বাণী

কেন গো যোগিনী! বিধুর অভিমানে।
যৌবনে মগন গভীর ধ্যানে।।
হের গো কুসুম ঝরিয়া পায়ে,
চাহিয়া রহে ধরণীর পানে।।

বাণী

	কিশোরী, মিলন-বাঁশরি
শোন	বাজায় রহি’ রহি’ বনের বিরহী —
	লাজ বিসরি’ চল জল্‌কে।
তার	বাঁশরি শুনি’ কথার কুহু
	ডেকে ওঠে কুহুকুহু - মুহুমুহু;
	রস-যমুনা-নীর হ’ল অধীর, রহে না থির;
ও তার 	দু-কূল ছাপায়ে তরঙ্গদল ওঠে ছল্‌কে॥    
	কেন লো চম্‌কে দাঁড়ালি থম্‌কে —
পেলি	দেখতে কি তোর প্রিয়তম্‌কে!
পেয়ে	তারি কি দেখা নাচিছে কেকা,
হ’ল	উতলা মৃগ কি দেখে চপল্‌কে॥

নাটকঃ ‘চক্রব্যূহ’

বাণী

কেন	মনোবনে মালতী-বল্লরি দোলে - জানি না।
কেন	মুকুলিকা ফুটে ওঠে পল্লব-তলে - জানি না।।
কেন	ঊর্মিলা-ঝরনার পাশে
সে	আপন মঞ্জরি-ছায়া দেখে' হাসে,
কেন	পাপিয়া কুহু মুহু মুহু বোলে, জানি না।।
চৈতালি-চাঁপা কয়, মালতী শোন
শুনেছিস বুঝি মধুকর গুঞ্জন,
তাই বুঝি এত মধু সুরভি উথলে —
মধু-মালতী বলে, জানি না, জানি না।।

বাণী

	কি নাম ধ'রে ডাকবো তোরে মা তুই দে ব'লে
ওমা	কি নাম ধ'রে কাঁদলে পরে ধ'রে তুলিস কোলে (মাগো)।।
	বনে খুঁজি মনে খুঁজি পটে দেখি ঘটে পূজি
	মন্দিরে যাই কেঁদে লুটাই মাগো —
	পাষাণ প্রতিমা মা তোর একটুও না টলে।।
	কোল যদি না দিবি মাগো, আনলি কেন ভবে,
আমি	জনম নিয়ে এসেছি যে তোর কোলেরই লোভে।
আমি	রইতে নারি মা না পেয়ে, মরণ দে মা তাহার চেয়ে
	এ-ছার জীবনে কোন প্রয়োজন মাগো
	আমি কোটি বার মা মরতে পারি মা যদি পাই ম'লে।।

বাণী

‘কালী কালী’ মন্ত্র জপি ব’সে শোকের ঘোর শ্মশানে।
মা অভয়ার নাম গুণে শান্তি যদি পাই এ প্রাণে।।
	এই শ্মশানে ঘুমিয়ে আছে
	যে ছিল মোর বুকের কাছে,
সে হয়ত আবার উঠবে জেগে মা ভবানীর নাম-গানে।।
সকল সুখ শান্তি আমার নিল হ’রে যে-পাষাণী,
শূন্য বুকে বন্দী ক’রে রাখব আমি তারেই আনি’।
	মোর, যাহা প্রিয় মাকে দিয়ে
	জাগি আশার দীপ জ্বালিয়ে,
মা’র সেই চরণের নিলাম শরণ, যে-চরণে মা আঘাত হানে।।

১. বুকে চিতা, ২. যে চরণে প্রলয় আনে

বাণী

কি হবে জানিয়া বল কেন জল নয়নে
তুমি তো ঘুমায়ে আছ সুখে ফুল-শয়নে।।
তুমি কি বুঝিবে বালা কুসুমে কীটের জ্বালা,
কারো গলে দোলে মালা কেহ ঝরে পবনে।।
আকাশের আঁখি ভরি’ কে জানে কেমন করি’
শিশির পড়ে গো ঝরি’, ঝরে বারি শাওনে।
নিশীথে পাপিয়া পাখি এমনি তো ওঠে ডাকি’
তেমনি ঝুরিছে আঁখি বুঝি বা অকারণে।।
কে শুধায়, আঁধার চরে চখা কেন কেঁদে মরে,
এমনি চাতক-তরে মেঘ ঝুরে গগনে।।
কারে মন দিলি কবি, এ যে রে পাষাণ-ছবি
এ শুধু রূপের রবি নিশীথের স্বপনে।।