বাণী

	কত আর এ মন্দির দ্বার, হে প্রিয়, রাখিব খুলি'
	বয়ে যায় যে লগ্নের ক্ষণ, জীবনে ঘনায় গোধূলি।।
	নিয়ে যাও বিদায়-আরতি, হ'ল ম্লান আঁখির জ্যোতি;
	ঝরে যায় শুষ্ক স্মৃতির মালিকা-কুসুমগুলি।।
	কত চন্দন ক্ষয় হ'ল হায়, কত ধূপ পুড়িল বৃথায়;
	নিরাশায় সে পুষ্প কত ও পায়ে হইল ধূলি।।
ও	বেদী-তলে কত প্রাণ — হে পাষাণ নিলে বলিদান;
	তবু হায় দিলে না দেখা — দেবতা, রহিলে ভুলি'।।

বাণী

	কে সাজালো মাকে আমার বিসর্জনের বিদায় সাজে
	আজ সারাদিন কেন এমন করুণ সুরে বাঁশি বাজে॥
	আনন্দেরি প্রতিমাকে হায়, বিদায় দিতে পরান নাহি চায়
	মা-কে ভাসিয়ে জলে কেমন করে রইব আঁধার ভবন মাঝে॥
মা’র	আগমনে বেজেছিল প্রাণে নূতন আশার বাঁশি
	দুঃখ শোক ভয় ভুলেছিলাম দেখে মা অভয়ার মুখের হাসি।
	মা দশ হাতে আনন্দ এনেছিল, বিশ হাতে আজ দুঃখ ব্যথা দিল
মা	মৃন্ময়ীকে ভাসিয়ে জলে, পাব চিন্ময়ীকে বুকের মাঝে॥

বাণী

কে গো গানে গানে হিয়া ভরালে।
নিরাশা ভুলায়ে আশা ধরালে।।
	বল বল মোরে
	কেন এমন ক’রে
পলকে পুলকে আঁখি ঝরালে।।

বাণী

কানে আজো বাজে আমার তোমার গানের রেশ
নয়নে মোর জাগে তোমার নয়নের আবেশ।।
	তোমার বাণী অনাহত
	দুলে কানে দুলের মত
ও গান যদি কুসুম হত সাজাতাম মোর কেশ।।
নদীর ধারে যেতে নারি শুনে তোমার সুর
মনে আনে তোমার গান করুণ বিধুর।
	শুনি বুনো পাখির গীতি
	জাগে তোমার গানের স্মৃতি
পরান আমার যায় যে ভেসে তোমার সুরের দেশ।।

বাণী

কে বলে গো তুমি আমার নাই?
তোমার গানে পরশ তব পাই।।
তোমায়-আমায় এই নীরবে
জানাজানি অনুভবে,
তোমার সুরের গভীর রবে আমারি কথাই।।
হে বিরহী আমায় বারে বারে
স্মারণ করো সুরের সিন্ধু পারে
ওগো গুণী পেয়ে মায়
যদি তোমার গান থেমে যায়,
উঠবে কাঁদন সুরের সভায় চাই না কাছে তাই।।

বাণী

কলঙ্ক আর জোছনায় মেশা তুমি সুন্দর চাঁদ
জাগালে জোয়ার ভাঙ্গিলে আবার সাগর-কুলের বাঁধ।।
	তিথিতে তিথিতে সুদূর অতিথি
	ভোলাও জাগাও ভুলে যাওয়া স্মৃতি
এড়াইতে গিয়ে পরানে জড়াই তোমার রূপের ফাঁদ।।
চাহি না তোমায় তবু তোমারেই ভাবি বাতায়নে বসি’
আমার নিশীথে তুমি আনিয়াছ শুল্কা চতুর্দশী।
	সুন্দর তুমি তবু হয় মনে
	আছে কলঙ্ক জোছনার সনে
মুখোমুখি বসে কাঁদে তাই বুকে সাধ আর অবসাদ।।