করে রইব আঁধার ভবন মাঝে॥
মা’র	আগমনে বেজেছিল প্রাণে নূতন আশার বাঁশি
	দুঃখ শোক ভয় ভুলেছিলাম দেখে মা অভয়ার মুখের হাসি।
	মা দশ হাতে আনন্দ এনেছিল, বিশ হাতে আজ দুঃখ ব্যথা দিল
মা	মৃন্ময়ীকে ভাসিয়ে জলে, পাব চিন্ময়ীকে বুকের মাঝে॥

বাণী

কেউ		ভোলে না কেউ ভোলে অতীত দিনের স্মৃতি
কেউ		দুঃখ ল’য়ে কাঁদে কেউ ভুলিতে গায় গীতি।।
কেউ		শীতল জলদে হেরে অশনির জ্বালা
কেউ		মুঞ্জরিয়া তোলে তার শুষ্ক কুঞ্জ–বীথি।।
হেরে		কমল–মৃণালে কেউ কাঁটা কেহ কমল।
কেউ		ফুল দলি’ চলে কেউ মালা গাঁথে নিতি।।
কেউ		জ্বালে না আর আলো তার চির–দুখের রাতে,
কেউ		দ্বার খুলি’ জাগে চায় নব চাঁদের তিথি।।

বাণী

কত কথা ছিল তোমায় বলিতে
ভুলে যাই হয় না বলা পথ চলিতে।।
ভ্রমরা আসে যবে বনেরই পথে
না-বলা সেই কথা কয় ফুল-কলিতে।।
পুড়ে মরে পতঙ্গ, দীপ তবু
পারে না বলিতে, থাকে জ্বলিতে।।
সে কথা কইতে গিয়ে গুণীর বীণা
কাঁদে কভু সারঙ কভু ললিতে।।
যত বলিতে চাই লুকাই তত
গেল মোর এ জনম হায় মন ছলিতে।।

বাণী

কেন চঞ্চল অঞ্চল দুলিয়া ওঠে রহি’ রহি’।
মুহু মুহু কুহু কুহু কুহু যে কহে এলে কে বিরহী।।
কেন নূপুর বেজে ওঠে ছন্দে
দোলা লাগে অঙ্গে আনন্দে,
দখিন হাওয়া কেন অধীর হল হেন —
কুসুমের কানে যায় কি কথা কহি’।।

বাণী

কত যুগ যেন দেখিনি তোমারে দেখি নাই কতদিন।
তুমি যে জীবন, তোমারে না হেরি’, হয়েছিনু প্রাণহীন।।
তুমি যেন বায়ু, বায়ু যবে নাহি বয়
আমি ঢুলে পড়ি আয়ু মোর নাহি রয়,
তুমি যেন জল, বাঁচিতে পারিনা জল বিনা আমি মীন।।
তুমি জানো নাগো তব আশ্রয় বিনা আমি কত অসহায়,
তুমি না ধরিলে আমার এ তনু বাতাসে মিশায়ে যায়।
তাই মোর দেহ পাগলের প্রায়
তোমার অঙ্গ জড়াইতে চায়,
তাই উপবাসী তনু মোর হের দিনে দিনে হয় ক্ষীণ।।